শরৎচন্দ্রের ছোটগল্প: জীবনের বৃহৎ ইঙ্গিত

দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাংলা পাঠ্যবইয়ে প্রথমবার ‘মহেশ’ পড়েছিলাম। সেই থেকে ছোট গল্পটি আমার ওই ছোট্ট হৃদয়ে গেঁথে গিয়েছিল। তারপর থেকে আর কোনোদিনও ভুলিনি।

হিমু চন্দ্র শীলহিমু চন্দ্র শীল
Published : 7 June 2021, 04:30 PM
Updated : 22 June 2021, 05:54 AM

কিছুদিন আগে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর ৮টি ছোটগল্প নিয়ে একটি সংকলন পড়ে নিলাম বৃষ্টিস্নাত এক সন্ধ্যায়। টান টান উত্তেজনাকর ৮টি গল্প পাঠকের হৃদয়ে এখনও নতুন এক অনুভূতির শিহরণ জাগাবে। আজ সে পাঠ অনুভূতিই জানাবো।

সংকলনের একটি ট্র্যাজিক গল্প হলো ‘মহেশ’। কাশীপুর নামক এক গ্রামে এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে গরিব কৃষক গফুর মিয়ার বাস। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা তিন হলেও আসলে কিন্তু তারা চারজন। গফুর মিয়ার আদর-মমতা দিয়ে পোষা এক অবলা ষাঁড়ই সে চারজনের জায়গাটা দখল করে নিয়েছে। প্রাণীটি ষাঁড় হলেও গরিব কৃষক গফুর মিয়া কোনোদিনও নিরীহ প্রাণীটিকে ষাঁড় হিসেবে দেখে না। সে ষাঁড়টিকে নিজের পুত্র হিসেবে জানে, আদর করে তার নাম রেখেছে ‘মহেশ’।

গ্রীষ্মের তপ্ত রোদ্দুরে যখন ফসলের মাঠ-ঘাট শুকিয়ে চৌচির হয়ে যায়, বর্গা চাষ করে পাওয়া খড়টুকুও যখন আগের বছরের বকেয়া এই অজুহাতে জমিদার মশায় কেড়ে নিলেন, তখন বর্গাচাষী গফুর মিয়ার অভাবের সংসারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলানো কৃষক গফুর মিয়া যেখানে ঠিকমতো রোজ দু’বেলা আহার করতে পারে না সেখানে ‘মহেশ’ নামক ষাঁড়টির খাবার যোগাড় করা রীতিমতো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। দিনদিন খেতে না পেয়ে ক্ষুধার্ত ‘মহেশ’ খাবারের সন্ধানে একদিন দড়ি ছিঁড়ে পলায়ন করলেও পরেরদিন ঠিকই ফিরে আসে একই জায়গায়।

আদর যত্ন দিয়ে বড় করা মহেশকে এরই মধ্যে দরিদ্র কৃষক একবার বিক্রি করতে চেয়েও বিক্রি করতে পারে না। জৈষ্ঠ্য মাসের শেষে একদিন ক্ষুধায় পিপাসায় ক্লান্ত-শ্রান্ত কৃষক গফুর মিয়া জানতে পারে তার প্রিয় মহেশ দড়ি ছিঁড়ে পালিয়ে গিয়ে গায়ের জমিদার বাবুর অনিষ্ট করে ছেড়েছে। এর মধ্যে আবার ওই উত্তপ্ত দুপুরে গফুরের একমাত্র মেয়েকে জলের পাত্র সমেত শিং দিয়ে গুঁতিয়ে মাটিতে ফেলে দিল মহেশ। মেয়েকে এভাবে দেখতে পেয়ে রাগে ক্রোধে মেরামত করার জন্য রাখা ভাঙা লাঙ্গলটি হাতে নিয়ে গফুর মিয়া সজোরে আঘাত করে মহেশের মাথার উপর। মুহূর্তেই অবলা প্রাণীটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং মাথা ফেটে রক্ত বের হতে হতে একসময় মারা যায়। মহেশের মৃত্যুর খবর শুনে গ্রামের মুচির দল তার মাংসের স্বাদ নেওয়ার জন্য চলে আসে।

