সবরকম উৎসবে রূপার গয়না চিরদিনই যেমন ফ্যাশনেবল তেমনি ঐতিহ্যবাহী।
পছন্দসই রূপার গয়নার জন্য চাঁদনীচক, নিউমার্কেট ও মৌচাক মার্কেটের রূপার দোকানগুলোতে যেতে পারেন। তবে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি রূপার দোকান রয়েছে শাঁখারি বাজার বা তাঁতীবাজার এলাকায়। এখানে সোনার দোকানের পাশাপাশি শ’খানেক রূপার দোকান রয়েছে। এসব দোকানে রূপার নেকলেস, দুল, পাশা, চেইন, বালা, চুড়ি, পায়েল, হাতের ও পায়ের আংটি পাওয়া যায়। শিশুদের জন্য আছে ব্রেসলেট। আরও আছে রূপার সিঁদুরকৌটা, পানদান, আতরদান ও প্লেট, বাটি, চামচ, সুরমাদানি এবং নানা রকম শোপিস।
এই হিসেবে তাঁতীবাজারের দোকানগুলোতে মাঝারি আকারের কানের পাশা ও দুল পাবেন ২শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকায়। ক্যাটালগ দেখে নিজের পছন্দমাফিক বানিয়েও নিতে পারেন বিভিন্ন গয়না। তবে তাতে মজুরি বেশি পড়বে।
গয়না কেনার আগে জেনে নিন রূপার মান সম্পর্কে। রূপার মানের তারতম্য রয়েছে। রূপা কতটা খাঁটি তার উপর দাম নির্ভর করে।
ফাইন সিলভার ৯৯.৯ শতাংশ খাঁটি। তবে এটা বেশি নরম বলে কোনো গয়না তৈরি করা যায় না। গয়না বানাতে হলে রূপায় খাদ মেশাতে হয়।
যে রূপা দিয়ে গয়না তৈরি হয় তাকে স্ট্যান্ডার্ড রূপা বা স্টার্লিং সিলভার বা চান্দি রূপা বলে। এতে ৯২.৫ শতাংশ রূপা এবং ৭.৫ শতাংশ তামা রয়েছে। মুদ্রা রূপায় রয়েছে ৯০ শতাংশ রূপা ও ১০ শতাংশ তামা। আরও রয়েছে জাঙ্ক সিলভার। জাঙ্ক সিলভার দিয়ে সাধারণত থালা, বাটি, চামচ ও অন্যান্য শোপিস তৈরি হয়।
কথা হচ্ছিল তাঁতী বাজারে স্মৃতি জুয়েলার্সের প্রধান ধীমান বসাকের সঙ্গে।
তিনি বললেন, “আজকাল গোল্ড প্লেটেড রূপার গয়নার চাহিদা বেশি। বিভিন্ন ডিজাইনে রূপার গয়না তৈরি করে তা গোল্ড প্লেটেড করা হয়। দেখতে একেবারে সোনার গয়নার মতোই লাগে। গোল্ড প্লেটেড করাতে খরচ পড়ে গয়না প্রতি ১শ’ থেকে ২শ’ টাকা।
রূপার গয়না পরিষ্কার করার কৌশল জানালেন, দোকান কর্মী সুজিত নন্দী। এখানে জানিয়ে রাখা ভালো, খাঁটি রূপা দীর্ঘদিন ব্যবহারে কালো হয়ে যায়। ডিটারজেন্ট পাউডার ভেজা ন্যাকড়ায় মাখিয়ে নিয়ে রূপার গয়নায় ঘষতে হয়।
মিনা করা রূপার গয়না দেখতে বেশি ভালো। তাছাড়া রয়েছে বিভিন্ন রকম পাথর বসানো রূপার গয়না। রূপার সঙ্গে মুক্তা ও পুঁতি দিয়েও মালা তৈরি করাতে পারেন।
মঙ্গলসূত্র ও অন্যান্য নেকলেসের সঙ্গে রূপালি টাসেল বা পুঁতির টাসেল ব্যবহার করা হয়। রূপার তৈরি খোঁপার কাঁটাও বেশ ফ্যাশনেবল গয়না। আর পায়েল তো সবসময়ই সাজে এনে দেয় ট্র্যাডিশনাল লুক।
ছবির মডেল: সোনিয়া এবং মৌ। আলোকচিত্র: আব্দুল মান্নান।