কাহলিল জিবরানের ১০টি অনুপ্রেরণামূলক গল্প

‘দ্য প্রফেট’ (১৯২৩) কাব্যগ্রন্থের জন্যই তিনি সর্বাধিক পরিচিত। ইংরেজ কবি উইলিয়াম শেক্সপিয়র ও চীনা কবি শলাউযির পর তাকে বলা হয় ‘তৃতীয় বহুল বিক্রিত বইয়ের কবি’। সেই অর্থে তুমুল জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ তিনি।

কিডস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2020, 09:45 AM
Updated : 5 Jan 2020, 09:47 AM

৬ জানুয়ারি কবি, লেখক ও শিল্পী কাহলিল জিবরানের ১৩৭তম জন্মদিন। ১৮৮৩ সালের এইদিনে তিনি বর্তমান লেবাননে জন্মগ্রহণ করেন, মারা যান ১৯৩১ সালের ১০ এপ্রিল। তার আরও কিছু বই হলো-  ‘মেডম্যান’, ‘স্যান্ড অ্যান্ড ফোম’, ‘ব্রোকেন উইংস’, ‘দ্য ফোররানার’, ‘গার্ডেন অব প্রফেট’ ও ‘দ্য ওয়ান্ডারার’।

প্রকাশনা সংস্থা ‘পেঙ্গুইন’ থেকে ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত কাহলিল জিবরানের তিনটি বইয়ের সংকলন ‘প্রফেট, মেডম্যান, ওয়ান্ডারার’ থেকে এই গল্পগুলো সংগ্রহ ও অনুবাদ করেছেন মাজহার সরকার।

১. বালির লিখন

দুই বন্ধু গল্প করছিলো সমুদ্রের কিনারে। এক বন্ধু বললো, অনেক বছর আগের কথা। সমুদ্রে অনেক ঢেউ ছিলো। সেই ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছিলো সৈকতে।

তখন সৈকতে জমা হওয়া ভেজা বালিতে আঙুল ঘুরিয়ে আমি একটা লেখা লিখেছিলাম, লোকেরা হাঁটা থামিয়ে আমার লেখাটা দেখছিলো আর সাবধান হচ্ছিলো যেন মুছে না যায়।

একথা শুনে অপর বন্ধু বললো, আমিও একদিন বালির গায়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। এতো বড় জোয়ার-ভাটা ছিলো না তখন। কিন্তু হঠাৎ উঁচু এক ঢেউ এসে সৈকতে আছড়ে পড়লো, আর সমুদ্রের বুকে ফিরে যেতে যেতে আমার লেখাটা মুছে সঙ্গে করে নিয়ে গেলো। কিন্তু বলোতো, তুমি কী লিখেছিলে?

প্রথম বন্ধু উত্তর দিলো, লিখেছিলাম ‘আমিই সেই লোক’। কিন্তু তুমি কী লিখেছিলে? দ্বিতীয় বন্ধু জবাব দিলো, আমি লিখেছিলাম ‘আমি কেউ নই, সমুদ্রের এক ফোঁটা জল কেবল’।

২. চোখের দেখা

একদিন চোখ বললো, এই উপত্যকার পেছনে নীল কুয়াশায় ঢাকা একটা পাহাড় দেখতে পাচ্ছি। পাহাড়টা কি সুন্দর, তাই না বলো!

কান চোখের কথা শুনলো, কিছুক্ষণ মনোযোগ দিয়ে আরও কিছু শোনার চেষ্টা করে বললো, কোথায় তোমার সেই পাহাড়? কিছুই শুনতে পাচ্ছি না যে?

তখন হাত কথা বলে উঠলো। বললো, আমি পাহাড়টাকে ধরার বা স্পর্শ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি অনেকক্ষণ ধরে। কিন্তু খুঁজে পেলাম না!