অপরদিকে গ্রামের হিন্দু জমিদার বাবু মহেশকে মারার শাস্তি দিতে লোক পাঠায়। কিন্তু ওই দিন রাতে, ‘গফুর কহিল, দেরি করিস নে মা, চল্ অনেক পথ হাঁটতে হবে। আমিনা জল খাইবার ঘটি ও পিতার ভাত খাইবার পিতলের থালাটি সঙ্গে লইতে ছিল, গফুর নিষেধ করিল, ওসব থাক্ মা, ও তে আমার মহেশের প্রায়চিত্তির হবে।’ এই বলে গফুর অন্ধকার নিশীথে নিজের গ্রাম ছেড়ে চলে যায়।

শব্দশৈলীর চমৎকার গাঁথুনি আর বাক্যের দারুণ বিন্যাসে গল্পটিতে ফুটে উঠে এক অবলা জীবের প্রতি গরিব কৃষকের অকৃত্রিম ভালোবাসা। অপরদিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় সমাজের এক শ্রেণির জমিদারের হাতে গরিব কৃষকদের শোষিত হওয়ার করুণ চিত্র। এভাবে পাঠকের হৃদয়ে অশ্রুর কড়া নেড়ে সমাপ্ত হয় মহেশ গল্পটি।

তারপর আসি ‘ছেলেধরা’ গল্পটিতে। এ গল্পের বিষয়বস্তু হলো, সারা দেশে রটে গেল যে ছেলেদের বলি দেওয়া ছাড়া কোনভাবে রূপনারায়ণ নামক একটি খালের ওপর পুল তৈরি করা যাচ্ছে না। অপরদিকে একটি গ্রামে বাস করা মুখুজ্যে দম্পতি সব সম্পত্তি নিজেদের মধ্যে রেখে একমাত্র ভাইপো হীরুকে তাদের কাছ থেকে আলাদা করে দিলেন। হীরু তার প্রাপ্য সম্পত্তি ফিরে পেতে এবং মুখুজ্যে দম্পতিকে শাসানোর পরিকল্পনা করে, একসময় রাইপুর নামক গ্রামের দুই পলোয়ান ভাই লতিফ ও মামুদের সঙ্গে দুই টাকা দিয়ে চুক্তি করে।

একদিন একাদশীর সময় লতিফ আর মামুদ ছদ্মবেশে মুখুজ্যে দম্পতির বাসায় প্রবেশ করলে সঙ্গে সঙ্গে পুরো পাড়ায় রটে যায় ছেলেধরা এসেছে। তখন সারা গ্রাম থেকে লোকজন হৈহল্লা করে লাঠিসোটা নিয়ে এসে লতিফকে ধরে ফেললে মামুদ পালিয় যায়। তখন লেখক নিজেই,  ‘লোকটাকে জিজ্ঞাসা করলুম মিঞা, ব্যাপারটা সত্যি কী বল তো? এখন অভয় পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে সমস্ত ঘটনা বিবৃত করলো। মুখুজ্যে দম্পত্তির উপর কারও সহানুভূতি ছিল না, শুনে অনেকের করুণাও হলো। বললুম, লতিফ বাড়ি যাও, আর কখনও এসব কাজে এসো না।’ এই বলে লতিফকে উদ্ধত জনগণের হাত থেকে রক্ষা করলো। অপরদিকে মামুদও এক গোয়ালঘরে লুকিয়ে থেকে রাত কাটালো। সহজ সরল ভাষায় গল্পটির পেছনে লুকিয়ে আছে চিরাচরিত সেই কুসংস্কার।

