বাড়ির অদূরে একটি বেসরকারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে সে। পশু-পাখির জন্য তার অনেক টান। বাড়ির ভেতরে উঠোনে মোরগ-মুরগী ছোটাছুটি করে। বাইরের রাস্তায় বেশকিছু কুকুরের অনাগোনা থাকে সব সময়ই। লাবিবাকে দেখলেই তারা ছুটে আসে।
সম্প্রতি গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মারাত্মক আহত হয় শিরো। প্রথমটায় ভাবা হয়েছিল শিরো বোধহয় আর বাঁচবে না। ব্যথায় রাতদিন সে কি কান্না তার! গলির স্থানীয় লোকজনও শিরোর কান্নায় মন খারাপ করেছে। ওই রাস্তারই ছোট্ট দোকানের টেইলার মাস্টার মিলন দুর্ঘটনার পর পাশের তালতলায় গিয়ে একজন পশুচিকিৎসককে দেখিয়ে ব্যথানাশক ইনজেকশন দিয়ে আনে শিরোর। এতে কিছুক্ষণ ভালো থাকে সে। রাত যত বাড়ে শিরোও তত ব্যথায় কাতর হয়ে পড়ে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে।
সকাল হয়। ঘরে থাকা আইসক্রিমের প্লাস্টিক বাক্সটি সামান্য কেটে লাবিবা শিরোর চিকিসার জন্য চাঁদা সংগ্রহ করতে শুরু করে। দুদিনে ঊনিশশ টাকার মতো জমা হয় ওই বাক্সে। সবচেয়ে বেশি ১ হাজার টাকা দিয়েছেন স্থানীয় জুয়েল। সেই টাকা দিয়েই শুরু হয় শিরোর চিকিৎসা।
দিন কয়েক আগে চিকিৎসার জন্য বিস্কুটের একটি কার্টনে বসিয়ে শিরোকে নিয়ে যাওয়া হয় চানখারপুলে। সেখান থেকে ফিরে আসার পর দেখা গেল শিরো ঘাড় ঘুরিয়ে কিছুটা এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে। বোঝা গেল সে ভালো বোধ করছে। কিন্তু একেবারেই সামনে বা পেছনে যেতে পারছে না। একই স্থানে বসে থাকছে।
খরচের কথা শুনে লাবিবা মোটেও ঘাবড়ে যায়নি। তার বিশ্বাস এবারো খরচটা ঠিকই জোগাড় হয়ে যাবে। হয়েছেও তাই। অবশেষে সাহায্যকারির খোঁজ পাওয়া গেছে। তারাই দায়িত্ব নিয়েছেন শিরোর যাবতীয় চিকিৎসার। পাশের বাড়ির জুবায়ের এটা নিশ্চিত করেছেন। চূড়ান্ত চিকিৎসা শুরুর আগে আপাতত শিরোকে আরো দু-একদিন বর্তমান ডাক্তারের পরামর্শে ইনজেকশন নিতে হবে।
কোনো অপরিচিত যানবাহন দেখলেই বড় কুকুরগুলো দলবদ্ধভাবে তেড়ে যায়। ভয় দেখায়। কারণ জানতে চাইলে লাবিবা বলে, অনেকদিন আগে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে একটি কুকুরছানা মারা যায়। সেই থেকে আমাদের এই রাস্তায় অপরিচিত কোনো গাড়ি, রিক্সা, সাইকেল দেখলে ওরা ঘেউ ঘেউ করে ভয় দেখায়।
লাবিবার বাবা কাজী শফিক মোস্তফা চঞ্চল জানান, খুব ছোট বেলা থেকেই লাবিবা পশু-পাখির কষ্ট সহ্য করতে পারে না। তাদের কষ্ট দেখলে ওর মনও কেঁদে ওঠে। বাসার সামনে রাস্তার কুকুরগুলোকে প্রতিদিনই সে কোনো না কোনো খাবার দেয়, আদর করে।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |