এক্সপেরিমেন্টাল ব্যান্ড ‘রকফিশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ড্রামার রয়েদ বিন মাসুদ। গিটারিস্ট হিসেবে আছেন জিয়াউর রহমান আনাফ ও ফারহান আবরার রোহান। বেজিস্ট সায়মন হাসান ও ভোকালিস্ট মাহির মজুমদার।
রয়েদ, আনাফ, রোহান ও সায়মন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের ছাত্র আর মাহির পড়েন নটর ডেম কলেজে, রকফিশ’-এর ম্যানেজার ও ফটোগ্রাফারের দায়িত্ব পালন করছেন ফারহান সাদিক।
‘রকফিশ’ গড়ে ওঠার পেছনের গল্পটা জানাতে গিয়ে রয়েদ বিন মাসুদ বলেন, “আমি প্রথম গিটার শিখি বাফাতে। কিন্তু মন তো সেখানে থামে না। তো তখন শেখা শুরু করলাম ড্রামস, তবলা, পিয়ানো, কি-বোর্ড আরও অনেক বাদ্যযন্ত্র, ইউটিউব দেখে। কিন্তু একা বাজিয়ে মজা কি! সেখান থেকে প্রথম চিন্তা এলো ব্যান্ড গড়ে ফেলা যাক। বন্ধুরা মিলে গড়ে ফেললাম ‘রকফিশ’।”
রয়েদ জানান, স্কুলের র্যাগ ডে অনুষ্ঠানে বাজিয়ে তাক লাগিয়ে দেয় রকফিশ। প্রচুর মানুষের ভালবাসা আর সাড়া পান তারা। এখন সুযোগ পেলেই গান বাজনা করেন, সেইসঙ্গে নিজেদের গান লেখা আর পড়াশোনা তো চলছেই।
গিটারিস্ট আবরার রোহান জানান নিজেদের নির্মল বন্ধুত্বের কথা- ২০১৬ থেকে ওদের সবার সঙ্গে পরিচয় এবং তখন থেকেই বন্ধুত্বের শুরু। একসঙ্গে গল্প,আড্ডা, খেলাধুলা চলতে থাকতো সবসময়। ছুটির সময় কলেজের বড় ভাইদের দেখতাম গান গাইতে আর গিটার বাজাতে, সেখান থেকেই ইচ্ছা জাগে গিটার বাজানোর। তাই ২০১৭ সালে প্রথম গিটার হাতে নিই এবং ওয়ারফেজের কমল ভাইয়ের থেকে গিটার শেখার সৌভাগ্য হয়েছিলো আমার। তারপর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে সময় পেলেই গানবাজনা হতো আমাদের।
‘রকফিশ’-এর ভোকালিস্ট মাহির বলেন, “আমাদের ব্যান্ডের বৈশিষ্ট্য হলো আমরা সবাই খুব ভালো বন্ধু। বলতে গেলে বেশ কয়েক বছরে আমাদের মাঝে খুব ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আমাদের মাঝে এক বড় মিল হলো আমরা সবাই সঙ্গীতপ্রেমী। বিশেষ করে ব্যান্ড সঙ্গীত। আমরা একেকজন একেকভাবে সঙ্গীতকে অনুভব করি, কেউ হয়তো গেয়ে বা কেউ হয়তো বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে। আমাদের এ সঙ্গীতপ্রেম আরও সুন্দর করে প্রকাশ করার জন্যই ‘রকফিশ’ ব্যান্ড প্রতিষ্ঠিত।”
নিজের গান শেখার সূচনা নিয়ে রয়েদ বলেন, “শৈশবে আম্মুর হাত ধরেই গান শেখা শুরু আমার। আম্মু প্রথম প্রথম নজরুলগীতি শেখাতেন। সময় যেতে থাকে। সেইসঙ্গে গান-বাজনার পরিবর্তন।”
গান নিয়ে উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি বাস্তবতার কাছেও যেন লড়াইয়ের বার্তা দেন মাহির। বলেন, “বর্তমানে আমরা আমাদের দক্ষতা বাড়াচ্ছি ও মৌলিক গানের উপর কাজ করছি। অভিভাবকরা প্রথমে একটু ইতস্তত করলেও এখন ভালোই অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।”
কিছুক্ষণ থেমে দ্রুত একবার দ্রুত চোখের পলক ফেলে আর থুতনির নিচে ডান হাতটা রেখে সায়মন বলতে থাকেন- “তারপর ২০১৭-এ আম্মুকে বলার পর আম্মু আমাকে একটা গিটার অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করিয়ে দেন, সেখান থেকে আমার সাজিদ ভাইয়ার সঙ্গে পরিচয় হয়। সাজিদ ভাইয়া আমাকে শুরু থেকেই খুব যত্ন করে শেখান, তার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়ে যেতেন অভিজ্ঞতার জন্য। তারপর ২০১৯-এ আনাফ সাজিদ ভাইয়ার কাছে ক্লাস করা শুরু করে। আমরা সবাই মাঝে মাঝে একসঙ্গে বসে গান করতাম এবং ধীরে ধীরে আজকের এ ব্যান্ড গঠন করি।”
বর্তমানে নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে ‘রকফিশ’, প্রস্তুতি নিচ্ছে নটর ডেম কলেজে অনুষ্ঠেয় ‘ব্যাটল অব ব্যান্ডস’ প্রতিযোগিতার। ব্যান্ডের সদস্যরা জানান, মা-বাবা সহজে গান গাইতে দিতে রাজি হয় না, গানের পাশাপাশি মা-বাবার মন জয় করা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে দর্শক-শ্রোতাদের ভালোবাসাই পারে কেবল এ বাধা দূর করতে।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |