মায়ের হাত ধরে সৈকতে হাঁটছে জয়িতা। কখনো বাবার হাত ধরছে। সমুদ্রের ঢেউয়ের খেলা আর শাঁ-শাঁ শব্দে খুব মজা পাচ্ছে। হাঁটতে হাঁটতে বারবার লাফিয়ে উঠছে। একসময় সৈকতের ছাতার নিচে ওরা বসলো। একটু পরই সূর্য ডুবে যাবে সমুদ্রের জলে।
জয়িতা দেখলো সৈকতের বালুতে কতগুলো লাল পিঁপড়ে একটি মরা কাঁকড়া টেনে নিয়ে যাচ্ছে। জয়িতার মনটা আঁতকে উঠলো।
মা মা এই দেখো কাঁকড়াটা মরে গেছে। মা বিরক্ত হয়ে বললেন, ওই দেখো সূর্য ডুবছে, ওই দিকে তাকাও।
সূর্য ডুবা দেখে ওরা হোটেলে ফিরে এলো। কাল সকালেই বাড়ি ফিরতে হবে। একথা মনে উঠতেই জয়িতার ময়না পাখিটির কথা মনে পড়ে গেলো। ময়না পাখিটি বাবা রথের মেলা থেকে এনেছিলেন। ময়না পাখি জয়িতার নাম ধরে ডাকে। জয়িতা ময়নাকে আদর করে ‘সোনাই’ বলে ডাকে।
রোজ স্কুল থেকে ফিরে জয়িতা সোনাইকে কথা শেখায়। কতো কী বলে! বিছানায় শুয়ে শুয়ে মাকে বলল, মা আমার সোনাই খাচ্ছে তো? ভালো আছে তো?
মা বলেন, জরির মা ওকে দেখবে, এখন ঘুমাও।
মায়ের কথা শুনেও জয়িতার ঘুম আসে না। ওর চোখে ভেসে ওঠে সমুদ্র সৈকতের সেই মরা কাঁকড়াটা, লাল পিঁপড়ে কিভাবে টেনে নিচ্ছে।
বেড়াতে আসার সময় জয়িতা সোনাইকে বলে এসেছিল ওর জন্য চাপা কলা নিয়ে আসবে। জয়িতার হঠাৎ মনে পড়ে যায় বাবা হ্যান্ডব্যাগে চাপাকলা রেখেছেন, ওগুলো আছে কিনা। জয়িতা বিছানা ছেড়ে উঠতে চাইলে মা চেঁচিয়ে ওঠেন। এখন ঘুমাও। কাল তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।
মায়ের কথায় সে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।
বাড়ি ফিরেই জয়িতা দৌড়ে ব্যালকনিতে আসে। সোনাইর খাঁচাটা ব্যালকনির কোণায় পড়ে আছে। সোনাই খাঁচার এক কোণায় শুয়ে আছে। ওর শক্ত শরীরটা বেয়ে একদল পিঁপড়ে লাইন ধরে হাঁটছে।
জয়িতা থ হয়ে বসে পড়ে। চিৎকার করে মাকে ডাকে। মা সোনাই মরে গেছে...। সোনাই মরে গেছে...। জয়িতা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে আর বলে, আমি আর কোনো সোনাইকে খাঁচায় রাখবো না, খাঁচায় রাখবো না।
জয়িতার চোখ বেয়ে অঝোরে টপটপ করে জল পড়ে। মা জয়িতার পাশে এসে দাঁড়ায়।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |