বিজ্ঞানসাধক দুই বন্ধুকে নিয়ে আলী নাঈমের বই

বই: বিজ্ঞানসাধক দুই বন্ধু, লেখক: আলী নাঈম, প্রকাশক: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর পাবলিশিং লিমিটেড (বিপিএল), স্টল: ৫৮৮-৫৮৯, প্রতিকৃতি: আব্দুল হালিম চঞ্চল, প্রচ্ছদ ও শিল্প নির্দেশনা: মোতাসিম বিল্লাহ্ পিন্টু, মূল্য: ৪৭০ টাকা

কিডস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2020, 05:24 AM
Updated : 10 Feb 2020, 05:24 AM

ব্রিটিশ শাসিত পরাধীন ভারতীয় উপমহাদেশে যে আধুনিক বিজ্ঞানচর্চা শুরু হয়েছিল, তার কেন্দ্র ছিল ঐতিহাসিকভাবে বাংলা। বৃহত্তর বাংলার তখনকার কেন্দ্র কলকাতায় জন্ম নেওয়া সত্যেন্দ্রনাথ বসু (১৮৯৪-১৯৭৪) এবং কেন্দ্র থেকে অনেক দূরে ঢাকার এক পাড়াগাঁয়ে জন্ম নেওয়া মেঘনাদ সাহা (১৮৯৩-১৯৫৬) কলেজ জীবনে হন সহপাঠী, সেখান থেকে বন্ধুত্ব। তাদের জীবন ও কর্ম নিয়ে কিশোর বয়সীদের উপযোগী করে লেখা গবেষক ও সংগঠক আলী নাঈমের বই ‘বিজ্ঞানসাধক দুই বন্ধু’।

মেঘনাদ সাহাকে নিয়ে ‘জগৎ সভায় বাংলার মুখ’ ও সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে নিয়ে ‘মনীষার পৌরাণিক চরিত্র’ এই দুটি ভাগে বইটি সাজিয়েছেন লেখক। বইটিতে আছে অনেক দুর্লভ আলোকচিত্র ও লেখার শেষে তথ্যসূত্র। 

বলা হয়েছে- দুই বন্ধুর জীবন যেন দুই উৎস থেকে আসা দুই নদীর মতো, একসঙ্গে মিলিত হয়ে আবার আলাদা হয়েছেন, আর সবশেষে এক মোহনায় গিয়ে মিশেছেন। একদিকে বিজ্ঞান, অন্যদিকে মানবপ্রেম ও দেশপ্রেম- এই দুইয়ের টানেই এই দুই বন্ধু, দুই বাঙালি একসূত্রে বাঁধা পড়ে ইতিহাসে অমরত্ব পেয়ে গেছেন। এই বইটি দুই বন্ধু, দুই মহান বিজ্ঞান সাধককে নিয়ে।

“আমরা হয়তো পৃথিবীর অবস্থা এমন খারাপ করে ফেলেছি যে এখানে আর থাকার সহজ উপায় নেই। সভ্য জাতির কে একজন বলেছিলেন, ‘লক্ষ টাকা খরচ করে আমরা একটা রকেট ছুড়ে দিচ্ছি, সেই টাকা যদি এইভাবে না উড়িয়ে আমাদের দেওয়া হতো, তাহলে হয়তো অল্প আয়াসেই এমন একটা কিছু করা সম্ভব হতো যাতে দেশের লক্ষ লোকের ক্ষুধা দূর হয়।’ সেসব কথা কেইবা কাকে বলবে? এসব কথা বলবার জন্য আপনারা রইলেন, আমি এইখানে চুপ করলাম।”

কথাগুলো সত্যেন্দ্রনাথ বসু বলেছিলেন ১৯৬৪ সালের ১ জানুয়ারি নিজের ৭০তম জন্মবার্ষিকীতে কলকাতার মহাজাতি সদনে অনুষ্ঠিত সম্বর্ধনা সভায় অভিনন্দনের প্রত্যুত্তরে। ওই ভাষণে বন্ধু মেঘনাদ সাহার স্মৃতি বিশেষভাবে স্মরণ করে তিনি বলেছিলেন, “... এর মধ্যে বহু বন্ধু চলে গিয়েছেন। তাঁদের কথা আমাদের দেশের ইতিহাসে লেখা থাকবে। তাঁরা যে শুধু বিজ্ঞানে নাম করেছেন তা নয়, অনেকেই গঠনমূলক কাজে কৃতিত্ব দেখিয়ে গেছেন, সেকথা বাঙালি ভুলতে পারবে না। ড. সাহার কথা এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে। একদিকে তিনি যেমন মহেন্দ্রলাল সরকারের প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান অ্যাসোসিয়েশনের রূপ বদলে দিয়েছেন, অন্যদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত করে দিয়েছেন যে বিষয়ের পড়ানো ও অনুসন্ধান, সেটা এখন তাঁর নামের সঙ্গে জড়িত হয়ে রয়েছে। আজ একভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে, অন্যভাবে ভারতবর্ষে যে নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানের চর্চা চলছে নানা স্থানে, তার অভিযান শুরু হয়েছিল ড. মেঘনাদ সাহার বিশেষ প্ররোচনায়।”

লেখক পরিচিতি: আলী নাঈম কিশোর বয়সেই পাঠাগার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। ক্রমে যুক্ত হন ছাত্র রাজনীতিতে ও পরে বাম আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। একটি বিজ্ঞান সংগঠন গড়ার জন্যও কিছুদিন চেষ্টা করেছেন। বর্তমানে ঢাকার নাখালপাড়ায় শহীদ বুদ্ধিজীবী পাঠাগারের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন এবং শিশু-কিশোরদের নিয়ে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কাজ করছেন। রচনা ও সম্পাদনা করেছেন ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ’ যা ২০১৯ সালের একুশে বইমেলায় প্রকশিত হয়েছে।

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!