প্যারেন্টিং নিয়ে বই ‘মা-বেলার ডায়েরি’

বই: মা-বেলার ডায়েরি, লেখক: আনন্দময়ী মজুমদার, প্রকাশক: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর পাবলিশিং লিমিটেড (বিপিএল), স্টল: ৫৮৮-৫৮৯, প্রচ্ছদের চিত্রকর্ম ও অলঙ্করণ: শামিউর রহমান নয়ন, প্রচ্ছদ ও শিল্প নির্দেশনা: মোতাসিম বিল্লাহ্ পিন্টু, মূল্য: ৪৬০ টাকা

কিডস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Feb 2020, 06:02 AM
Updated : 12 Feb 2020, 06:02 AM

এক পাখির ছানা ডিম ফুটে বেরিয়ে তার মা-কে খুঁজছে। ডিম ফুটতে দেখে মা গেছে খাবার আনতে, তাই ছোট পাখি মাটিতে পড়ে গেছে, আর হেঁটে হেঁটে চলেছে, যাকে দেখছে তাকেই প্রশ্ন করছে, তুমি কি আমার মা?

কিন্তু কেউ তার মা নয়। একসময় অলৌকিক উপায়ে সে বাসায় ফিরে এসেছে, এসেছে তার মা-ও, আর মাকে দেখে তার চিনতে ভুল হচ্ছে না, অমনি সে বলে উঠলো, তুমিই তো আমার মা!

শিশুদের দেখলে একমাথা নরম পালকের মতো ধোঁয়া ধোঁয়া চুল, প্রাকৃতিক গন্ধ আর চোখের চাহনি লক্ষ করলে, কচি গলা শুনলে কার না পাখির কথা মনে হয়? এমন সব দুর্দান্ত ছোট্ট ছোট্ট কাহিনী নিয়ে এবারের বইমেলায় আনন্দময়ী মজুমদারের বই ‘মা-বেলার ডায়েরি’।

২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত লেখা এ ডায়েরিতে রয়েছে একটি শিশুর সঙ্গে তার মায়ের কথপকথন, মজার ঘটনা, অনুভূতি ও শিক্ষা। 

‘বই ভালোবাসতে চেয়েছিলাম’ গল্পে আছে- ‘অন্তর্মুখী লেখা ছাড়া নাকি সত্য মেলে না। পড়েছিলাম সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের লেখায়। সেই সব অন্তর্মুখী গহন লেখার সমাহার বইয়েই আছে। বইয়ের কাছে এসে পাতায় হাত রেখে আর অক্ষরের সঙ্গে বসবাস করতে করতে নাকি আমরা সত্তাকে আবিষ্কার করি। সে সত্তা দেশ কাল জাতিসত্তার সত্তা নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু।’

তেমনই আরেকটি গল্প হলো ‘তেলাপোকা খেলে’। সেটা এমন- ‘তেলাপোকা খেলে চীনা ভাষা শেখা যায়, আর পিঁপড়ে খেলে বাংলা ভাষা শেখা যায়। আমি অনেক অনেক অনেক অনেক অনেক আগে পিঁপড়ে খেয়েছিলাম মনে হয়, তাই বাংলা ভাষা শিখে গেছি। আর তেলাপোকা খাইনি তো, তাই চীনে আমি চীনা বই পড়তে পারতাম না।’

কে বলেছে?

দিদা।

আমার ভুরু কপালে উঠতে দেখে শিশু যোগ করে, ‘আমার মনে হচ্ছে, ভুল বলেছে নাকি ঠিক বলেছে সেটা আমি জানি না।’

বইটির ভূমিকার লেখক লিখেছেন, মা বেলার ডায়েরি শুধু ব্যক্তিগত দিনলিপি নয়। এখানে এক জোড়া শিশুর চোখ আছে। এক মায়ের লেখায়, শৈশবকে সীমাহীন কৌতূহল আর কৌতুক দিয়ে অনুভব করার কথা আছে। এই বিশ্বাস আছে যে, সব প্রশ্নের নিজস্ব উত্তর পাওয়া যায়। হয়তো ঘুরেফিরে এই ডায়েরি একজন মায়ের চলার পথ।

যে শিশুর কথা আমরা রোজ ভাবি, বকুল, তমাল, শাল, শিরীষ যাই হোক তাদের নাম, সবাই আলাদা। সবার গল্পই বলার মতো। আমি শুধু আমারটা বললাম। যে প্রশ্ন আমাদের সবার মধ্যে জেগে থাকে তা হল, শিশুদের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী কি আমরা রেখে যেতে পারবো? কিভাবে রেখে যাব? এইখান থেকে আমাদের এক একটা নতুন অধ্যায় শুরু হলো। শিশুদের যারা ভালোবাসে, প্যারেন্টিং নিয়ে ভাবে, তাদের ভালো লাগলে এই বই সার্থক।

‘মা-বেলার ডায়েরি’ বইয়ের গল্পগুলো হলো- মিস্টার হেল্পফুল, কাগজের নৌকা, চা, বড় করলে কেন?, ফুলের মা, পোকা, গাছ আমাদের কী দেয়, বকুল ফুল, পাখি, চোখের আড়ালে, পৃথিবী কি মরে যাবে? বন্দি শৈশব, শিশুরা খেলে, তেলাপোকা খেলে, রাতের মতো, ছোট্ট অভিভাবক, হাতির মতো স্মৃতি, একুশে ফেব্রুয়ারি, সবকিছু শিখতে চাই, আমি যখন বড় হব, দুটো প্রশ্ন, বই ভালোবাসতে চেয়েছিলাম, পাখি পাপা পেঁপে খায়, একগুচ্ছ কদম, স্কাল্পচার ইজ এন আর্ট, লাইফে ফিরে আসার দরজা, আস্থাভাজন হাত, মিস ননসেন্সের মতো, লুডো খেলা, ডিম পাড়া, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, কলি থেকে ফুল, হীরা পান্না, দিয়েছিল সকল আকাশ, ভাতে-ডালে বাঙাল, বালতি, বাঘের ছানা, আরশিনগর, বাতাস হয়ে যায়, বসন্ত উৎসব, লক্ষ্মী পাখি, মাইন্ড রিডার, ব্রিদ ইন ব্রিদ আউট, ক্লাসে প্রথম হওয়া, আহ্লাদ, বেস্ট ফ্রেন্ড, গানের খাতা, হিংসুটে, নিবেন ছাই, জুরাসিক ওয়ার্ল্ড, ভেলকিভাজি, আমি একটা গাছ, শিশুরা সাহসী জাত, মাস্তান, টাই, বয়স, স্ক্রিনটাইম, ব্যায়াম করা দরকার, হাসির বেলুন, রোজ বারোটা হাগ, কিউট, ভয়, সান্ত্বনা, অডিশন, সবুজ বাতাসে শিক্ষা ফোটে, সাহস করে সত্যজিৎ রায়, শ্রুতিনাটকে ফেলুদা, গন্ধ, এখন গ্রীষ্ম, বুস্টিং, মাইন্ড রিডিং, ড্রোন, আমরা কি অদৃশ্য? বিপন্নতা, আমরা কি অদৃশ্য, বাবু আসছে, গণিত অলিম্পিয়াড, ফ্রাইডে হিউমার, গোছগাছ ও অনুরোধে ঢেঁকি।

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!