গরুর খামারে টিভি

গরুর খামারে থাকবে খড়, ভুসি আর সবুজ ঘাস। গরুরা খাবে, আর হাম্বা রবে ডাকবে। কিন্তু তাদের মনোরঞ্জনের জন্য টিভি কি থাকতে পারে?

>> তাসলিমা নীলুবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2014, 12:00 PM
Updated : 18 Jan 2014, 12:00 PM

এমনি এক কাজ করে বসেছেন রগাচিয়োভো। রাশিয়ান এই ভদ্রলোকের খামারটি রাশিয়ার পেনজা শহরে। আর তার সেই খামারেই তিনি গরুদের মনোরঞ্জনের এই ব্যবস্থা করেছেন।

রাশিয়ার পেনজা শহরে অবস্থিত তার এই খামারটি আকারে বেশ বড়। মোট গরু আছে ৩৫০টি। গরুগুলোর পিছনে প্রতিদিনই শয়ে শয়ে রুবল খরচ হয় তার। তবু আশানুরূপ দুধ দিচ্ছিল না ওরা। কিন্তু তাহলে চলবে কী করে? এভাবে চলতে থাকলে তাকে তো খামার নিয়ে পথে বসতে হবে!

কাজেই তিনি দুধের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ভাবতে বসলেন।

অনেক ভেবে শেষে তিনি এক সিদ্ধান্তে পৌঁছুলেন। তার ধারণা হল, সারাদিন খামারের বদ্ধঘরে থাকার কারণেই এই অবস্থা। সারাদিন বদ্ধ থাকায় গরুদের মন ভালো থাকে না। আর সে কারণেই তারা দুধও দেয় কম। অর্থাৎ, দুধের উৎপাদন বাড়াতে হলে গরুদের মন ভালো করার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যবস্থা করতে হবে তাদের বিনোদনের। তাহলেই মিলবে পর্যাপ্ত দুধ।

গরুদের মন ভালো করার বুদ্ধি হল, তাদের চড়ানো। মানে, তাদের নিয়ে মাঠে-ঘাটে ঘুরিয়ে আবার সন্ধ্যায় খামারে ফিরিয়ে আনা। রাখালরা যে কাজ করে আরকি। কিন্তু সে কাজ করতে গেলে তার আরও কিছু রাখাল নিয়োগ দিতে হবে। তাতে তো খরচ কমবে না, বাড়বে আরও। সব মিলিয়ে, লাভ তো হবে না।

গরুদের মনোরঞ্জনের জন্য অন্য কোনো বুদ্ধি বের করতে হবে। আবার ভাবতে বসলেন খামারটির মালিক রগাচিয়োভো।

সেই বুদ্ধি মাথায় আসতে অবশ্য খুব একটা সময় লাগল না। আর সে বুদ্ধি মোতাবেক কাজও শুরু করে দিলেন তিনি। গরুদের জন্য খামারে আসলো ৫০টি প্রমাণ সাইজের এলইডি টিভি। মানে, প্রতি সাতটি গরুর জন্য একটি করে। তারপর সেগুলো বসিয়ে দেওয়া হল গরুগুলোর দৃষ্টিসীমার মধ্যে।

এখন রগাচিয়োভোর খামারের গরুরা সারাদিন টিভি দেখে। টিভিতে দেখে সবুজ ঘাস, বন আর পাহাড়ি ঝরনা। সেসব দেখতে দেখতে সবুজ সবুজ ঘাস খায়।

আর সেই দৃশ্যগুলো ধারণ করা হয়েছে সুইজারল্যান্ডের পর্বত সংলগ্ন এলাকায়।

তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, টিভি বসানোর পর থেকে খামারটির গরুগুলো নাকি সত্যি সত্যিই দুধের উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছে!

এ বিষয়ে অবশ্য পশুচিকিৎসকরা ভিন্নমত পোষণ করেন। টিভি দেখে গরুর দুধের উৎপাদন বাড়তে পারে, এটা তারা মানতেই পারেননি। তাদের ধারণা, টিভি আসার সঙ্গে সঙ্গে খামারটিতে অন্য কোনো পরিবর্তনও হয়তো হয়েছে। আর সে কারণেই বেড়েছে দুধের উৎপাদন।