একথা শুনে নাক নড়েচড়ে উঠলো, বললো, কই! কোথাও পাহাড় নেই। আমি ঘ্রাণ পাচ্ছি না।

চোখ তখন অন্যদিকে ঘুরে তাকালো। আর সবাই মিলে চোখের অদ্ভুত বিভ্রম নিয়ে কথা বলা শুরু করলো। তারা বললো, চোখের নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা হয়েছে।

৩. শেয়ালের ছায়া

এক সকালে সূর্যের আলোতে শেয়াল তার ছায়ার দিকে তাকিয়ে বললো, আজ দুপুরে আমি এমন একটা উট খাবো।

একথা বলে শেয়াল সারাটা সকাল উটের খোঁজ করলো। কিন্তু কোথাও সে উট পেলো না। অবশেষে দুপুরে সে তার ছায়াকে আবার দেখলো। দেখে বললো, ‘না থাক, এই ইঁদুরটাকেই এখন খাবো’।

৪. জ্ঞানী রাজা

অনেক দিন আগে অনেক দূর দেশে ‘ওয়েরিনি’ নামে একটা শহর ছিলো। সে শহরের রাজা ছিলেন যেমন শক্তিশালী তেমন জ্ঞানী। লোকে তাকে বড্ড ভালোবাসতো।

ওয়েরিনি শহরের কেন্দ্রে ছিলো একটা পাতকুয়ো। কুয়োর জল ছিলো অনেক শীতল ও কাচের মতো স্বচ্ছ। রাজা ও রাজ-দরবারের লোকজনসহ পুরো শহরের বাসিন্দারা এই কুয়োর জল খেতো। এই একটা কুয়ো ছাড়া আর কোনো জলের উৎস ছিলো না শহরে।

এক গভীর রাতে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে, তখন শহরে ঢুকলো এক ডাইনি। সে করলো কী, পাতকুয়োর জলে সাত ফোঁটা অদ্ভুত তরল মিশিয়ে দিলো। আর খিলখিল করে হেসে বললো, এখন থেকে এই কুয়োর জল যে বা যারা খাবে তারা পাগল হয়ে যাবে।

পরদিন সকালে ওয়েরিনির বাসিন্দারা আগের মতোই ঘুম থেকে জাগলো। রাজা ও তার রাজমহলের বাসিন্দারা ছাড়া শহরের সব নারী-শিশু-ছেলে-বুড়ো সবাই কুয়ো থেকে জল উঠিয়ে নিয়ে গেলো। খেলো, কাপড় ধুলো, রান্না করলো, গোসল করলো। তারপর ডাইনির কথামতো পাগল হয়ে গেলো।

সেইদিন ওয়েরিনি শহরের অলিতে গলিতে, রাস্তায় আর বাজারে লোকেরা জড়ো হচ্ছে আর ফিসফিস করে একে অপরের কানে বলাবলি করছে, জানো! আমাদের রাজা পাগল হয়ে গেছে। রাজা ও তার সভাসদ কোনো কিছুই ঠিকমতো করছে না। এমন পাগল রাজার অধীনে বসবাস করা যায় না, আমাদের উচিত তাকে সিংহাসনচ্যুত করা।

এদিকে শহরের সব খবরই পেলেন রাজা। সেদিন সন্ধ্যায় সোনার পানপাত্রে কুয়োর জল আনার নির্দেশ দিলেন তিনি। পানপাত্র আনার পর ঢকঢক করে সেই জল খেলেন রাজা, তারপর সভাসদদের দিকে এগিয়ে দিলেন সবাই পান করার জন্য।

তারপর সেই দূর দেশের ওয়েরিনি শহরে শুরু হলো তুমুল আনন্দ। কারণ কুয়োর জল পান করে রাজা ও তার সভাসদ পুণরায় তাদের বুদ্ধি-বিবেচনা ফিরে পেলো।

৫. দুই পণ্ডিত

প্রাচীন এক শহর আফকার। সেখানে বাস করতেন দুই পণ্ডিত। তাদের একজন ছিলেন নাস্তিক, আরেকজন আস্তিক। তারা পরস্পরকে অপছন্দ করতেন, একে অপরের নিন্দা করে বেড়াতেন।

একদিন অনেক লোকজনের উপস্থিতিতে নিজেদের অনুসারীদের সামনেই দুই পণ্ডিত সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু করে দিলেন। দীর্ঘ বিতর্কের পর তারা বাসায় ফিরে গেলেন।

সেদিন সন্ধ্যায়, নাস্তিক পণ্ডিত গির্জায় গিয়ে বেদিতে লুটিয়ে পড়লেন। আর আগের কাজের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাইলেন।

৬. বিজ্ঞ কুকুর

দুটো বেড়াল বসে আছে, আর পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে এক বিজ্ঞ কুকুর। বেড়ালেরা এতো মনোযোগ দিয়ে কথা বলছিলো যে কাছে এলেও কুকুরটিকে তারা দেখেনি। তাই কুকুরটা থামলো।

কিছুক্ষণ পর দুই বেড়ালের মাঝে বেশ বড় সাইজের একটা হুলোবেড়াল উপস্থিত হলো। ওদের দিকে তাকিয়ে বেশ উপদেশের ভঙ্গিতে বললো, ‘জ্ঞাতি ভাইয়েরা, প্রার্থনা করো। প্রার্থনা করলে দেখবে একদিন নিশ্চয়ই ইঁদুরবৃষ্টি হবে।’

একথা শুনে কুকুর মনে মনে হাসলো, যেতে যেতে বললো, ‘আহারে বোকা বেড়াল, তোমরা কি অন্ধ, এটা কি লিখিত নেই, আর আমি কি জানি না, জানতেন না কি আমার বাবা বা তারও বাবা, যে, বিশ্বাস প্রার্থনা আর আরতি করে ইঁদুর মেলে না, মেলে কেবল হাড্ডি।’

‘প্রফেট, মেডম্যান, ওয়ান্ডারার’ বইয়ের প্রচ্ছদ

৭. বিজ্ঞ মানুষ

একদিন আমি ও আমার বন্ধু হেঁটে যাচ্ছিলাম। মন্দিরের ছায়ায় এক অন্ধ লোককে বসে থাকতে দেখে আমার বন্ধু বলে উঠলো, ‘দেখো‍! দেখো! উনিই হলেন আমাদের দেশের সবচেয়ে বিজ্ঞ মানুষ।’

আমি লোকটার কাছে গেলাম। কুশল জিজ্ঞেস করলাম ও অনেকক্ষণ গল্প করলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কখন থেকে অন্ধ হয়ে গেছো?

‘জন্ম থেকে’, লোকটা উত্তর দিলো।

‘তাহলে তুমি জ্ঞান পেলে কোথা থেকে?’ আমি জানতে চাইলাম।

লোকটা বললো, ‘আমি একজন জ্যোতিষী।’

এইটুকু বলে সে তার হাত রাখলো বুকে। বললো, ‘এর ভেতরেই আমি সূর্য, চাঁদ আর তারা দেখতে পাই।’

৮. পোশাক বদল

একদিন সৌন্দর্য ও কদর্যতার দেখা হয়ে গেলো সমুদ্র সৈকতে। একে অপরকে দেখতে পেয়ে তারা বললো, চলো আমরা এই সমুদ্রের জলে গোসল করি!

তারা পোশাক খুলে তীরে রেখে গোসল করতে নামলো সমুদ্রে। কিছুক্ষণ পর কদর্যতা তীরে উঠে এলো আর সৌন্দর্যের পোশাক পরে চলে গেলো।

তার কিছুক্ষণ পর সৌন্দর্যও গোসল শেষ করে তীরে এলো। এসে দেখলো তার পোশাক নেই। পোশাক ছাড়া খালি গায়ে থাকতে তার লজ্জা লাগছিলো। তাই সে উপায় না দেখে কদর্যতার পোশাকই পরে নিলো।

এই ঘটনার পর থেকেই লোকে সৌন্দর্য ও কদর্যতাকে চিনতে ভুল করে। এমন অনেকে আছেন যারা সৌন্দর্যকে চেনেন, কিন্তু গায়ের পোশাক দেখে মুখ ফিরিয়ে নেন। আবার এমন অনেকে আছেন যারা পোশাক দেখে চোখ সরাতে পারেন না, কিন্তু কদর্যতার মুখ তো তারা চেনেন!