‘রামলালের বয়স কম ছিল, কিন্তু দুষ্টবুদ্ধি কম ছিল না। গ্রামের লোক তাহাকে ভয় করিত।’ ‘রামের সুমতি’ নামে লেখকের গল্পটি এভাবে শুরু হয়। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র গ্রামের মা-বাবা মরা এক দুরন্ত কিশোর রাম। মা-বাবা না থাকলেও রামের মায়ের মতো এক বৌদিদি আছেন যিনি রামকে সবসময় নিজের ছেলের মতো স্নেহ-মমতা দিয়ে আগলে রাখেন। রামও বৌদিদিকে নিজের মা-ই মনে করেন। কিন্তু বিপত্তিটা বাধে যখন নারায়ণীর মা এসে হাজির হয় দুজনের মাঝখানে। রাম যেটা পছন্দ করে না নারায়ণীর মা দিগম্বরী দেবী ঠিক তার উল্টোটা করে বসে। এভাবে চলতে চলতে একদিন দিগম্বরী দেবী রামের শখ করে পোষা মাছ কার্ত্তিক-গণেশ দুটিকে পুকুর থেকে ধরে রান্না করে ব্রাহ্মণদের নিমন্ত্রণ খাওয়ালো। নিজের শখের মাছকে এভাবে শত্রুর হাতে প্রাণ দিতে দেখে খুবই মর্মাহত হয়ে যায় রাম। এরই মধ্যে একসময় গ্রামের এক জমিদারের ছেলেকে তুচ্ছ বিষয়ে রাম প্রহার করে। রামের এমন কান্ডে বিরক্ত হয়ে রামের বড় ভাই শ্যামলাল তাকে সবকিছু ভাগবাটোয়ারা করে দিয়ে আলাদা করে দেয়।

কিন্তু ছোট্ট রাম এর কিছুই বুঝে উঠতে পারে না। যখন নিজের মায়ের মতো বৌদিদিও তার সঙ্গে কথা বলে না তখন রাম তাদের ছেড়ে চলে যেতে চায় অজানা কোনো এক জায়গায়। ‘নারায়ণী ব্যাকুল হইয়া উঠিলেন, কোথায় যেতে রাজি আছে রে? কোথায় সে? ভোলা বলিল, বাইরে গাছতলায় দাঁড়িয়ে আছেন। বাবার থানের ওদিকে কোথায় তেনার মামার বাড়ি আছে যে! যা ভোলা শীগ্গিরি ডেকে আন্-বল্, আমি ডাকছি। ভোলা ছুটিয়া গেল নারায়ণী কাঠ হইয়া দাঁড়াইয়া রহিলেন। অনতিকাল পরেই রাম একটি ছোট পুঁটলি হাতে লইয়া কাছে আসিয়া দাঁড়াইতেই নারায়ণী নিঃশব্দে তাহার হাত ধরিয়া ঘরের মধ্যে টানিয়া লইয়া গেলেন।’

সবকিছু আবার আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে উঠল। কিন্তু মা-ছেলের সেই সুখ নারায়ণীর মা দিগম্বরী দেবীর কাছে বিষের মতো হয়ে উঠল। একসময় ওসব সহ্য করতে না পেরে দিগম্বরী দেবী নিজেই সেখান থেকে প্রস্থান করে। কিন্তু তাতে আগের মতো কেউ বাধা দেওয়ার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেনি। কারণ সবাই জানে পরিবারের এই অশান্তির মূলে একমাত্র দিগম্বরী দেবীরই হাত রয়েছে। অবশেষে দিগম্বরী দেবী চলে যাওয়ার পর সব সুখ আগের মতো ফিরে আসে। আর রামও তখন দস্যিপনা ছেড়ে দিয়ে সুবোধ ছেলে হয়ে উঠে। লেখক এই গল্পে দেখিয়েছেন গ্রামের এক সহজ-সরল বালকের দুরন্তপনা। অপরদিকে ফুটিয়ে তুলেছেন অনাথ এক বালকের প্রতি মাতৃতুল্য বৌদিদির স্নেহমাখা ভালোবাসা। যে বন্ধন শত ঝড়-ঝঞ্ঝার মাঝেও অটুট থাকে।

‘পাগলের মত ছুটে বাহিরে গিয়ে চাকরদের যাকে সমুখে পেলেন চেঁচিয়ে হুকুম দিলেন, - হারামজাদা লেলো কোথায়? কাজকর্ম্ম চুলোয় যাক গে, বজ্জাতটাকে যেখানে পাবি মারতে মারতে ধরে আন্।’ আর ওই বজ্জাতটা হলো ‘লালু’ গল্পের দুরন্ত বালক লালু নিজেই। ‘লালু’ গল্পের সারমর্ম হলো একদিন তাদের তিনতলা বাড়িতে তার মা নন্দরাণীর গুরুদেব আসে। গুরুদেব রাত্রিকালে যে খাটে ঘুমাতে যাবেন ওই খাটের ওপর একটা বড় বরফের টুকরো ন্যাকড়া দিয়ে বিশেষ কায়দায় বেঁধে রাখলেন লালু। যখন রাত্রে গুরুদেব ঘুমাতে গেলেন তখন ওই বরফ থেকে ছুঁইয়ে ছুঁইয়ে পানি ঝরছে। গরুদেব প্রথমে মনে করলেন হয়তো যে জায়গায় খাট আছে ওই জায়গার ছাদ ফুটো।

কিন্তু বেশ কয়েকবার আস্ত খাটটিকে এদিক-ওদিক নড়ানোর পরও যখন অনবরত পানি ঝরেই যাচ্ছে তখন গুরুদেব মনে করলেন বাড়ির পুরো ছাদটিই ফুটো। তখন ওনি ওই খাটে না ঘুমিয়ে সারা রাত জেগে থাকলেন মশার কামড় খেয়ে। পরদিন নন্দরাণী আবিষ্কার করলেন লালুর এহেন শয়তানি বুদ্ধির কর্মকাণ্ড। অবশ্য লালু তখন কিন্তু মারের ভয়ে মাসির বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এই গল্পটিতে এক দুরন্ত বালকের দস্যিপনা ও গুরুদেবের নির্ব্বুদ্ধিতা ফুটে উঠে বলে মনে। ‘ইন্দ্র ব্যাকুল হইয়া কহিল, নতুনদা, এ যে ভারি মুশকিল হলো-হাওয়া পড়ে গেল। আর ত পাল চলবে না। নতুনদা জবাব দিলেন, এই ছোঁড়াটাকে দে না,  দাঁড় টানুক।’ শরৎচন্দ্রের আর একটি গল্প  ‘কলকাতার নতুন-দা’। এই গল্পে একজন ফুলবাবু যাকে কিনা সবাই নতুন-দা বলে ডাকতেন তিনি এসে হাজির হলেন এক গ্রামে কোনো এক শীতের সন্ধ্যায়। তারপর দুইজন সমবয়সী বালক শ্রীকান্ত আর ইন্দ্র এলএ পাশ করা সে নতুন-দাকে সাথে নিয়ে জ্যোস্না মাখা রাতে গঙ্গা নদীর মধ্য দিয়ে নৌকায় করে থিয়েটারে সিনেমা দেখতে বের হয়। রাত এগারোটার সময় থিয়েটারে পৌঁছানোর আগেই নতুন-দার ক্ষুধা নিবারণের জন্য যখন একটা গ্রামের পাশে নৌকা ভিড়িয়ে নতুন-দাকে একা রেখে তারা উভয়ই খাবারের সন্ধানে বের হয় তখনই ঘটে এক মজার কাণ্ড।

