অংক

প্রতিদিনের কাজেই আমাদের ‘অংক’ কাজে লাগাতে হয়। ক্লাসের অংক করা ছাড়াও বড়ো বড়ো হিসাব মিলাতেও অংকের প্রয়োজন। অংক করতে তোমাদের অনেকেরই হয়তো ভালো লাগেনা। কিন্তু ভালো না লাগলেও অংক করা থেকে মাফ পওয়া যায়না! এই যে অংক এখন আমাদের প্রতিদিনের অংশ, এই অংকটা এলো কিভাবে জানো?

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2013, 01:15 PM
Updated : 23 July 2013, 01:30 PM

প্রতিদিনের কাজেই আমাদের ‘অংক’ কাজে লাগাতে হয়। ক্লাসের অংক করা ছাড়াও বড়ো বড়ো হিসাব মিলাতেও অংকের প্রয়োজন। অংক করতে তোমাদের অনেকেরই হয়তো ভালো লাগেনা। কিন্তু ভালো না লাগলেও অংক করা থেকে মাফ পওয়া যায়না! এই যে অংক এখন আমাদের প্রতিদিনের অংশ, এই অংকটা এলো কিভাবে জানো?

পাটিগণিতকে ইংরেজিতে বলা হয় arithmetic। শব্দটা এসেছে গ্রীক আরিথমস (arithms) থেকে; যার মানে ‘সংখ্যা’। আবার সংখ্যা শব্দের ইংরেজী হলো নাম্বার (number), যার উৎস খুঁজলে জানা যাবে, গণনা করা থেকে এসেছে এ শব্দটা। আর জানোই তো, অংকশাস্ত্রের কারবারই হলো সংখ্যা দিয়ে।

তাহলে প্রশ্ন হলো মানুষ গুণতে শিখলো কেমন করে? আর গোনার পর আঁক কেটে তার হিসাব রাখার নিয়মই বা বের করলো কিভাবে?

মিশর ও ব্যাবিলনিয়ার নিয়ম ছিলো এক, দুই, তিন করে খাড়া দাগ কেটে চার পর্যন্ত গোনা আর পাঁচ সংখ্যা বোঝানোর জন্য একটা আড়াআড়ি দাগ। যেটাকে আমরা ‘টালি’ করা বলি। প্রাচীন গ্রীস ব্যবহার করতো তার শব্দমালার রূপগুলোকেই- আলফা, বিটা, গামা, ডেল্টা (a,B,y,s) । বীজগণিত বা এ্যালজেব্রা কষতে গিয়ে এগুলি এখনও ব্যবহার করা হয়। রোম সাম্রাজ্য গ্রীক সভ্যতার প্রায় সব কিছুই গ্রহণ করলেও সংখ্যার দিক থেকে মোটামুটি মিশর আর ব্যাবিলনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটা নিয়ম বার করে নিলো। তোমরা তো জানোই যে রোমান ফিগার লেখা হয় আই, ভি, এক্স, সি, ডি আর এম দিয়ে (I,V,X,C,D,M)। এখনো পূরণবাচক (ordinal) সংখ্যা যেমন, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ইত্যাদি ইউরোপীয় যে কোনো ভাষায় লেখার সময় এই চিহ্নগুলো ব্যবহার করা হয়।

এতো এতো অংকের ভীড়েও কিন্তু সবচাইতে দরকারী হয়ে দাঁড়ালো এ্যারাবিক নিউমারাল (Arabic numeral)। এর বিশেষত্ব হলো এক থেকে নয় পর্যন্ত আলাদা আলাদা চিহ্ন আর সব শেষে শূন্য।

এর নাম এ্যারাবিক নিউমারাল বা আরবদেশীয় সংখ্যা। আরবদেশীয় সংখ্যা হলেও এর উৎপত্তি কিন্তু ভারতে। আরবদেশের সঙ্গে ভারতের বণিজ্যিক লেনদেনের ফলে ভারত থেকে এই সংখ্যাতত্ত্ব সেখানে পৌঁছেছিলো আর তারপর আরবের সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর যোগাযোগের মাধ্যমে তা পৌঁছায় ইউরোপে, আর ইউরোপে সেসময় রেঁনেসা বা ‘নবজাগরণ’ (renaissance) দেখা দিয়েছে। ফলে তারা খুব সহজেই এই অংককে লুফে নিয়েছিলো।  ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে তখন ইতালীই পুরোধা আর পন্ডিতদের একমাত্র স্বীকৃত ভাষা ল্যাতিন। মজার ব্যাপার হলো ইউরোপের প্রথম অংকের বই ইতালী থেকেই প্রকাশিত হয়। সেটা ছিলো ১৪৭৮ খৃষ্টাব্দের কথা।

বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/আবু সুফিয়ান কবির/সাগর/এইচআর/নভেম্বর ১২/০৯