রাজধানীর নিউমার্কেট, চকবাজার, পুরান ঢাকার নওয়াবপুর, গুলশান ডিসিসি মার্কেট, বসুন্ধরা শপিং সেন্টারে মিলবে প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য।
প্লাস্টিক পণ্যের ব্রান্ডগুলোর মধ্যে আরএফএল, পারটেক্স, ক্রোমা, বেঙ্গল, হামকো, পলিকন ইত্যাদি সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে বিভিন্ন চাইনিজ ব্র্যান্ডের প্লাস্টিকের আসবাবপত্র এবং গৃহস্থালি জিনিসপত্রের চাহিদাও কম নয়।
আসবাবপত্র
রাজধানীর নিউমার্কেটের ‘চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ’য়ে পাওয়া যাবে ‘আরএফএল’ ব্র্যান্ডয়ের চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য প্রায় সকল আসবাবপত্র। এক্ষেত্রে আরএফএল ‘খানদানি’ চেয়ারের দাম পড়বে প্রতিটি ৮৩৫ টাকা। একই ব্র্যান্ডের হাতওয়ালা ‘রয়্যাল’ চেয়ার পাওয়া যাবে ৭২০ টাকায়। গদিসহ আরএফএল সোফা চেয়ার কিনতে হলে গুনতে হবে ১ হাজার ৩শ’ টাকা।
নিউমার্কেট থেকে ‘বেঙ্গল’য়ের আর্ম চেয়ার পাওয়া যাবে ডিজাইন ভেদে ৬৮০ টাকা থেকে ৮শ’ টাকায়। একই ব্র্যান্ড্রের হাতাবিহীন চেয়ার পাওয়া যাবে ৫৬০ টাকা থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকায়।
এছাড়াও রাজধানীর পুরান ঢাকার নওয়াবপুর রোড থেকে কিনে নিতে পারেন পারটেক্স ব্র্যান্ডের রিল্যাক্স, স্লিম কিংবা গার্ডেন চেয়ার। এক্ষেত্রে ডিজাইনভেদে চেয়ারগুলোর দাম হবে সাড়ে ৪শ’ থেকে ১ হাজার টাকা।
বনানী সুপার মার্কেট থেকে বেঙ্গল’য়ের ‘সিক্স সিটার’ টেবিল পাওয়া যাবে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায়। ডাইনিং টেবিল হিসেবে বা অফিসের কাজে একসঙ্গে অনেকজনের বসার জন্য এই টেবিল ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরএফএল’য়ের ছয় সিট টেবিল পাওয়া যাবে ৫ হাজার ৪শ’ টাকায়। একই প্রতিষ্ঠানের ফোর সিট টেবিল পাওয়া যাবে ৪ হাজার টাকায়। এছাড়া আরএফএল’য়ের চার থেকে ছয় সিটের চেয়ার ও টেবিল একসঙ্গে সেট হিসেবে কিনতে হলে গুনতে হবে সাড়ে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা।
‘পারটেক্স’ ব্র্যান্ডের রাউন্ড বা স্কয়ার টেবিল পাওয়া যাবে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায়। একই ব্র্যান্ডের টি টেবিল এবং সিঙ্গেল রিডিং টেবিল পাওয়া যাবে ৫শ’ থেকে দেড় হাজার টাকায়।
বর্তমানে ক্রেতাদের মধ্যে কাঠের পরিবর্তে প্লাস্টিকের আলমারি কিংবা ওয়ারড্রোব কেনার আগ্রহ ব্যপক।
মার্কেটে কিনতে আসা গৃহিনী আয়েশা আক্তার এই বিষয়ে বলেন, “চাকুরীর সুবাদে যাদের ঢাকায় বসবাস তাদের জন্য প্লাস্টিকের ওয়্যারড্রোব বা আলমারির বিকল্প নেই। এগুলো যথেষ্ট হালকা বলে বাসা পরিবর্তনের সময় কম ঝক্কি পোহাতে হয়। তাছাড়া প্লাস্টিকের আসবাবপত্রগুলো খুব আধুনিক এবং আকর্ষণীয়।”
বর্তমানে বাজারে ক্রোমা, আরএফএল এবং বেঙ্গলের প্লাস্টিক ওয়্যারড্রোব ও আলমারি পাওয়া যাচ্ছে। চার ড্রয়ার বিশিষ্ট এসকল ব্র্যান্ডের প্লাস্টিক ওয়্যারড্রোব পাওয়া যাবে ব্র্যান্ড ভেদে ৪ হাজার ৪শ’ থেকে ৫ হাজার ২শ’ টাকায়।
পাঁচ ড্রয়ারের মধ্যে কিনতে হলে গুনতে হবে ৬ হাজার থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এই ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে আকর্ষণীয় মিনি ওয়্যারড্রোব পাওয়া যাবে ৩শ’ থেকে ৫৮০ টাকায়।
অর্গানাইজার বক্স পাওয়া যাবে ২১৫ টাকা থেকে ৬শ’ টাকায়। মোড়ার দাম আড়াইশ’ টাকা থেকে ৪শ’ টাকা। টুলের দাম ১শ’ থেকে ২শ’ টাকা।
রান্নাঘরের অনুষঙ্গ
দি নিউ মনিহার দোকানের মালিক জাকির হোসেন জানালেন রান্নাঘরের আনুষঙ্গিক জিনিষপত্রের দাম সম্পর্কে।
আরএফএল’য়ের কিচেন র্যাক পাওয়া যাবে ১ হাজার ৬শ’ টাকায়। পারটেক্স’য়ের কিচেন র্যাক পাওয়া যাবে ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায়। নন-ব্র্যান্ডের শেলফগুলো মিলবে ২শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়।
