হরিচরণ রায়ের বাড়ি, খসে পড়া ইতিহাসের পাতা
আবু সোহান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 16 Oct 2021 12:28 PM BdST Updated: 16 Oct 2021 12:28 PM BdST
প্রাচীন নিদর্শন ও জমিদারি প্রথার এক দৃষ্টান্ত হরিচরণ রায়ের জমিদার বাড়ি। স্থাপত্যশিল্পের অনন্য কারুকার্যে মোড়ানো বাড়িটি সবার নজর কাড়ে।
সাতক্ষীরা শহর থেকে ৭২ কিলোমিটার দূরে শ্যামনগর উপজেলার নকিপুরে অবস্থিত এটি। প্রায় দেড়শ বছর আগে ১৮৮৮ সালে হরিচরণ রায় চৌধুরী ৪১ কক্ষের তিনতলা এল-প্যার্টানের এ বাড়িটি নির্মাণ করেন। স্থানীয়দের কাছে এটি রায় চৌধুরীর বাড়ি ও নকিপুর জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত।
হরিচরণ রায় এলাকার প্রতাপশালী জমিদার ছিলেন। তার এ বাড়িতে প্রতিবছর দুর্গাপূজা হতো। পুজোর জন্য বাড়িতে পাকা প্যান্ডেল ছিল। বাড়িটিতে আছে জোড়া শিবমন্দির, চিকিৎসালয়, নহবতখানা, পূজামণ্ডপ, দিঘী ও পুকুর।

এক পা দুই পা করে বাড়িটার কাছে গেলাম। খুঁটে খুঁটে সবকিছু দেখতে শুরু করলাম, যতই দেখেছি অবাক হয়েছি। আভিজাত্য আর গাম্ভীর্যে ভরপুর প্রতিটা ইট, প্রতিটা কক্ষ। জানালা আর দরজার খোপগুলো অসাধারণ কারুকার্যের চাদরে মোড়ানো। সেগুলো দেখে আমার গায়ের ভেতর শিরশির করে ওঠলো। ভাবতে শুরু করলাম, প্রতিটা জায়গা একদিন কতই না কোলাহল, বিলাসিতা আর আড়ম্বরপূর্ণ থাকতো। কিন্তু সব আড়ম্বর আর নৈপুণ্য আজ কালের গহ্বরে তলিয়ে যাওয়ার দিন গুণছে!

সোনার মোহর না পেলেও দর্শনার্থীদের ফেলে যাওয়া কিছু জিনিস ঠিকই পেয়েছি। অন্য দর্শনার্থীরা হয়ত আমাদের মতো সোনার মোহর খুঁজেছিলো, এটা বুঝতে বাকি থাকলো না। ইট, চুন আর সুরকি মিশ্রিত বাড়িটি চোখের সঙ্গে মনের ক্ষুধা মিটিয়েছে। প্রতিটা ইটের পরতে পরতে রাজকীয়তার সুঘ্রাণ এখনও বিদ্যমান।
কিছু পা হেঁটে দেখা পেলাম এক বিশাল পুকুরের। চারপাশে অসংখ্য গাছ আর আগাছা দিয়ে পুকুরের বাধগুলো আবৃত হয়ে গেছে। ঝিঁঝি পোকার ডাকে পরিবেশটা মুখরিত। পুকুরে নামার জন্য তৈরি করা ইট দিয়ে বাঁধানো ঘাট আমার নজর এড়াতে পারেনি। ঘাটটি দেখে মনে হলো, ললিতকলার আবেগমিশ্রিত শিল্পীর রং তুলির আঁচড়ে আঁকা ছবি।

অপরিচর্যা ও অবহেলার কারণে হরিচরণ রায়ের জমিদার বাড়ির ভবন ও শিবমন্দির সবকিছুই ধ্বংসের মুখে। ইট, সুরকি খসে পড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের গাছগাছালি ও লতাপাতা ভবনগুলোকে ঘিরে ধরেছে। ঐতিহ্যবাহী এ বাড়িটি স্থানীয় মানুষদের দেখাশোনার পাশাপাশি সরকারের দৃষ্টিপাত জরুরি।
লেখক: শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |
সর্বাধিক পঠিত
- গল্প শোন বাঘের
- এ পি জে আবদুল কালামের ৩০টি অমিয় বাণী
- টিকটিকির টিক্ টিক্
- শিশুর হঠাৎ জ্বর, ওমিক্রন হলেও দুশ্চিন্তা নেই
- জালাল উদ্দিন রুমির ৩০টি অমিয় পংক্তি
- একটি ভূতের গল্প লেখার পরের ঘটনা
- মানুষের মাংস পিঁপড়ার পছন্দ
- শিশু খেতে চায় না, সত্যিই কি এটা কোন রোগ
- শিশুর দেরিতে কথা বলা, কারণ ও করণীয়
- জয়নুলের ‘দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা’