শুটিং শেষ করার পর সবাই ঘুমোতে গেছে। হঠাৎ শুনি কতগুলো কণ্ঠ চিৎকার করে ডাকছে- সিয়াম ভাইয়া, সিয়াম ভাইয়া! তাদের চিৎকার করে ডাকা শুনে সবার ঘুম ভেঙ্গে গেছে। তখন সকাল দশটা বাজে। আম্মু ভেবেছে নিশ্চয়ই নৌ-ডাকাত এসেছে। সারারাত জাগার পর সবাই আধোঘুমে হুড়মুড় করে উঠে পড়েছে।
দরজা খুলে আম্মু বাইরে গেলো আর আমি আম্মুর পিছু পিছু। দেখি ১৪/১৫ জন ছেলে খালি গায়ে ভেজা শরীরে চিৎকার করে সিয়াম ভাইয়াকে ডাকছে। রাতে কখনও লঞ্চ চালানো হতো না। নিরাপদ কোনো এক জায়গায় থামিয়ে রাখা হতো। তবে সেটা নদীর পার হতে বেশ খানিকটা দূরে নদীর ভিতরের দিকে। পাশেই একটি গ্রাম থেকে ছেলেগুলো নদী সাঁতরে এসেছিল শুধু একনজর সিয়াম ভাইয়াকে দেখবে বলে।
আমি অবাক হয়ে ভাবছি ওরা কীভাবে জানলো এ লঞ্চে শুটিং হচ্ছে এবং এখানে সিয়াম ভাইয়াও আছে! যাই হোক, তুরান আংকেল, পরিচালক জুয়েল আংকেলসহ জাহাজের লোকজন তাদের বোঝানোর চেষ্টা করল যে, সারারাত শুটিং করে সিয়াম ভাইয়া মাত্রই ঘুমাতে গেছে। তারা যেন পরে আসে।
অভিনেতা সিয়ামের সঙ্গে শিশুশিল্পীরা ও নদী সাঁতরানো ছেলেরা
জাহাজে আমাদের সবাই প্রস্তুত যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। তবে যেই কথা সেই কাজ। সিয়াম ভাইয়া সামনে আসার পরপরই ছেলেগুলো একসঙ্গে নদীতে লাফ দিয়ে তীরের দিকে সাঁতরাতে থাকলো। একটি ছেলের লাফ দিতে একটু দেরি হলো। এবার সিয়াম ভাইয়ার পালা। সিয়াম ভাইয়া অবশিষ্ট ভেজা শরীরের ছেলেটিকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। তারপর সেই ছেলেটিও কথামতো এক ঝাপ দিল নদীতে আর সাঁতরে চলে গেলো তার গন্তব্যের দিকে।
দৃশ্যটি ছিল দেখার মতো! এ যেন সিনেমার ভিতর আর এক সিনেমা। দৃশ্যটি যেন সবার ক্লান্তি ভুলিয়ে দিল। আসলেই সিয়াম ভাইয়া এমনই একজন মানুষ যিনি তার ভক্তদের ভালোবাসা পাওয়ার সত্যিই যোগ্য। তার কাজ এবং মানুষের প্রতি তার মনোযোগ তাকে মানুষের ভালোবাসা এবং কাজের মর্যাদা পাওয়ার এতোটাই যোগ্য বানিয়েছে।
এ ঘটনাটি আমি কখনও ভুলতে পারবো না। সিয়াম ভাইয়া আমাদের ছোটদের এবং বড়দের উভয়ের বন্ধু হয়ে যান। এটা তার অনেক বড় একটা গুণ। অবসরের বেশিরভাগ সময় কাটাতেন আমাদের ছোটদের খেলার সঙ্গী হয়ে। সিয়াম ভাইয়া, আমরা সবাই তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি। তুমি আরও অনেক বড় হও তোমার কাজে ও গুণে। শুভ কামনা। ভালো থেকো সবসময়।
লেখক পরিচিতি: বয়স ৯, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী, মনিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। পড়াশোনার পাশাপাশি অভিনয় ও নাচ শিখেন।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |