টিটোর মাথার ঝুঁটি খুব ছোট ছিল না, আবার অনেক লম্বাও ছিল না। সে অনেক চালাক ছিল না, বলতে গেলে বোকা টাইপের মোরগ ছিল টিটো।
একদিন সকালে টিটো নাশতা করছিল এবং ইন্টারনেটে খবর পড়ছিল। হঠাৎ একটি শিরোনাম দেখে খুব ভয় পেয়ে গেলো টিটো। ওই খবরের শিরোনামটি ছিল ‘আকাশ ভেঙে পড়বে’।
টিটো এতোটাই ভয় পেল যে নাশতা ফেলেই ছুটতে শুরু করল। আর চিৎকার করছিল, ‘আকাশ ভেঙে পড়বে… আকাশ ভেঙে পড়বে!’। টিটো মনে মনে ভাবছিল, ‘আমাকে সবাইকে সতর্ক করতে হবে!’
রাস্তায় টিটোর সঙ্গে দেখা হলো বিড়ালছানা মিটুর। মিটু সুপারমার্কেট থেকে বাজার করে ফিরছিল। টিটোকে দেখে মিটু বলল, ‘শুভ সকাল টিটো। তুমি কোথায় যাচ্ছ? আর তুমি এতো ভয় পাচ্ছ কেন?’
টিটো তাকে বলল, ‘আকাশ ভেঙে পড়বে… আকাশ ভেঙে পড়বে!’
বিড়াল ছানা মিটু বলল, ‘সত্যি? কিন্তু তুমি কীভাবে জানলে?’
টিটোর উত্তর, ‘আমি ইন্টারনেটে দেখেছি!’
‘হে ঈশ্বর! এটা তাহলেই সত্য’ এই বলে মিটুও টিটোর সঙ্গে দৌড়াতে শুরু করল।
দৌড়াতে দৌড়াতে তারা একটি নদীর কাছে পৌঁছাল। সেখানে সাঁতার কাটছিল হাঁসের ছানা প্যাকপ্যাক।
প্যাকপ্যাক বলল, ‘হ্যালো, বন্ধুরা তোমরা কোথায় যাচ্ছ? তোমরা এতো ভয় পাচ্ছ কেন?’
‘আকাশ ভেঙে পড়বে… আকাশ ভেঙে পড়বে!’ চিৎকার করে বলল টিটো ও মিটু।
‘সত্যি? তোমরা কীভাবে জানলে’ জিজ্ঞেস করে প্যাকপ্যাক।
‘আমি ইন্টারনেটে দেখেছি’ উত্তর দিলো টিটো।
‘ওহ! তাহলে এটা অবশ্যই সত্য!’ বলল প্যাকপ্যাক। তারপর বলল, ‘চলো আমিও তোমাদের সঙ্গে যাব।’
তারপর টিটো, মিটু ও প্যাকপ্যাক রাস্তা পার হয়ে একটি খামারের দিকে যেতে থাকে। সেখানে তাদের সঙ্গে দেখো হলো ভেড়া কিটকিটের। কিটকিট তার ছানাকে কবিতা পড়াচ্ছিল।
সবাইকে হ্যালো জানাল কিটকিট। তারপর বলল, ‘তোমরা কোথায় যাচ্ছ? আর তোমরা এতো ভয় কেন পাচ্ছ?’
সবাই চিৎকার করে বলল, ‘আকাশ ভেঙে পড়বে… আকাশ ভেঙে পড়বে!’
কিটকিট বলল, ‘তোমরা কি সত্যি বলছ? তোমরা এটা কীভাবে জানলে?’
তখন সবাই বলল, ‘আমরা ইন্টারনেটে দেখেছি!’
‘ইশশ তাহলে তো পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে’ বলল কিটকিট। তারপর ভেড়া ছানাকে বলল, ‘এখন কবিতা পড়ার সময় নেই। চলো পালাই।’
এরপর টিটো, মিটু, প্যাকপ্যাক, কিটকিট ও ভেড়া ছানা খামার ছেড়ে গ্রামের দিকে চলে যায়।
পিকু তাদের দৌড়াতে দেখে বলল, ‘হ্যালো! তোমরা কোথায় যাচ্ছ? তোমরা এত ভয় পাচ্ছ কেন?’
সবাই চিৎকার করে বলল, ‘তুমি তো চালাক, কিন্তু তুমি শোননি আকাশ ভেঙে পড়বে…!’
চালাক শেয়াল পিকু বলল, ‘সত্যিই বলছ, তোমরা এ খবর কীভাবে জানলে?’
‘আমরা ইন্টারনেটে দেখেছি,’ সবাই চিৎকার করে বলল।
‘আচ্ছা! তাহলে তো এটা অবশ্যই সত্য হতে হবে!’ বলল শেয়াল। সে আরও বলল, ‘কিন্তু তোমরা একদম চিন্তা করো না, আমাদের লুকানোর জায়গা আছে। চলো আমি তোমাদের নিয়ে যাচ্ছি।’
সবাই শেয়াল পিকুর পেছনে পেছনে গ্রামের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। তারা গ্রাম পার হয়ে একটি পাহাড়ে পৌঁছালো। ওই পাহাড়ের একটি বড় ও অন্ধকার গুহা ছিল।
চালাক পিকু বলল, ‘ভেতরে এসো বন্ধুরা! তাড়াতাড়ি ভেতরে এসো! এখানে সবার জন্য জায়গা আছে। আর আমরা এখানে থাকলে আকাশ আমাদের ওপর পড়বে না। আমরা নিরাপদে থাকতে পারব।’
তারপর সবাই শেয়াল পিকুর সঙ্গে অন্ধকার গুহাতে ঢুকে পড়ল।
পরের দিন সকালে গুহাটি খালি ছিল। পিকু ছাড়া টিটো ও তার বন্ধুরা সেখানে ছিল না।
তাহলে টিটো ও তার বন্ধুরা কোথায় গেল? আমিও ঠিক জানি না। তবে তোমাদের একটা কথা বলি, শেয়াল পিকু খুব খুশি ছিল। তার বৃত্তাকার ভুড়িটাও বেশ মোটাসোটা হয়েছিল।
ইংরেজি লোকগল্প ‘হেনি-পেনি: দ্য স্কাই ইজ ফলিং’ অবলম্বনে। গল্পটি ১৯২২ সালে ফ্লোরা অ্যানি স্টিল লিপিবদ্ধ করেছিলেন, অলঙ্করণ আর্থার র্যাকহ্যাম।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |