অনিদ্রা দূর করার উপায়

ঘুম এমন একটি বিষয় যা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। কম বা অতিরিক্ত ঘুম— দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2015, 11:58 AM
Updated : 15 Nov 2015, 11:58 AM

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে জানানো হয়, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে শরীর সতর্ক অবস্থায় থাকে ফলে ঘুমানো কষ্টকর হয়। বুক জ্বালাপোড়া বা বদহজমের মতো শারীরিক সমস্যাও অনিদ্রার কারণ।

অপর্যাপ্ত ঘুম কিংবা ঘুমের ব্যঘাত থেকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পরে। কর্মদক্ষতা ও সতর্কভাব কমে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া ইত্যাদি মনস্তাত্ত্বিক ও শারীরিক বিভিন্ন জটিলতার পেছনে দায়ি অনিদ্রা। মারাত্বক ঘুম জটিলতা থেকে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং উচ্চ রক্তচাপও হতে পারে।

তবে অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য রয়েছে সহজ কিছু পন্থা।

রোদ পোহানো: সার্কাডিয়ান ক্লক বা দিন-রাত চক্রের সঙ্গে শারীরিক সামঞ্জস্য রক্ষা করতে সূর্যের আলো অত্যন্তা গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম থেকে ওঠার এক ঘণ্টার মধ্যে ঘরের বাইরে হাঁটতে বের হতে হবে। শরীরের সূর্যের আলো লাগার সুযোগ করে দিতে হবে। কারণ মস্তিষ্কের রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণের সঙ্গে সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসার সম্পর্ক রয়েছে।

সময় ঠিক রাখা: ঘুম কতক্ষণ হবে আর কতটা ভালো হবে তা নির্ভর করে ঘুমাতে যাওয়া আর ঘুম থেকে ওঠার সঠিক সময় আমরা কতটা ধারাবাহিকভাবে মেনে চলতে পারি তার উপর। কর্মদিবস হোক আর ছুটির দিন-প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করা উচিত।

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: ভালো ঘুমের জন্য শোবার ঘর এবং শারীরিক তাপমাত্রাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শোবার ঘরের তাপমাত্রা খুব বেশি বা খুব কম হলে ঘুমে সমস্যা হতে পারে। শোবার ঘরের আদর্শ তাপমাত্রা হল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমাতেও সহায়তা করবে।

ঘুমের সঙ্গে বিছানার সম্পর্ক স্থাপন: বিছানায় শুয়ে খাওয়া, টেলিভিশন দেখা ও গেইম খেলা এড়িয়ে চলা উচিত। বিছানা ঘুমানোর জায়গা, এই বিষয় মনকে বোঝাতে পারলে ঘুমানো সহজ হবে।

আলো ও শব্দ কমানো: আমাদের মন রাতের অন্ধকারের সঙ্গে ঘুমের সম্পর্ক তৈরি করে। তাই ঘুমানোর আগে ঘরের পর্দা টেনে দিয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কোলাহলপূর্ণ পরিবেশও নির্ভেজাল ঘুমের পথে অন্তরায়।

ব্যায়াম ও ইয়োগা: দৈনন্দিন জীবনের মানসিক চাপ ঘুমের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। যার নিয়মিত ব্যায়াম করেন তারা দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। আর ইয়োগা ও ধ্যান চর্চাকারীরা গভীর বা জোরে শ্বাস নিয়ে থাকেন। ফলে মানসিক চাপের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারেন কার্যকর ভাবে, ঘুমও ভালো হয়।

পরিষ্কার বিছানা: গবেষণায় দেখা গেছে, পরিষ্কার বিছানার চাদর ভালো ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গবেষকদের মতে, “বিছানার চাদর পরিষ্কার থাকলে ৭৫ শতাংশ মানুষেরই ঘুম ভালো হয়।”

সঠিক খাবার: চিনিযুক্ত খাবার বেশি খেলে ঘুমে সমস্যা হয়। খেতে পারেন গরম দুধ, এতে মেলে প্রশান্তির অনুভূতি। রাতের খাবারে সিরিয়াল, ভাত খাওয়া উচিত। যা সেরোটনিন হরমোন তৈরি করে, ফলে ঘুম ভালো হয়।

বই পড়া: ঘুমানোর আগে বই পড়া ভালো অভ্যাস। তবে ঘুমের আগে টেলিভিশন দেখা, মোবাইল বা ট্যাবলেটে গেইম খেলা মোটেই উচিত নয়। কারণ বৈদ্যুতিক আলো নিঃসরণকারা সকল যন্ত্র মস্তিষ্কের ঘুম ভালো করার ক্ষমতা নষ্ট করে।

ছবি: রয়টার্স।