চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু
ভাষার জন্য শহীদ
সব বাঙালির প্রাণ
বাংলা ভাষায় মাকে ডাকি
রং তুলিতে ছবি আঁকি
মনের ভেতর ভালোবাসার
মিষ্টি ফুলের ঘ্রাণ।
কবি লেখে গান কবিতা ছড়া
আকাশ জুড়ে লক্ষ তারার
দু’চোখ আলোয় ভরা।
বর্ণমালার আগুন ছড়ায়
কৃষ্ণচূড়ার ডালে
মিছিল চলে এই জনতার
বাহান্নর ওই সালে।
বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা
বীর বাঙালির মনের আশা
প্রতিবাদে রাজপথে সব
মশাল হাতে কারা।
রক্ত দিলো দামাল ছেলে
হাসি মুখে কেউ বা জেলে
আজও অমর আনতে ভাষা
রক্ত দিলো যারা।
শহীদ মিনার
শহীদ মিনার শহীদ মিনার
বাহান্নর স্মৃতি
রফিক শফিক শহীদ ভাইয়ের
ভালোবাসার প্রীতি।
শহীদ মিনার শহীদ মিনার
বাংলা ভাষার দাবি
ইতিহাসের ভাবলে কথা
সুখটা খুঁজে পাবি।
শহীদ মিনার শহীদ মিনার
বর্ণমালার সারি
প্রভাতফেরী আমরা করি
দুঃখ স্মৃতি তারই।
শহীদ মিনার শহীদ মিনার
আমরা পেলাম ভাষা
বুকের মাঝে স্বপ্নে ঘেরা
গভীর ভালোবাসা।
রফিক আহমদ খান
মায়ের ভাষা
এই পৃথিবীর দেশে দেশে
বহু ভাষা আছে
নিজের ভাষায় মায়ের ভাষায়
পাখিরাও নাচে।
সবার আছে গর্ব করার
মায়ের মুখের ভাষা
সে ভাষাতেই মনের মাঝে
সুখ স্বপ্ন আশা।
মায়ের ভাষা কেড়ে নেয়ার
নেই অধিকার কারো
মায়ের ভাষাই সেরা ভাষা
বাংলা কিংবা গারো।
বাংলা ভাষার মান রাখিতে
প্রাণ দিয়েছেন যাঁরা
বিশ্বজুড়ে সবার কাছে
সম্মানিত তাঁরা।
মধুর মায়ের ভাষা
মায়ের মুখে শেখা বুলি
মিষ্টি-মধুর সেরা
নানা রকম ভাষা শিখে
মায়ের ভাষায় ফেরা
ইংরেজি মালয় হিন্দি আরব
কত ভাষা শিখি
হরেক ভাষায় দক্ষ হয়ে
পড়ি এবং লিখি
তারপরও সেরা বুঝি
আমার বাংলা ভাষা
যে ভাষাতে কথা বলে
জুড়ায় মনের আশা।
শাহ্জাহান সিরাজ
একুশের গল্প
একুশের গল্প হৃদয় কাঁদায়
প্রাণ দিয়েছে আমার ভাই
বরকত রফিক সালাম জব্বার
তাঁদের কথা ভুলি নাই।
তাঁদের রক্তে বর্ণমালা
বাংলা ভাষা পেলাম
ভাষাশহীদ ভাইদের প্রতি
জানাই শ্রদ্ধা সেলাম।
একুশের গল্পে মিটিং মিছিলে
বুকে বিঁধেছে গুলি
ব্যর্থ হয়েছে পাকি শত্রুরা
পেয়েছি মায়ের বুলি।
একুশের গল্পে আজও বাংলার
আকাশ বাতাস ভারি
একুশের গল্প শোনাতে আসে
একুশে ফেব্রুয়ারি।
আবির রহমান বিপ্লব
রাষ্ট্রভাষা
বাহান্নর কথা মনে হলে
চোখ ভরে যায় অশ্রু জলে।
পাক বাহিনী মনের আশা
উর্দু করবে রাষ্ট্রভাষা
কেড়ে নেবে মায়ের ভাষা
ছিল তাদের মনের আশা
নস্যাৎ হলো সেই প্রত্যাশা
খোদা ছিল বাঙালির ভরসা।
কৃষক শ্রমিক লাখো জনতা
বাজি রেখে নিজের জীবনটা
মিছিল করলো সারা শহরটা।
হঠাৎ
পাক সেনারা গুলি করে
মিছিলেতে মানুষ মারে
তবুও বাঙালি হার নাহি মানে
ক্ষিপ্ত বাঙালি রক্ত নেশা
সাঙ্গ করল তাদের দশা
হয়নি পূরণ তাদের আশা
বাংলা হলো রাষ্ট্রভাষা।
রেহমান আনিস
প্রভাতফেরি
একুশের প্রথম প্রহর, শিশির ভেজা
ঘাস রাজপথে ভেসে উঠে শহীদের রক্তাক্ত মূর্তি।
আমি পাদুকাহীন হেঁটে চলি
রাজপথ বেয়ে থরথর করে কেঁপে ওঠে পদযুগল।
প্রশ্নবাণে জর্জরিত বিবেক আমার বাঁধে দু’পায়ে শিকল
শহীদের রক্তস্নাত এই পবিত্র ভূমিতে আমি কিভাবে পা ফেলি!
ক্ষতবিক্ষত আর রক্তাক্ত হৃদয়ে এগিয়ে যাই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মতো
পেছনের ইতিহাস ডাণ্ডাবেড়ির মতো টেনে ধরে পা
হঠাৎ বাসন্তি রঙের একটি প্রজাপতি
ডানা ঝাপটিয়ে আমাকে আহ্বান জানায়
প্রভাতফেরীতে যাবে না!
আদিল হোসাইন
আমার জন্মভূমি
এই দেশ আমার জম্মভূমি
এই দেশ আমার মাতৃভূমি
এই দেশ আমার প্রাণ
রক্ত দিয়ে রাখবো তবুও
এই দেশের সম্মান
বিলিয়ে দিবো নাকো কভু
ভিনদেশিদের হাতে
সবাই মিলে উঠবো জেগে
পালায় ওরা যাতে।
আবু আফজাল সালেহ
অ আ ক খ
ভেসে ওঠে কৃষ্ণচূড়া
রঙ ভরেছে পলাশ বন
শিমুল-জবার রঙিন বনে
নেচে ওঠে আমার মন।
রঙিন রূপের দিকে দিকে
ঝরাপাতা ওড়ে ওই
পাতার উপর লেখা আছে
অ আ ক খ এ ঐ।
বাংলাদেশের ছবি
পলাশ বনে রক্ত আভায়
কোকিল গলায় হার
ভাষা আমার বেঁচে থাকার
মুক্ত অধিকার।
কৃষ্ণচূড়ার রঙিন দলে
জ্বলে ওঠে রবি
শালিক দোয়েল সবুজ টিয়ায়
বাংলাদেশেরই ছবি।
অজিত রায় ভজন
প্রাণের মেলা
মিললো সবে ওইরে দেখো
প্রাণের মেলায়
আজ ভেসেছে নীল আকাশে
মেঘের ভেলায়।
কলম কালি উঠলো জেগে
সবার মনে
বাংলা মাঝে ভাষার মাসে
মধুর ক্ষণে।
আয়রে সবে এই মিছিলে
মুক্ত বায়ে
দেবোই পাড়ি আমরা সবে
সোনার না’য়ে।
আয়রে সবে মায়ের ছেলে
আর যে মেয়ে
প্রাণের মেলায় মিলবো সবে
গান যে গেয়ে।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |