বিভিন্ন কারণে খুশকি হতে পারে। ঋতু পরিবর্তন, বাইরের ধুলাবালি তো রয়েছেই। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে অনেকেরই খুশকির সমস্যা হয়ে থাকে।
Published : 11 Aug 2015, 08:56 AM
এ বিষয়ে কথা বলেন বিন্দিয়া বউটি পার্লারের কর্ণধার শারমিন কচি।
তিনি জানান, ভেজা মৌসুমে বাতাসে আর্দ্রতার কারণে চুলের ভেজাভাব থেকে নিস্তেজ হয়ে যায়। তাই এই সময় চুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতে প্রতিবার শ্যাম্পু করার আগে হালকা গরম তেল চুলে মালিশ করা উচিত।
এছাড়া অন্য সময়ের তুলনায় গরম-বৃষ্টির মিশ্র আবহাওয়াতে একটু বেশি তৈলাক্ত হয়ে যায় চুল। কারণ এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই চুলের প্রয়োজন বিশেষ যত্ন।
শারমিন বলেন, “এই মৌসুমে চুল প্রাকৃতিকভাবে শুকায় না। আর এ কারণে চুলের ভিতর এবং মাথার তালুতে মৃত কোষের পরত পড়তে শুরু করে। ফলে খুসকির জন্ম হয়।”
তিনি আরও বলেন, “তবে খুশকির সমস্যা বেশি বোঝা যায় বর্ষা পরবর্তী মৌসুমে। তাই এখনই যদি চুলের বিশেষ যত্ন নেওয়া যায় তবে পরে খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।”
খুশকি দূর করতে ভিনিগার ও পানি সমপরিমাণে মিশিয়ে শ্যাম্পু করার পর পুরো চুলে দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
তবে কারও মাথার ত্বকে র্যাশ বা ফাঙ্গাসের সমস্যা থাকলে এই মিশ্রণ ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন শারমিন কচি।
সেক্ষেত্রে এক কাপ টক দই, পানি এবং অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। সপ্তাহে একবার ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে বলে জানান কচি।
তাছাড়া চুল খুশকিমুক্ত রাখতে দারুণ উপকারী বিয়ার শ্যাম্পু।
কচি বলেন, “বাজারে এখন বিয়ার শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার বেশ সহজলভ্য। তাছাড়া অ্যালকোহল ছাড়া বিয়ারের ক্যানও ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বাতাস নিরোধক বোতলে তা জমিয়ে রাখতে হবে। শ্যাম্পু করার পর চুলে বিয়ার দিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে চুল আবার ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে একবার করে মাসে চার থেকে ছয়বার ব্যবহারে প্রায় তিন থেকে চার মাস খুশকির হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।”
তাছাড়া এই সময় চুল অনেকটাই উষ্কখুষ্ক হয়ে যায়। চুলের ক্ষতি এড়াতে স্কার্ফ ব্যবহার করা যেতে পারে বা হেয়ার সিরাম লাগানো যেতে পারে। ভিন্ন ভিন্ন হেয়ার স্টাইলও এই সময় বেশ মানানসই।
যাদের বড় চুল নিয়ে সমস্যা তারা চাইলে চুল ছোট করে কেটে নিতে পারেন। তাছাড়া চুল খোলা না রেখে উঁচু করে চুল বেঁধে রাখলেও চুলের ক্ষতি কিছুটা এড়ানো যায়। আর এই সময় চুল কোঁকড়া বা সোজা করা থেকে বিরত থাকাই ভালো।
চুলের স্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ভর করে খাদ্যাভ্যাসের উপর। তাই প্রচুর ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং মিনারেলযুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি। চুল ঝলমলে রাখতে ভিটামিন এবং আয়রনজাতীয় খাবার খেতে হবে।
চুলের নির্জীবভাব কমাতে ডিপ কন্ডিশনার ব্যবহার এবং হেয়ার ট্রিটমেন্টের পরামর্শ দেন শারমিন কচি।
তিনি বলেন, “মধু ও পানির মিশ্রণ চুল ভিতর থেকে কন্ডিশন করে। সঙ্গে খানিকটা লেবুর রসও মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তাছাড়া কড়া চায়ের লিকারের সঙ্গে লেবুর রস ও একটি ডিম মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই প্যাক চুল ময়েশ্চারাইজ করবে এবং ডিম চুলে প্রোটিনের ঘাটতিও পূরণ করবে।”
আরও কিছু উপায়ে ঘরোয়াভাবে চুল সুন্দর করা সম্ভব।
- সারারাত পরিমাণমতো মেথি পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে তা পেস্ট করে মাথার তালুতে লাগাতে হবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
- দুটি কলা ভালোভাবে চটকে সঙ্গে তিন চামচ মেয়োনেইজ এবং এক চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে হবে। চুলে ও মাথার তালুতে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। এই মিশ্রণ চুল ডিপ কন্ডিশন করবে।
ছবি: ই স্টুডিও। মডেল: চৈতি।