দেখতে আমরা দুজন একই রকম। একজনকে দেখলেই মনে হয় অন্যজন। সেই ছোটবেলা থেকেই আমাদের নিয়ে কত্ত যে মজার ঘটনা ঘটেছে তা বলে শেষ হবে না। দেখা গেলো একজনের ক্ষুধা লেগেছে আম্মু অন্যজনকে খাইয়ে দিচ্ছে। একজনের অসুখ করেছে তো অন্যজনকে ইনজেকশন দিয়ে দিচ্ছে! ক্লাসে একজন পড়া পারেনি তো অন্যজন বকা খেয়েছে এমনও হয়েছে।
সেই সব মজার গল্প না হয় অন্য একদিন তোমাদের শোনাবো। আমরা দুই ভাই পড়াশোনা করছি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে। বাবা-মাকে ঘিরে আমাদের সুন্দর সাজানো গোছানো পরিবার। পড়াশোনার বাইরে আমাদের সব থেকে বেশি ভালো লাগে ছবি আঁকতে। ছবি আঁকার পাশাপাশি আমরা দুজন মিলে আবৃত্তি করি, অভিনয়ও করি। কিছুদিন আগেই মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের গল্প অবলম্বনে রায়হান জুয়েল পরিচালিত ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ চলচ্চিত্রে আমরা দুই ভাই অভিনয় করেছি।
সেই সঙ্গে ছিলো অভিনেতা সিয়াম। শিশুতোষ সিনেমা বলে কথা, তাই সবার মধ্যে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে। হঠাৎ একদিন ফোন এলো। জানতে পারলাম পৃথিবীতে হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস নামে এক ঘাতক। সেই ভাইরাস বাংলাদেশেও হাজির হয়েছে এবং ছোবল দিয়েছে বিষাক্ত সাপের মতো। চারদিক থেকে সবার কাছে ফোন আসছে তোমরা দ্রুত ফিরে আসো। আমাদের পরিচালক রায়হান জুয়েল এবং অন্যান্যদের দ্রুত সিদ্ধান্তে ফিরে এলাম। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী আমাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। মানে বাইরে থেকে এসেছি তাই আগামী ১৪ দিন কোত্থাও যাওয়া যাবে না।
কিন্তু আমাদের কোয়ারেন্টাইন আর শেষ হলো না। ১৪ দিন কাটানোর পর আরও কত ১৪ দিন পেরিয়ে গেলো পৃথিবীর অসুখ ভালো হলো না। এর মাঝে আমাদের জন্মদিন চলে আসলো। এবারের মতো জন্মদিন আগে কোনদিন পালন করিনি। জন্মদিন মানে বন্ধুরা আসবে, কেক কাটবো, বেলুন ফোটাবো, বন্ধুদের মুখে ক্রিম মেখে দিবো কত্ত আনন্দ। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে তা হলো না। ঘরেই নিরানন্দের জন্মদিন পালন করলাম। এক ভাই অন্য ভাইয়ের মুখে কেকের ক্রিম মেখে দিলাম, কেক খাইয়ে দিলাম আর রাত বারটায় মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললাম, ‘হ্যাপি বার্থ ডে!’
গৃহবন্দি থেকে আমরা প্রায় ৫০টা ছবি এঁকেছি। আমাদের খুব ইচ্ছে করোনাভাইরাস চলে গেলে আমাদের আঁকা ছবিগুলো নিয়ে একটা এক্সবিশন করবো। তোমরা কিন্তু অবশ্যই সেই এক্সিবিশনে আসবে। আর আমাদের খুব স্বপ্ন সেই এক্সিবিশন থেকে আমাদের যে ছবিগুলো বিক্রি হবে তার অর্থ থেকে আমরা অসহায় মানুষদের সাহায্য করবো।
স্কুল বন্ধ তাই আমাদেরও মন খারাপ হয়, কিন্তু পৃথিবীরই যেখানে মন খারাপ সেখানেতো কিছু করার নেই। তাই রং-তুলি আর পেন্সিল নিয়ে পৃথিবীর বর্তমান অবস্থা আর আগের অবস্থা আঁকতে চেষ্টা করি। আমরা চাই পৃথিবীটা নিরাপদ হয়ে উঠুক।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |