মেওয়ে কোংগুরুর এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলো। তারপর মেওয়েকে ভয় দেখানোর জন্য কাকের রাজা তাকে বার্তা পাঠাল- ‘তুমি যদি আমার কথা মানতে অস্বীকার করো, তাহলে আমি তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব’।
প্রতিউত্তরে ঘুড়ির রাজা জানালো- ‘এটা আমার জন্য উপযুক্ত, আসো আমরা যুদ্ধ করি এবং তুমি যদি আমাদের পরাজিত করো তাহলে আমরা তোমার আনুগত্য স্বীকার করবো। কিন্তু যদি আমরা বিজয়ী হই তবে তুমি আমাদের দাস হবে’।
তারপর তারা তাদের বাহিনিকে জড়ো করে যুদ্ধে লিপ্ত হলো এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই এটা স্পষ্ট হয়ে গেল যে কাকগুলোকে মারাত্মক মারধর করা হচ্ছে।
যেহেতু এটা নিশ্চিত ছিল যে, যদি খুব দ্রুত কিছু না করা হয়, তবে তাদের সবাইকে হত্যা করা হবে। জিউসি নামে একটি বুড়ো কাক হঠাৎ প্রস্তাব দিল যে তাদের পালিয়ে যেতে হবে।
এ পরামর্শে কাকগুলো যুদ্ধবিরতির সময় তাদের বাড়ি ছেড়ে দূরে পালিয়ে গেল। সেখানে তারা অন্য একটি শহর স্থাপন করল। যখন ঘুড়িগুলো কাকেদের বাসায় আসলো তখন তারা সেখানে কাউকে পেল না এবং তারা কাকদের বাড়িঘর দখলে নিলো।
তারপর একদিন কাকগুলো জড়ো হলো। কোংগুরু উঠে দাঁড়িয়ে বলল- ‘আমার লোকেরা, আমি তোমাদের যেভাবে আদেশ দিচ্ছি তা করো এবং আশা করি সবকিছু ঠিকঠাক হবে। আমার কিছু পালক বের করে আমাকে ঘুড়ির শহরে ফেলে দাও, তারপর ফিরে আসো এবং এখানে থাক যতক্ষণ না তোমরা আমার কাছ থেকে কোনো সংকেত পাও।’
কোনো তর্ক না করে কাকেরা তাদের রাজার আদেশ পালন করল।
কোংগুরু ঘুড়ির শহরের রাস্তায় পড়ে থাকল। অল্প সময়ের মধ্যেই কিছু ঘুড়ি তাকে দেখে হুমকি দিয়ে জিজ্ঞেস করলো- ‘তুমি আমাদের শহরে কী করছো?’
হাহাকার করে সে উত্তর দিল- ‘আমার সঙ্গীরা আমাকে মারধর করেছে এবং আমাকে তাদের শহর থেকে বের করে দিয়েছে, কারণ আমি ঘুড়ির রাজার প্রস্তাবে তাদের যুদ্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিলাম’।
তার এ কথা শুনে তাকে তুলে নিয়ে রাজার সামনে নিয়ে গেল। তারা বলল- ‘আমরা একে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছি এবং সে আমাদের শহরে তার অনিচ্ছাকৃত আগমনের করুণ গল্প শোনায়। আমরা ভাবলাম গল্পটা আপনার শোনা উচিত’।
ঘুড়ির রাজা মেওয়ে, কোংগুরুর মুখে তার করুণ-কাহিনি শুনে তাকে তাদের সঙ্গে থাকার অনুমতি দিলো। কোংগুরু অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো। সে ঘুড়িদের সঙ্গে তার জীবনের বাকি সময় কাটাবে বলে সবাইকে জানাল।
এরপর কাকের রাজা কোংগুরু ঘুড়িদের সঙ্গে মিলেমিশে দিন কাটাতে লাগল। সপ্তাহখানেক পর ঘুড়িদের বার্ষিক উৎসব আসলো। কোংগুরু জানতে পারলো, সব ঘুড়ি ওইদিন একটি অডিটোরিয়ামে মিলিত হবে।
এসব জেনে কোংগুরু নিজের শহরে গেলো এবং তার অনুগত কাকেদের একত্রিত করল। সে বলতে শুরু করল- ‘ঘুড়িদের মহান বার্ষিক উৎসব কাল এবং তারা সবাই সকালে অডিটোরিয়ানে যাবে। তোমরা কিছু কাঠ এবং আগুন নিয়ে আসো। তাদের শহরের কাছে অপেক্ষা করো যতক্ষণ না আমি তোমাদের ডাকছি। আমি ডাকলেই দ্রুত এসে অডিটোরিয়ামে আগুন ধরিয়ে দিও’।
তারপর সে তাড়াতাড়ি ঘুড়িদের শহরে ফিরে গেলে।
নির্দেশ পেয়ে কাকেরা সারারাত কাঠ ও আগুন জোগাড় করল। ভোরের দিকে তাদের হাতে প্রচুর কাঠ এবং আগুন চলে আসলো এবং তারা তাদের বিজয়ী শত্রুদের শহরের কাছে অপেক্ষা করতে শুরু করল।
উৎসবের দিন সকালে প্রতিটি ঘুড়ি অডিটোরিয়াম গেলো। কোংগুরু পেট খারাপের ভনিতা করে উৎসবে গেলো না। বাড়িগুলোতে কোংগুরু ছাড়া আর কেউ বাকি থাকল না।
দুষ্টু কোংগুরু তার সৈন্যদের ডেকে ঘুড়িদের অডিটোরিয়ামে আগুন ধরিয়ে দিলো। সেই আগুনে ঘুড়িদের রাজা মেওয়েসহ সব ঘুড়ি পুড়ে মারা গেলো।
সেইদিন থেকে আজ পর্যন্ত কাক দেখলেই ঘুড়ি উড়ে দূরে সরে যায়।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |