ভূতের ভয়, একলা থাকায় ভয়, উচ্চতা ভীতি-- এসব এখন প্রাচীন! আধুনিক ভীতির অন্যতম উদাহরণ হল ‘ফোনটা রাখলাম কই!’
Published : 04 Sep 2015, 02:49 PM
আর এই ভীতির নাম ‘নমোফোবিয়া’।
আপনি নমোফোবিয়াতে ভুগছেন কিনা তা জানার জন্য আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ‘হিউম্যান কম্পিউটার ইন্টার্যাকশন’য়ের পিএইডি’র ছাত্র কালার ইউলডারাম এবং আইএসইউ’স স্কুল অফ এডুকেশন’য়ের সহযোগী অধ্যাপক আনা-পলা কোহেইয়া প্রশ্ন উত্তর পদ্ধতি বেছে নেয়।
এই প্রশ্নমালা তৈরির জন্য তারা প্রথমে নয়জন ছাত্রের উপর স্মার্টফোন বিষয়ে সাক্ষাৎকার নেয়। তারপর তাদের উত্তরের ভিত্তিতে সেগুলো ৩০১জন ছাত্রের উপর পরীক্ষা করা হয়।
জোড়লো ভাবে প্রত্যাখ্যান করা থেকে শুরু করে জোড়ালো ভাবে সমর্থন করা-- এভাবে উত্তরগুলোর মান এক থেকে সাত নম্বর দিয়ে সাজানো হয়।
তাদের এ্ই পর্যালোচনার মাধ্যমে আধুনিককালের চারটি ভীতি চিহ্নিত করতে সমর্থ হয়। সেগুলো হল- যোগাযোগ হারানোর ভয়, যোগাযোগ করতে না পারার ভয়, তথ্য এবং সুবিধা না পাওয়ার ভয়।
প্রশ্নমালার মধ্যে ছিল, ‘স্মার্টফোনের মাধ্যমে সর্বোক্ষণ তথ্য পেতে না থাকলে আমার অস্বস্তি লাগে’ বা ‘যখন চাই তখন যদি আমার স্মার্টফোনে কোনো তথ্য দেখা না দেয় তখন বিরক্ত লাগে।’
প্রশ্নগুলোর মধ্যে আরও ছিল, ‘কোনো খবর না পেলে সন্ত্রস্ত লাগে (যেমন: কোনো ঘটনা ঘটার সংবাদ বা আবহাওয়ার খবর)’ বা ‘যখন স্মার্টফোন দিয়ে ঠিকমতো কাজ করতে পারি না অথবা যেভাবে চাই সেভাবে কাজ করতে না পারলে বিরক্ত হই।’
এছাড়াও ছিল, ‘স্মার্টফোনের ব্যাটারির চার্জ শেষ হতে থাকলে ভয় জাগায়’, ‘ফোন ব্যবহারে টাকা বা মাসের ডেটা ব্যবহারের পরিমাণ শেষ হতে থাকলে আমি আতঙ্কিত বোধ করি’, ‘যদি ডেটা সিগনাল বা ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক না পাই তবে কিছুক্ষণ পর পর দেখতে থাকি ইন্টারনেট সংযোগ পেল কিনা।’
‘যদি স্মার্টফোন ব্যবহার করতে না পারি তবে মনে হয় কোথায় যেন আটকে গেছি’ এবং ‘কিছুক্ষণ পর পর যদি স্মার্টফোন দেখতে না পারি তখন আমার মধ্যে সেটা দেখার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়’, অংশগ্রহণকারীরা এই ধরনের প্রশ্নেরও জবাব দেয়।
আরেকটি ভাগে অংশগ্রহণকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাদের স্মার্টফোন যদি সঙ্গে না থাকে তবে তারা কী রকম আচরণ করেন?
এর উত্তর হিসেবে পাওয়া যায়, ‘বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ করতে পারি না বলে চিন্তিত থাকি।’ আরেকটা হল ‘টেক্স ম্যাসেজ এবং ‘কল’ পাব না বলে আমি দুশ্চিন্তায় থাকি।’
গবেষকগণ কম্পিউটারস ইন হিউম্যান বিহেইভিয়র জার্নালে জানায়, এভাবে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর উত্তরগুলোর মান এককভাবে যোগ করে দেখা গেছে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে এগিয়ে আছে স্মার্টফোন হারানো ভীতি বা নমোফোবিয়া।