তীরের বজ্জাত কুকুরের দল নাদুসনুদুস শহুরে বাবুকে পেয়ে একেবারে ঠান্ডা জলে নামিয়ে ছাড়ে। কিন্তু একসময় শ্রীকান্ত আর ইন্দ্র এসে নতুন-দাকে উদ্ধার করে। যে নতুন-দা সন্ধ্যাবেলায় যাওয়ার সময় গ্রামের মানুষ, পোশাক সবকিছুকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছিল, ঠান্ডায় টকটক করে কাঁপতে থাকা সেই নতুন-দা আসার সময় শ্রীকান্তের গায়ে দেওয়া র্যাপারটি নিজেই গায়ে দিয়ে সে যাত্রায় রক্ষা পেল। এই গল্পে আমরা দেখতে পাই চলার পথে কোনো জিনিসকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা ভালো নয়। যে জিনিসকে আমরা অবহেলা করছি হয়তো ওই জিনিসই বিপদের সময় আমাদের একমাত্র অবলম্বন হতে পারে।

‘হরিচরণ’ শিরোনামে গল্পে লেখক এক আনুগত্য এগারো-বারো বছর বালক ভৃত্যের কথা বলেছেন যে নিজের কাজের মাধ্যমে বাড়ির মালিককে সন্তুষ্ট করেছিলেন। কিন্তু একদিন জ্বরের কারণে মালিকের ঘুমানোর বন্দোবস্ত করতে না পারায় মালিকের দ্বারাই প্রহারিত হয়ে দশদিন পর চিরকালের মায়া ত্যাগ করে মৃত্যুবরণ করেন বালক ভৃত্য হরিচরণ। ‘বিন্দুর ছেলে’ এ গল্পটিতে দুই জা’র হাসি-ঠাট্টা-ঝগড়া, মান-অভিমানের মাধ্যমে অমূল্য নামক এক শিশুকে উপজীব্য করে লেখক তুলে এনেছেন তাদের চমৎকার এক আত্মিক বন্ধন। অমূল্য ছোট জা বিন্দুর ছেলে না হলেও বিন্দু নিজের ছেলের মতোই অমূল্যকে ভালোবাসতেন। কিন্তু একদিন বড় জা অন্নপূর্ণার সাথে অভিমান করে দুজন দু’বাড়িতে গিয়ে উঠলেও একদিন ঠিকই সবাই একজায়গায় এসে মিলিত হয়।

শরৎচন্দ্রের আরও একটি চমকপ্রদ গল্প ‘মেজদিদি’। এখানেও লেখক চৌদ্দ বছরের এক বালক কেষ্টকে উপজীব্য করে তুলে এনেছেন ভালোবাসার বন্ধন। বাবা-মা হারা কেষ্ট যখন সৎ বোনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয় তখন তা সৎ বোন সহ্য করতে না পারলেও সৎ বোনের জা কেষ্টকে নিজের ছেলের মতোই মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ করে নেয়। কেষ্ট তখন সৎ বোনের জা’কে মেজদিদি বলে ডাকতে শুরু করে। এভাবে শুরু হওয়া বন্ধন যা গল্পের শেষেও লেখক অটুট রেখেছেন এই বলে, ‘কেষ্ট তোর মেজদিকে তুই বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আয় ভাই; শপথ করছি, আমি বেঁচে থাকতে তোদের দুই ভাই-বোনকে আজ থেকে কেউ পৃথক করতে পারবে না।’

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘ছেলেধরা’ গল্পের বইয়ের প্রতিটি গল্পে কোনো না কোনোভাবে বালক কিংবা শিশু-কিশোরদের উপজীব্য করে গল্প এগিয়ে নিয়ে গেছেন। কখনো তিনি দুরন্ত বালকের দস্যিপনায় এঁকে দিয়েছেন বিয়োগান্ত কোনো ঘটনা। আবার কখনো তিনি হাসি-ঠাট্টায় তুলে এনেছেন সুবোধ বালকের সাহসীপনা। এভাবে প্রতিটা গল্প শেষ হয়েও যেন শেষ হয়ে উঠে না। ছোট থেকে বড় না ছোট যারাই এ গল্পগুলো পড়বে সবার চোখে নিশ্চিত পানি চলে আসবে।

লেখক: শিক্ষার্থী, কক্সবাজার সরকারি কলেজ

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!