সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এরকম তথ্যই পাওয়া গেছে।
আপনার জীবনসঙ্গী অন্য কারও সঙ্গে যৌনমিলনে লিপ্ত হলে সেখানে আবেগ জড়িত না থাকলেও— সেটা প্রতারণা।
অপরদিকে আপনার জীবনসঙ্গী অন্য কারও সঙ্গে গভীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করলে সেটাও প্রতারণা। সেখানে শারীরিক সম্পর্ক বা ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও একই ব্যাপার।
নরওয়ের গবেষকদের মতে, বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার প্রতি নারী-পুরুষ ভিন্নভাবে সাড়া দেয় এবং সম্ভবত বিবর্তনবাদ মনোবিজ্ঞানের কারণ ব্যাখ্যা করতে পারবে।
নরওয়েজিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক মোন্স বেনডিক্সেন বলেন, “বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষ ও নারীর মনস্তত্ত্ব একই, তবে প্রজননের ক্ষেত্রে এমনটা নয়।”
যদিও বিবর্তনবাদী মনোবিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিলেন যে প্রতারণা এবং ঈর্ষা বিষয়ক প্রশ্নে নারী ও পুরুষের উত্তর ভিন্ন হবে, তবে এই ভিন্নতার পরিমাণ দেখে তারা নিজেরাও আশ্চর্য হন।
ঈর্ষা নিয়ে করা সাম্প্রতিক গবেষণায় দুই ধরনের প্রতারণা বিবেচনায় আনা হয়। সম্পর্কের বাইরে শারীরিক সম্পর্ক এবং সঙ্গী ব্যতিত অন্য কারও সঙ্গে আবেগঘন সম্পর্কে জড়ানো।
গবেষণার জন্য ১ হাজার অংশগ্রহণকারীর প্রত্যেককে ঈর্ষা বিষয়ক চার সেট প্রশ্নের মধ্য থেকে এলোমেলোভাবে এক সেট প্রশ্ন দেওয়া হয়।
গবেষকরা বলেন, “যাদের ‘কোন ধরনের প্রতারণা বেশি কষ্টদায়ক’ চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে তাদের মধ্যে ঈর্ষার প্রতি সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে লিঙ্গ ভেদে পরিষ্কার পার্থক্য লক্ষ করেছি আমরা।”
তবে বিবর্তনবাদ প্রেক্ষাপটটি ভিন্ন। এই প্রেক্ষাপট অনুযায়ী, হাজারও প্রজন্ম ধরে পুরুষ ও নারীদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে যার সঙ্গে প্রজননের সম্পর্ক ছিল।
এমনই এক চ্যালেঞ্জ প্রতারণা।
বিবর্তনবাদ মনোবিজ্ঞানের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, পুরুষের ঈর্ষা হল যৌন প্রতারণার ইঙ্গিতের প্রতি তাদের আবেগজড়িত প্রতিক্রিয়া। পুরুষের এই ঈর্ষা তার সঙ্গীর প্রতারণা করার সম্ভাবনা কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কারণ পুরুষ এসময় তার সঙ্গীর উপর গভীরভাবে নজর রাখে।
গবেষকরা বলেন, “আজকের নারীরা হল সেই সব নারীদের উত্তরসুরী, যারা হাজারও প্রজন্ম ধরে সেসব পুরুষদের প্রতি হিংসা প্রকাশ করে এসেছে যারা তাদের সঙ্গীর প্রতি কম মনোযোগী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।”
বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, সঙ্গী পুরুষটি অন্য নারীকে বেশি সময় ও মনোযোগ দিচ্ছে এমন ইঙ্গিতগুলোর প্রতি নারীরা বিশেষভাবে সংবেদনশীল।
পার্সোনালিটি অ্যান্ড ইন্ডিভিজ্যুয়াল ডিফারেন্সেস নামক জার্নালে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়।
ছবি: রয়টার্স।