‘বেঙ্গল’য়ের কিচেন বাস্কেট কিনতে হলে খরচ করতে হবে ৫০ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা। এছাড়া চাল, ডাল কিংবা অন্যান্য জিনিস রাখার জন্য কিনে নিতে পারেন ‘হামকো’ বা ‘পলিকন’ ব্র্যান্ডের স্টোরেজ বক্স। আকারেভেদে এই বক্সগুলোর দাম পড়বে ৩০ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা।
তিন থেকে পাঁচটির বক্স সেট মিলবে আড়াইশ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকায়। আর কন্টেইনার পাওয়া যাবে ৭০ টাকা থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকায়।
এছাড়া রান্নাঘরে ব্যবহারের জন্য প্লাস্টিকের বাটি, বক্স, মগ, জার ইত্যাদি কিনে নিতে পারেন ৫০ থেকে ৪শ’ টাকার মধ্যে। প্লেট রাখার জন্য ডিশ র্যাক পাওয়া যাবে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকায়।
মাইক্রোওভেনে ব্যবহারের জন্য বিশেষ বাটি সেট পাওয়া যাবে ২শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়।
বাথরুমের জিনিসপত্র
জাকির হোসেন বলেন, “সাবান কেস পাওয়া যাবে ৩০ টাকা থেকে ৩শ’ টাকায়। মগ এবং বদনা পাওয়া যাচ্ছে ৬০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়। পানি রাখার বালতির দাম পড়বে ৬০ থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকায়। বাথরুম পরিষ্কারের ব্রাশ পাওয়া যাবে ৫০ থেকে দেড়শ টাকায়।”
সাংসারিক তৈজসপত্র
সংসারের টুকিটাকি প্লাস্টিক পণ্যের দাম নিয়ে জানালেন লেডিস কর্নার দোকানের মালিক মোহাম্মদ বাবু।
আর ছয়পিস হ্যাঙ্গারের সেট পাওয়া যাবে ১শ’ থেকে ২শ’ টাকায়। পানির জগের দাম ৭০ টাকা থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা। আর পানির গ্লাসের সেট পাওয়া যাবে ১শ’ টাকা থেকে ২শ’ টাকায়। প্লেট পাবেন ২৫ থেকে ১শ’ টাকায়।
শিশুদের জন্য
নিউমার্কেটের আবেদ অ্যান্ড সন্স দোকানের মালিক জানালেন ছোটদের ব্যবহার্য জিনিসপত্রের দরদাম। ওয়াকারের দাম পড়বে দেড় হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। ট্রলি পাওয়া যাবে আড়াই হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। ফিডারের দাম ৬০ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা। বাচ্চাদের থালাবাসনের সেট পাওয়া যাবে আড়াইশ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা। পানির পটের দাম ৫০ টাকা থেকে সাড়ে তিনশ টাকা।
শুধু দোলনা এবং খাটসহ দোলনার দাম পড়বে আড়াই হাজার টাকা থেকে ১৮ হাজার টাকা। পায়ে ঠেলে চালানো ‘অটো কার’ এবং সাইকেল পাওয়া যাবে ১ হাজার ৮শ’ টাকা থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। আর ব্যাটারিচালিত মোটর সাইকেল পাওয়া যাবে ৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকায়। ব্যাটারিচালিত গাড়ি কিনতে গুনতে হবে ১০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
ব্যবহারবিধি
প্লাস্টিকের জিনিসপত্র সাধারণত সহজে নষ্ট হয় না। তাই একটু সতর্ক থাকলেই বছরের পর বছর ধরে প্লাস্টিকের আসবাবপত্র ব্যবহার করা যায়।
এ সম্পর্কে নিউমার্কেটের লেডিস কর্ণার দোকানের মালিক মোহাম্মদ বাবু বলেন, “প্লাস্টিকের জিনিসপত্রে কাঠের মতো ঘুণে ধরা বা বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার ঝামেলা নেই। তবে অতিরিক্ত চাপে বা জোর দিলে অনেক সময় প্লাস্টিকের জিনিস ভেঙে যেতে পারে।”
তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। খাবার সংরক্ষণ এবং খাওয়ার বাসনগুলো ফুডগ্রেড প্লাস্টিকের তৈরি কিনা তা দেখে নিতে হবে। বাসন ধোয়ার পর খোলা স্থানে রাখতে হবে যাতে পানি শুকিয়ে যায়। রান্নাঘরে ব্যবহৃত ডাস্টবিনে পলিথিন ব্যবহার করা উচিত বলে পরামর্শ দিলেন তিনি।
ছবি: আব্দুল মান্নান।