নানান অভ্যাসে ফ্রিজের ভেতরে বাজে গন্ধ হতে পারে।
Published : 14 May 2024, 05:19 PM
খাবার সংরক্ষণের জন্য রাখা ফ্রিজটাই যদি দুর্গন্ধের কারণ হয় তবে কিছু অভ্যাস এর জন্য দায়ি হতে পারে।
সারাদিন ধরে খাবার, বাজার রাখা আর বের করার জন্য ফ্রিজের দরজা বারবার খোলা হয়। আর দ্রুত খোলা বন্ধের কারণে হয়ত অনেক সময় গন্ধ নাকে লাগে না।
তবে একটু সময় নিয়ে পরখ করলে যদি ফ্রিজ থেকে বাজে গন্ধ বের হয় তবে কয়েকটি বিষয় খেয়াল করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
ফ্রিজে রাখা খাবার পঁচতে দেওয়া
“হতে পারে এটা অন্যতম কারণ”- রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় প্রজন্মের পরিষ্কারকারী তত্ত্ববধায়ক ব্র্যান্ডন প্লিশেক।
তিনি বলেন, “অনেক সময় মেয়াদোত্তীর্ণ বা বাজে খাবার এমনকি খাবারের গুঁড়া পড়ে থাকার কারণে ফ্রিজে গন্ধ হয়। তাই নিয়মিত ভালোভাবে পরিষ্কার করা জরুরি।”
এক কাপ সাদা ভিনিগারের সাথে এক কাপ পানি ও এক চা-চামচ বাসন ধোয়ার তরল সাবান মিশিয়ে পরিষ্কার করার পরামর্শ দেন তিনি।
নিয়মিত ভালোভাবে পরিষ্কার না করা
“শেষ কবে ফ্রিজ পরিষ্কার করা হয়েছে? এটাই সমস্যা। অনেকদিন ফ্রিজ পরিষ্কার না করলে বাজে গন্ধ হতেই পারে”- মন্তব্য করেন প্লিশেক।
নিয়মিত পরিষ্কার না করলে খাবারের গুঁড়া বা কনা জমা হতে থাকে ফ্রিজে। যা থেকে একসময় গন্ধ তৈরি হয়।
এজন্য সপ্তাহে একবার ভালোমতো পরিষ্কার করার পরামর্শ দেন তিনি। ‘আমেরিকান ক্লিনিক ইন্সটিটিউট’ও একই তথ্য সমর্থন করে।
তাক পরিষ্কার না করা
আনাচে কানাচে পরিষ্কার করার পরও গন্ধ থেকে যাওয়া কারণ হতে ফ্রিজের ভেতরে থাকা তাকগুলো ভালোমতো পরিষ্কার না করা। এক্ষেত্রে শুধু মুছলেই হবে না, ভালো মতো ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
প্লাস্টিকের কৌটা ব্যবহার করা
সাধারণ প্লাস্টিকের কৌটায় খাবার রাখা সাধারণ বিষয় মনে হলেও, এখান থেকেও গন্ধ হতে পারে।
পরিষ্কার-বিষয়ক মার্কিন বিশেষজ্ঞ লরি উইলিয়াম্স একই প্রতিবেদনে বলেন, “ফ্রিজের জন্য প্লাস্টিক অ্যাক্রেলিক বা স্বচ্ছ কৌটা ব্যবহার করা উচিত। এগুলো থেকে গন্ধ হয় না।”
দরজা ঠিক মতো বন্ধ না করা
ফ্রিজের দরজার তাকে অনেক কিছু রাখা হয়। বিশেষ করে কাচের বোতলে পানি, সস ইত্যাদি। এসবের কারণে দরজা ভারী হলে অনেক সময় ঠিক মতো আটকায় না। যে কারণে ফ্রিজের ভেতর গন্ধ হওয়া শুরু করে।
এসিআই’য়ের মুখপাত্র নাটালি ডি’অ্যাপোলিটো এক্ষেত্রে বলেন, “গন্ধ হওয়ার আরেকটি অভ্যাস হল ফ্রিজের দরজার তাকে কড়া গন্ধযুক্ত খাদ্যদ্রব্য রাখা। যেমন- পেঁয়াজ, আদা বা রসুন বাটার কৌটা, পনির। এগুলোর গন্ধ প্লাস্টিকের কৌটাও রোধ করতে পারে না। আর টাটকা হলেও এসব থেকে গন্ধ তৈরি হয়।”
তাই এই ধরনের পণ্যগুলো সবজির বাক্সে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। সেই সাথে কৌটার মুখ যাতে ভালোভাবে আটকানো হয় সে ব্যাপারেও খেয়াল রাখতে বলেন।
ফ্রিজের তাকে ম্যাট ব্যবহার করা
তাক যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য অনেকেই ম্যাট ব্যবহার করেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, সেই ম্যাট যেন ধোয়া যায়। আর ফ্রিজ পরিষ্কারের সময় সেসব ম্যাটও পরিষ্কার করতে হবে।
গন্ধ যাতে না হয়
ফ্রিজ দুর্গন্ধ মুক্ত রাখার জন্য বেইকিং সোডা ব্যবহার করা যায়। ছোট একটি কাপড়ে খানিকটা বেইকিং সোডা মুড়িয়ে ফ্রিজের ভেতর রেখে দিতে হবে। তবে সময়ের তালে এর কার্যকারিতাও কমে।
ডি’অ্যাপোলিটো বলেন, “বেইকিং সোডা নির্দিষ্ট সময় পরপর পরিবর্তন করতে হয়। না হলে সেটা থেকেও গন্ধ হতে পারে।”
বেইকিং সোডা ছাড়া আরও যা ব্যবহার করা যায়
অ্যাক্টিভ চারকোল: বেইকিং সোডার মতো কয়লাও গন্ধ শুষে নিতে পারে। কয়েক টুকরা কয়লা ফ্রিজে রেখে দিলেই হল।
সাদা ভিনিগার: ফ্রিজের ভেতরটা পরিষ্কার করতে ভিনিগার মেশানো পানি দিয়ে মুছলে গন্ধ দূর হয়।
কফির গুঁড়া: ছোট একটা বাটিতে কফির গুঁড়া ফ্রিজের ভেতর রেখে দিলে কয়েকদিন পর্যন্ত গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
টক ফলের খোসা: কমলা বা লেবুর খোষা ফ্রিজের ভেতর দিয়ে রাখলেও সুগন্ধ তৈরি হয়।
ভ্যানিলা এসেন্স: তুলার বলে কয়েক ফোঁটা ভ্যানিলা এসেন্স নিয়ে ফ্রিজের ভেতর রাখলে সুন্দর গন্ধ তৈরি করে।
আরও পড়ুন