৯. বড় সমুদ্র

একদিন আমি ও আমার আত্মা গোসল করতে সমুদ্রে গিয়েছিলাম। যখন উপকূলে পৌঁছলাম, তখন একটি নিরিবিলি জায়গা খুঁজতে লাগলাম।

কিন্তু যখন হেঁটে যাচ্ছিলাম, দেখলাম একটি লোক ধূসর পাথরের উপর বসে একটি থলে থেকে এক চিমটি নুন নিয়ে সমুদ্রে ফেলে দিচ্ছেন।

‘এই লোকটা হতাশাবাদী’ আমার আত্মা বলল, ‘চলো এই জায়গা ছেড়ে যাই। আমরা এখানে গোসল করতে পারি না।’

হেঁটে হেঁটে একটা খাঁড়ির কাছে চলে এলাম। সেখানে দেখলাম, একটি সাদা পাথরের উপর দাঁড়িয়ে একজন লোক রত্নখচিত বাক্সটি ধরে আছেন, সেখান থেকে তিনি চিনি নিয়ে সমুদ্রে ফেলে দিচ্ছেন।

‘এই লোকটি আশাবাদী’ আমার আত্মা বলে উঠলো, ‘তার সামনে পোশাক খুলে গোসল করা উচিত নয়।’

আমরা আরও হাঁটতে লাগলাম। একটা সৈকতে এসে এমন একজনকে দেখতে পেলাম যিনি মরা মাছ তুলছেন এবং কোমলভাবে সেগুলো আবার জলে ফেলে দিচ্ছেন।

‘না, আমরা তার সামনেও গোসল করতে পারি না’ আমার আত্মা বললো,  ‘তিনি হলেন মানবসেবক।’

এরপর আমরা আরও পথ চলতে লাগলাম।

তারপর সেখানে পৌঁছে দেখি যে একজন লোক বালির উপরে তার ছায়া আবিষ্কার করেছেন। দুর্দান্ত তরঙ্গ এসে তা মুছে ফেলল। কিন্তু লোকটা বারবার তারা ছায়া খুঁজতে লাগলেন।

আত্মা বললো, ‘তিনিই রহস্যময়, আসুন তাকে ছেড়ে যাই।’

আমরা হেঁটে গেলাম, চুপচাপ এক জায়গায় পৌঁছে দেখতে পেলাম একজন লোক ঢেউয়ের ওপর জমা হওয়া ফেনা তুলছেন আর একটা বাটিতে সংগ্রহ করছেন।

‘তিনিই আদর্শবাদী’ আমার আত্মা বললো, ‘আমরা পোশাক খুলে গোসল করলে সে অবশ্যই আমাদের দেখে ফেলবে।’

আমরা হাঁটতে থাকলাম। হঠাৎ একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম, ‘এটি সমুদ্র। এটি গভীর সমুদ্র। এটিই বিশাল ও শক্তিশালী সমুদ্র’। যখন আমরা কণ্ঠস্বরটি শুনলাম তখন দেখলাম লোকটিকে। সমুদ্রের দিকে পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন আর একটি শামুকের খোল কানের কাছে ধরে সমুদ্রের গর্জন শুনছেন।

আত্মা বললো, ‘আসুন আমরা এগিয়ে চলি। তিনি হলেন বাস্তববাদী, তিনি যা ধারণ করতে পারেন না তার দিকে পিঠ দিয়ে থাকেন আর নানা খণ্ডাংশ নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন।’

