অজিত রায় ভজন
শীতের ফুটপাত
ফুটপাতে মা ঘুমিয়ে আছে
জড়িয়ে ছালা গায়
দুধের শিশু মায়ের বুকের
উমটা নিতে চায়।
দিনের আলো কোথায় গেলো
কই লুকালো রবি?
কুয়াশারই চাদর যে গায়
এইতো শীতের ছবি।
মায়ের বুকে ঘুমায় খোকা
শান্ত যেন শীতে
গরম কাঁথা নেইতো কাছে
আসবে কে-বা দিতে!
কেমন থাকে গরিব দুখি
দেখতে হলে আয়
ফেলনা গরম জামা তোরই
দিস রে তুলে গায়।
পৌষের পিঠে
কলি পলি রুমা ঝুমা
আয় ছুটে সবে
পৌষের সকালেতে
পিঠে ভোজ হবে।
কাল রাতে দিদি ও মা
কুটেছিলো চাল
নারিকেল কুরায়ে যে
ভরেছিলো থাল।
ছাকা তেলে ভাজা হবে
লুচি আর পুরি
আনন্দে মুখে দেবে
সুমা সুমি নূরী।
আয় না রে তোরা সবে
হাসি গানে রই
এই শীতে মজা হবে
বন্ধুরা কই!
রফিক আহমদ খান
শীতের দিনে
শীতের দিনে উদোম বিলে
শিশু-কিশোর খেলে
সকাল-দুপুর সূর্য মামা
রোদের পরশ মেলে।
শীতের দুমাস খালি মাঠে
খোকাখুকু রাজা
বোরো চাষের পানি এসে
দেয় তাদেরকে সাজা।
নানা রকম শাকসবজি
কৃষক ফলায় মাঠে
পুষ্টিকর সব শাকসবজি
আমরা কিনি হাটে।
কী দরদে কৃষকেরা
মনোনিবেশ কাজে
যত্নে গড়া ক্ষেতের মাঠে
সবুজ পাতায় সাজে।
আবু আফজাল সালেহ
শীতের সকাল
ওই যে দ্যাখো ভোরের সূর্য আভা আভা লাল
আনন্দে তাই পায়রাছানার ফোলা ফোলা গাল,
লাল সবুজের সাজে
রঙিন মোরগ লাজে
ফেলে দিয়ে সাড়া
দেয় জাগিয়ে পাড়া
বক বকা বক বক।
ভোরবেলাতে ঠাণ্ডা পেয়ে
বৃদ্ধ কাঁপে শিশু কাঁপে
ঠক ঠকা ঠক ঠক।
একই সাথে শেয়ালছানার
হুক্কা হুয়া হাঁক
ঝপাৎ ঝপাৎ কবুতর ওড়ে
ছোট্ট ছোট্ট খুপরি ছেড়ে
বাকুম বাকুম বাক।
রাজহাঁসটাও পুকুরপাড়ে দেয় ছড়িয়ে ডানা
দুলতে থাকে খুশির দোলায় উড়তে নেই যে মানা।
পুকুরধারের ছবি
পুকুরধারে সবুজ দোলে
পুঁইয়ের মাচার ঝিঙে
হঠাৎ হঠাৎ খেলা করে
মাছরাঙা ও ফিঙে।
এসব ছাড়াও সবুজ মাচায়
কদু শুঁটি শিম,
মায়ের সঙ্গে ঝুড়ি হাতে
জড়ো করে মিম।
ভোরবেলাতে
মোরগ ডাকে দোরে
সকাল ঊষা ভোরে
কক ককাকক কক
বুড়ো কাশে জোরে
চায়ের দোকান মোড়ে
খক খকাখক খক।
বিড়ালছানার মিঁয়ো
গোঁফ ছড়াতে দিয়ো।
রানাকুমার সিংহ
সূর্যমুখীর গান
আকাশটা যে
ভোরে ছিলো টুকটুকে লাল
সকালবেলা নীল
হঠাৎ করে কালো মেঘে
আটকে এসে খিল!
মেঘের ভেতর যায় হারিয়ে
প্লেনের ডানা এক
রোদের বাড়ি যাচ্ছে সবাই
কাটবে কিসের কেক
রোদ লুকিয়ে মেঘের পিছে
লুকোচুরি খেল
গুড়ুম গুড়ুম আওয়াজ দিয়ে
হাঁকছে কলিংবেল!
সুলেখা শামুক
হিম বুড়ি
হিম বুড়ি দিচ্ছে তুড়ি
কাঁপছে সারা গা
ঠাণ্ডা জলে নাচছে বেজায়
কানা বকের ছা।
নাচছে কিন্তু কাঁপছে শীতে
হচ্ছে বেলা ঢের
মাছেরা সব ঘুমিয়ে আছে
শান্ত জলের ঘের।
যাচ্ছে বেলা এমনি করে
দাঁড়িয়ে আছে ঠাই,
ছোট্ট পেটে জ্বলছে আগুন
খাবার কিছু নাই।
সূর্য মামা রাগ করেছে
ঘুমিয়ে আছে বেশ
টেংরা-পুঁটির ছুটাছুটি
আজকে নিরুদ্দেশ।
সকাল থেকে সন্ধ্যা হলো
পণ করেছে খাবার
একটু হাঁটে, একটু উড়ে
একটু খোঁজে আবার।
শিশিরকণা দীঘির জলে
হেসে কথা বলে
কানাবকের ছোট্ট ছানা
ধ্যান করেছে জলে।
শীতে খোকার পণ
পথের ধারে উদোম এক শিশু
যার কাছে শীতের খুশি ম্লান
একটিও নেই গরম জামা গায়ে
তার জন্য কাঁদছে খোকার প্রাণ।
খোকাখুকুর হরেক গরম জামা
তার গায়ে একটিও নেই সুতো
ভাবছে খোকা সেই শিশুটা বাঁচুক সবার মতো।
পণ করেছে একটি জামা আজকে দেবে তাকে
বাড়ি ফিরেই সেই কথাটা জানিয়ে দিলো মাকে।
মা দিয়েছে রঙিন জামা খোকা নিল হাতে
সেই ছেলেটা তখনও ছিলো দাঁড়িয়ে তফাতে।
পরিয়ে দিলো গরম জামা যত্ন করে তারে
মলিন মুখে ফুটল হাসি ব্যস্ত পথের ধারে।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |