অনলাইন গেমে সচেতনতা ও বুদ্ধি বিকাশের সুযোগ

প্রযুক্তির প্রভাব বাড়ছে, শিশু-কিশোরদের হাতে হাতে এখন স্মার্ট ফোন। বুদ্ধি বিকাশের সুযোগ ব্যবহারের পাশাপাশি অনলাইন গেমে সচেতনতাও জরুরি হয়ে পড়েছে।

ইপন শামসুলবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2020, 06:27 AM
Updated : 4 Dec 2020, 06:27 AM

ডিভাইসে আসক্ত হয়ে পড়া যেমন শিশু-কিশোরদের পড়াশোনায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে, তেমনি এর নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে গড়তে পারে বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ। অবসর কাটানো ও সৃজনশীলতা বাড়াতে এটা সহায়ক হতে পারে। অনলাইন গেমে কিশোরদের ঝোঁকে বিশ্বব্যাপী গেমের বাজার বাড়ছে ও তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের চিন্তা-ভাবনাও তৈরি হচ্ছে।

এক্ষেত্রে অভিভাবকদের উচিত সন্তানের ঠিকমতো খোঁজ রাখা। প্রয়োজন সচেতনতা বাড়ানো। আপনার সন্তান কোন ধরনের কনটেন্ট বাছাই করছে, কেমন অ্যাপ ডাউনলোড করছে সেগুলো খেয়াল রাখতে হবে। একা একা খেলতে গিয়ে কোনো অ্যাপ ইন্সটল করতে গিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে কিনা, টাকা খরচ হচ্ছে কিনা দেখতে হবে। অ্যাপ ডাউনলোড ও ব্যবহার সম্পর্কে অভিভাবকদের উচিত সন্তানকে ধারণা দেওয়া।

সারা বিশ্বেই স্মার্ট ডিভাইসের ব্যবহার বেড়েছে, পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। সেইসঙ্গে বেড়েছে এসব ডিভাইসভিত্তিক গেমের বাজার। দৈনন্দিন ব্যস্ততা, খেলার মাঠের অপর্যাপ্ততা, অনলাইন ও স্ক্রিন নির্ভরতা এসব গেমসকে দিন দিন আরও জনপ্রিয় করে তুলছে কিশোর-তরুণদের কাছে।

এক প্রতিবেদনে বলা হয় ২০১৮ সালে সারাবিশ্বে গেমিং মার্কেট ছিল ১৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। জনপ্রিয় এবং দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া এ বাজারের কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশের তরুণ ডেভেলপাররাও এখন আন্তর্জাতিক মানের গেম তৈরি করছেন। 

এ প্রসঙ্গে ‘উল্কা গেমস লিমিটেড’ এর প্রধান কার্যনির্বাহী জামিলুর রশিদ বলেন, “গ্লোবাল পপুলেশনের হিসেবে আমরা ৭% হলেও বর্তমানে আমাদের মার্কেট সাইজ তুলনামূলক ছোট। পপুলেশনের হিসেবে মার্কেট ৭ বিলিয়ন ডলার হবার কথা, কিন্তু বর্তমানে এটি ৫০-৬০ মিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের মতো যদি আমরা গ্রো করতে পারি তাহলে আগামী ৫-৬ বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের লোকাল মার্কেট তৈরি হবে।”

তিনি আরও জানান, ঐতিহ্যবাহী ও হারিয়ে যাওয়া খেলাগুলোকে অনলাইনে ফিরিয়ে আনতে তারা কাজ করছেন। এতে করে একদিকে যেমন হারিয়ে যেতে বসা খেলাগুলোকে এ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা যাবে, অন্যদিকে গেম ডেভলপমেন্ট সেক্টরে এদেশের মেধাবী তরুণদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কোম্পানিতে বর্তমানে ৪৫ জনের একটি টিম কাজ করছে, যেটিকে শিঘ্রই ১০০ জনে উন্নিত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

‘উল্কা গেমস’ ও ‘মুনফ্রগ ল্যাবস’ এর তৈরি ‘লুডু-ক্লাব’ গেমসটি এরই মধ্যে উপমহাদেশে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, স্বীকৃতি পেয়েছে ফেইসবুক প্ল্যাটফর্মে লুডুক্লাব এক নাম্বার গেম হিসেবে। দেশে তৈরি রিলিজ হওয়া গেমসগুলো গুগল ও অনলাইন স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে।

এ গেমস মার্কেটের বিষয়ে ‘ব্যাটারি লো ইন্টারেক্টিভ লিমিটেড’ এর প্রধান কার্যনির্বাহী মিনহাজ ফাহমি বলেন, “আমরা যখন শুরু করি তখন খুব একটা সাড়া পাওয়া যায়নি, সো স্ট্রাগেল করে বেশ সময় লেগেছে মার্কেটটিকে রেডি করতে। গত দুবছরে মার্কেট ভালো অবস্থায় আছে, এখন তেমন একটা মার্কেটিংও করতে হচ্ছে না। যারা গেম নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী, যাদের ট্যালেন্ট আছে আমাদের উচিত তাদেরকে গাইড করা আর একজোট হয়ে কাজ করে এগিয়ে যাওয়া।”

এ বাজারটি শুধু গেমস কেনা-বেচার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এ খাত মেধাবী তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করছে। সুস্পষ্ট নীতি নির্দেশনা, বিনিয়োগ, পৃষ্ঠপোষকতা, বিশেষ করে পেমেন্ট গ্রহণের সহজ মাধ্যমই পারে এ সেক্টরটিকে বড় করে তুলতে, সুযোগ করে দিতে পারে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার।

এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “বাংলাদেশে এ সেক্টরটিকে বড় করে তোলার জন্য আসলেই তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।”

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!