দারুচিনি দ্বীপের দেশে
মুজতাহিদ বিন মাসুম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 16 Mar 2022 12:19 PM BdST Updated: 16 Mar 2022 01:22 PM BdST
দিনটি ছিল ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০। আমাদের যাত্রা ছিল দেশের সুন্দর একটি জায়গা- সেন্ট মার্টিন।
অনেকদিন ধরে ইচ্ছে ছিল দ্বীপটিতে যাবার। ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে সেন্টমার্টিন মনে হয় স্বর্গের মতো। আমরাও চাচ্ছিলাম অপরূপ সুন্দর এ জায়গাটা ঘুরে দেখতে।
সেন্ট মার্টিন বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত একটি ছোট প্রবাল দ্বীপ, এর আয়তন মাত্র ৮ বর্গকিলোমিটার। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে যেতে হয় সেখানে। প্রচুর নারকেল পাওয়া যায় বলে এর আরেকটি নাম ‘নারকেল জিঞ্জিরা’।
যারা নিজের দেশকে না দেখে বিদেশ ঘুরলেন তারা আসলে জানেন না বাংলাদেশে কত সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে। নৈসর্গিক শোভামণ্ডিত সেন্ট মার্টিন আসলেই অনেক সুন্দর। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘দারুচিনি দ্বীপ’ অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এ দ্বীপটির পরিচিতি আরও বেড়ে যায়। এর মতো এত সুন্দর দ্বিতীয় কোন জায়গা আছে কিনা আমার জানা নেই।
দুই মাস অপেক্ষা করতে হয়েছিল সেন্ট মার্টিন দেখার জন্য। অবশেষে চলে এলো সে দিনটি। সঙ্গে ছিল আমার বাবা-মা ও ভাই। আমার বাবা মাসুম পাটোয়ারী একজন কলেজ শিক্ষক, মা ফারহানা ইসলামও পেশায় শিক্ষক। আমার ভাই শিফার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। আর আমার নাম সামি, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি।
যাই হোক, সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ ছিল আমাদের জন্য আনন্দের, কারণ এর আগে আমাদের এই ভ্রমণের পরিকল্পনা দুইবার স্থগিত হয়েছিল। অবশেষে চলে এলো সেইদিন। আমরা খুব উৎফুল্ল ছিলাম। দুমাস পর সেই দিনটা অবশেষে তো এলো! ব্যাকপ্যাক গোছানো ছিল এক অন্যরকম উৎসবের মতো। আমরা গিয়েছিলাম জনপ্রিয় ক্রুজ ‘বেই ওয়ান’-এ চড়ে।
কক্সবাজার ছিলাম চারদিন। কলাতলী, সুগন্ধা পয়েন্ট ছিল খুব পরিচিত। বিভিন্ন হোটেলে থেকেছি, যেমন- সায়মন, রয়েল হোটেল ইত্যাদি। ইনানীতে খুব মজা করেছি। কক্সবাজার যে কত জনপ্রিয় তা তো সবাই জানে!
এবার আমাদের মূল গন্তব্য সেন্ট মার্টিন। বেই ওয়ান জাহাজে উঠলাম। বলা হয়ে থাকে, এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো ক্রুজ। সেন্ট মার্টিনে থাকব তিনদিন। বেই ওয়ানে খুব মজা। অনেকক্ষণ সমুদ্রে ভেসে থেকে অবশেষে পৌঁছলাম সেন্ট মার্টিন।
খাবারের প্রথম দিনের মেন্যু ছিলো রুই মাছ, ভাত এবং সেন্ট মার্টিনের খুব জনপ্রিয় ‘আল্লাহর দান’ হোটেলের ডাল। যেহেতু এখানে কোন ভাল মুদিদোকান নেই তাই আমরা আমাদের বাসার কাছের একটি সুপারমল থেকে অনেককিছু যেমন চকোলেট, চিপস, ওষুধ সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম।
এ এক অন্যরকম জায়গা। যদিও এখানে কোন ইন্টারনেট নেই, তবে তা বোঝা যাবে না, প্রকৃতির সৌন্দর্য আপনাকে নিয়ে যাবে এক মগ্নতায়। আমরা ধ্যানের মধ্যে ডুবে গিয়েছিলাম। নীল সমুদ্র যেন সবাইকে নিজের কাছে নিয়ে যাবে।
সেখানকার মানুষরা অনেক ভালো। এ অভিজ্ঞতা আমার মনে থাকবে সবসময়। সেই বেই ওয়ানে চড়ে ফিরে আসলাম। তারপর যাই ছেঁড়া দ্বীপ, খুব সুন্দর একটা জায়গা। ছিলাম প্রীতিলতা হোটেলে। দ্বীপের পরিবেশ মনোরম। বারবার যাওয়ার মতোই জায়গা। আমরা এবার যাই আমাদের হোটেলে। এবার খাই ভাত, মুরগি এবং টাকিমাছের ভর্তা।
আমরা কলাতলী বিচে অনেক মজা করেছি। বার্মিজ মার্কেট থেকে অনেক কিছু কিনি, সবাইকে উপহার দিই। তারপর বাসায় ফিরে আসি। সবাইকে আচার দিই। খুব মজার ছিল।
লেখক পরিচিতি: শিক্ষার্থী, সপ্তম শ্রেণি, বাবুরহাট হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চাঁদপুর
কিডজ পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |
সর্বাধিক পঠিত
- এ পি জে আবদুল কালামের ৩০টি অমিয় বাণী
- ঝড়ের দিনে আম কুড়ানো
- জালাল উদ্দিন রুমির ৩০টি অমিয় পংক্তি
- শিশুর হঠাৎ জ্বর, ওমিক্রন হলেও দুশ্চিন্তা নেই
- একটি ভূতের গল্প লেখার পরের ঘটনা
- শিশু খেতে চায় না, সত্যিই কি এটা কোন রোগ
- শিশুর দেরিতে কথা বলা, কারণ ও করণীয়
- বাবার বাঁধানো ছবির পাশে এসে দাঁড়াই
- চারটি মজার গল্প
- শব্দ-কাল-বানান