সুতরাং আমরা আরও এগিয়ে গেলাম সামনে। আগাছা গজানো একটা জায়গায় বালির মধ্যে শরীর ডুবিয়ে মাথাটা বের করে আছেন একটা লোক। আমার আত্মাকে বললাম, ‘আমরা এখানে গোসল করতে পারি, সে আমাদের দেখতে পারবে না।’

‘না’ আত্মা বললো, ‘সে সবার মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক। তিনিই পিউরিটান বা বেশি নীতিবান।’

তখন আমার আত্মার চেহারায় ও কণ্ঠে এক ভীষণ দুঃখ দেখতে পেলাম। সে বললো, ‘আসুন আমরা চলে যাই, কারণ এমন কোন নিরিবিলি জায়গা নেই যেখানে আমরা গোসল করতে পারি। এই বাতাসকে আমার সোনার চুল ছুঁতে, আমার বুক স্পর্শ করতে দিতে পারি না, চাই না কোনো আলো আমার পবিত্র নগ্নতা দেখুক।’

তারপরে আমরা সেই সমুদ্র ছেড়ে গেলাম আরও বড় কোনো সমুদ্রের সন্ধানে।

১০. জাডের মাঠ

জাড অঞ্চলের রাস্তায় একজন পথচারী পাশের গ্রামে বসবাসকারী এক লোকের দেখা পেলো। পথিক তার হাত দিয়ে বিস্তীর্ণ মাঠের দিকে ইশারা করে লোকটাকে জিজ্ঞাসা করলো, ‘এটা কি সেই যুদ্ধক্ষেত্র যেখানে রাজা আহলাম তার শত্রুদের পরাজিত করেছিলো?’

লোকটা উত্তর দিলো, ‘এটা কখনও যুদ্ধক্ষেত্র ছিল না। একসময় এই জমিতে মহান জাড শহর ছিলো এবং তা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে এখন এটি একটি ভালো ফসলের জমি, তাই না!’

পথিক মনমতো উত্তর না পেয়ে হাঁটতে থাকলো। আধ মাইল দূরে সে আরেকজনের দেখা পেলো, তারপর মাঠের দিকে ইশারা করে বললো, ‘তাহলে এখানেই কি জাডের মহান শহর ছিল?’

লোকটা বললো, ‘এই জায়গাতে কখনও কোনো শহর ছিল না। তবে একবার এখানে একটি বিহার ছিল এবং এটাকে দক্ষিণ দেশের লোকেরা ধ্বংস করে দেয়।’

জাডের সেই রাস্তায় কিছুক্ষণ পর ভ্রমণকারী তৃতীয় ব্যক্তির দেখা পেলো। তারপর আরও একবার বিশাল ক্ষেতের দিকে ইশারা করে বললো, ‘এটা কি সত্য নয় যে এখানে একসময় একটি বিরাট বিহার ছিলো?’

লোকটি উত্তর দিলো, ‘এর আশপাশে কোনও মঠ কখনও হয়নি, তবে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শুনেছি যে একবার এই মাঠে একটি বড় উল্কা পড়েছিল।’

ভ্রমণকারী মনে মনে অবাক হলো আর পথ চলতে লাগলো। এবার তিনি একজন বুড়োর সাক্ষাত পেলো। বুড়োকে সালাম জানিয়ে ভ্রমণকারী বললো, ‘স্যার, এই রাস্তায় আমি পাশের বাসিন্দা তিনজন লোকের সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাদের প্রত্যেককে এই জায়গা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। প্রত্যেকে একে অপরের কথা অস্বীকার করেছে। প্রত্যেকে আমাকে একটি নতুন গল্প বলেছে যা অপরজন বলেনি।’

তখন বুড়ো মানুষটা মাথা উঁচু করে জবাব দিলেন, ‘আমার বন্ধু, এই লোকেরা প্রত্যেকে আপনাকে সত্যিই কি বলেছিল, আমাদের মধ্যে সামান্য কয়েকজনই ভিন্ন ভিন্ন কথা বলতে পারে এবং এর সত্যতা তৈরি করতে পারে।

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ছবি দিতে ভুলো না!