পিয়াস মজিদের রহস্য গল্পের বই ‘অধরার অভিযান’

বই: অধরার অভিযান, প্রচ্ছদ: হিমেল হক,  প্রতিকৃতি অঙ্কন: সাখাওয়াত তমাল, ভেতরের অলঙ্করণ: নিশা মাহজাবিন, প্রকাশক: শিশুসাহিত্য কেন্দ্র, প্রকাশকাল: ২০১৯,  মূল্য: ১৫০ টাকা, ‘The Adventure of Adhora’ নামে গল্পটির ইংরেজি রূপান্তর করেছেন রিফাত কামাল সাইফ

কিডস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2020, 08:27 AM
Updated : 25 April 2020, 08:44 AM

কুমিল্লা জজ কোর্ট রোডের পুরনো একটি বাড়ি, নাম ‘ডেলনি হাউজ’। পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে এটি পরিচিত। বাড়িটি ঘিরে প্রচলিত রয়েছে সাধারণ মানুষের নানা রহস্যময় কথা। প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ হওয়াতে সবাই বেশ কৌতূহলী এ বাড়ি সম্পর্কে।

তবে অনেকের কাছেই অজানা এর ইতিহাস। ওল্ড ডেলনি নামে ফ্রান্স থেকে আসা এক জাহাজ ব্যবসায়ী ১৮৬২ সালে এ বাড়িটি নির্মাণ করেন বলে জানা যায়। পরবর্তী প্রজন্ম বাড়ির বর্তমান কাঠামো পুনর্নির্মাণ করেন। রহস্যেঘেরা এ বাড়িটি নিয়েই কবি ও কথাসাহিত্যিক পিয়াস মজিদের রহস্য গল্পের বই ‘অধরার অভিযান’। 

লেখকের বর্ণনায় ‘ডেলনি হাউজ’ হলো, ‘কেউ বলে কুমিল্লায় ফরাসিদের কুঠিবাড়ি, কেউ বলে অনাথ শিশুদের আশ্রম আবার বেশির ভাগ লোকে বলে এটা একটা ভুতুড়ে জঙ্গলবাড়ি।’

গল্পটা নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী অধরাকে নিয়ে। তার বাসা ডেলনি হাউসের উল্টো দিকে। রাস্তার ওপাশে ডেলনি হাউসে শত শত গাছপালার ছায়া যেন তাদের বাসাতেও এসে পড়ে। অধরা প্রতিদিন স্কুলে যেতে যেতে ডেলনি হাউজকে দেখে আর সেখানে যেতে মায়ের কাছে বায়না ধরে। কিন্তু অধরাকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার কেউ নেই।

অধরার বাবা ইরফান সাহেব একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি ডেলনি হাউজের গল্প করেন এভাবে, ‘...বুনো গাছপালা, পাখির ডাক, বিশাল মাঠ, পায়ে চলা পথ, ঘোড়ার আস্তাবল, গাড়ি ধোয়ার র্যাম্প, পুরনো ঘর, মৃত জীবজন্তুর শিং-এ ভরা বাড়িটা...। একটা ঐতিহাসিক বাড়ি। এখানে এক সময় কত বিদেশির আনাগোনা ছিল। কত ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল। ঘোড়া ছুটে বেড়াত, খেলাধুলা হত, গানের সুর ভেসে আসত। বিদেশিদের সাথে এক সময় এখানকার দেশি লোকজনেরও সম্পর্ক হল। এ বাড়ির ছেলে-মেয়েদের অনেকেই ইংল্যান্ড-আমেরিকায় থাকে।’

অধরার ‘মনে আসে ডেলনি হাউসের বড় গেটটার কথা। যার ছিদ্র দিয়ে দেখা যায় পাতা ছাওয়া শেওলায় ভরা পথ চলে গেছে যেন গভীর ভেতরে কোনো অজানা জঙ্গলের দিকে। প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার সময় রিক্সা থেকে উঁকি দিয়ে দেখে আর ভাবে তার অপেক্ষার পালা শেষ হবে কবে!’

অবশেষে বিহাস চাচ্চুকে নিয়ে অধরা ঢুকতে পারে ডেলনি হাউজে। সেখানে সে দেখা পায় ছোট্ট দুরন্ত ছেলে জাস্টিন ও টমি আঙ্কেলের। লেখকের বর্ণনায়, ‘...বাসায় ঢুকে অধরার চক্ষু ছানাবড়া। কত কত খেলনা, পুরনো হারমনিয়াম, গিটার, ঝাড়বাতি, আর বহু ছবি ঝোলানো বাড়ির পুরনো নোনা ধরা দেয়ালে। অধরা একটা ছবির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে যায় তো আর একটা ছবি তাকে ডাকে। প্রতিটি ছবিতে অচেনা শিশুকিশোরের মায়াবী চেহারা ভাসছে।’ অধরার কৌতুহল দেখে টমি আঙ্কেল বলতে লাগলেন, ‘এরা এ বাড়িরই বংশধর। কিন্তু কেউ এখানে থাকেনা এখন। আমেরিকা-ইংল্যান্ডে থাকে। মাঝেমধ্যে অবশ্য জাস্টিনকে দেখতে আসে।’

কিন্তু ঐতিহাসিক এ বাড়িটার দিকেই চোখ যায় ভূমিদস্যুদের। তারা বাড়িটা দখল করে বহুতল ভবন বানাতে চায়। তাদের কাছে ইতিহাস, পুরনো দালান, পাখি, উদ্যান এসব অপ্রয়োজনীয়। অধরা কি পারবে ডেলনি হাউজকে রক্ষা করতে? এমন নানা রহস্য ও ইতিহাসের সন্ধানে এগিয়ে গেছে গল্প, তাইতো এর নাম ‘অধরার অভিযান’। 

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা  kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!