মা
ছোট্ট বেলায় গাছের শাখে
কিংবা ধরো নদীর বাঁকে
ধরতে যেতাম পাখি
বন-বাদাড়ে পাখির নীড়ে
পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরে-ফিরে
কত্তো মাখামাখি!
কিন্তু মায়ের বারণ ছিল
হয়তো এটার কারণ ছিল
তাও বুঝিনি আমি;
মায়ের শোকে মায়ের দুখে
আজ বুঝেছি ধরার বুকে
মা যে কতো দামি!
ছড়ার পাখি
বইকে ঘিরে আজকে খুকুর
দারুণ মাখামাখি,
হরেক রঙের রংতুলিতে
ছবি আঁকাআঁকি!
হলুদ-সাদা কমলা-কালো
সাতটি রঙের নীরে,
আঁকলো খুকু পাখির ছবি
শব্দ-কথার ভিড়ে!
হাজার কথা সুরের দেহ
ছোট্ট দুটো ডানা;
পায়ের পাতা কালচে কালো
তাঁতের সুতোয় টানা!
মুগ্ধতা আর মায়ায় ঘেরা
মুক্তো-দানার আঁখি,
শব্দ-কথার এই পাখিটা
ছন্দ ছড়ার পাখি!
বাবার চিঠি
যখন আমি ছোট্ট খোকা হাঁটতে পারি মোটে
মা, মা ছাড়া মুখের ভাষা; ছিল না আর ঠোঁটে।
বাবা তখন মিছিল-মিটিং কি জানি সব করে
মাতৃভূমির জন্য যে তার চোখের পানি ঝরে।
দু-দিন বাদে বাবা যে তাই ছাড়লো বসত বাড়ি
বাবাবিহীন এই আমিটা, থাকতে কি আর পারি?
এমনি করে একলা একা খেলার সাথী ছাড়া
এই আমিটা বাবাবিহীন পুরোই পাগলপারা।
কিন্তু হঠাৎ খবর এলো; আকাশ ভাঙা দুখের
রক্তে ভেজা, বাবার চিঠি প্রতিচ্ছবি মুখের।
খুলেই দেখি অবাক চোখে; ভাবিস নে রে খোকা
এই আমাকে পড়লে মনে, খুঁজিস জোনাকপোকা।
এবং তারা, রোদের হাসি শিশির-জলের মায়ায়
দেখবি খোকা, বাবার ছবি লাল-সবুজের ছায়ায়।
বর্ষা
বর্ষা ঋতুর, ফর্সা আকাশ
তিতাস-নদীর বাঁকে!
ফুটলো কদম থোকায় থোকায়
পাতার ফাঁকে ফাঁকে।
রঙধনুকে হার মানিয়ে
আকাশ নামের খাতায়;
মেঘ জমেছে, শুভ্র শিশির
সবুজ গাছের পাতায়
বাজনা তোলে গুড়ুম গুড়ুম
মেঘ পিয়াসী পরীর,
সময় ডুবে ঘরের কোণে
রাত দুপুরে, ঘড়ির।
বৃষ্টি ভেজা আষাঢ় মাসে
ফুল-ফলাদি গাছের,
অলস সময়! ব্যাঙ, কাছিম ও
টেংরা পুঁটি মাছের...
পরোপকারী
ছোটখাট প্রদীপের ঝিকিমিকি আলো
দূর করে ঠেলে দেয় কাছারির কালো!
ঘুটঘুটে রাতে হয় পথিকের সাথি;
যেমনটা বাদলের দিনে লাগে ছাতি।
তবু তার নেই কোনো হিংসে বা দাপ
একরতি গরিমার তিল হেন তাপ!
এমনি তো ঘটা চাই মানুষের মন
পরোপকারী সে যে খুব সাধারণ।
শীত নামে
টুপটুপ শিশিরের ঠকবক গাড়িতে
শীত নামে খেজুরের রসে ভরা হাড়িতে!
সাদা রঙে কুয়াশার জমকালো চাদরে
শীত নামে ফুল বাগে সকালের আদরে!
ফুল-পাখি লতা-পাতা নদীতীর মাঠেতে
শীত নামে ওই দূরে শহরের হাটেতে!
ভোরবেলা কাচি হাতে গাছি ভাই গাছেতে
শীত নামে পুকুরের জল আর মাছেতে!
ভিনদেশী মেহমান পাখিদের ঝুঁটিতে
শীত নামে খোকনের ইশকুল ছুটিতে!
কচি-ঘাস বাঁশ-ঝাড় পিঠা-পুলি খানাতে
শীত নামে গাছ-পালা প্রজাপতি ডানাতে!
স্মৃতি
দেখা ঠিক হয় নাকো সকলের সাথে
আগেকার মতো সেই ভোর আর রাতে।
আমি ছাড়া তোমাদের ফুটে কি গো হাসি?
জানো আমি তোমাদের খুব ভালোবাসি!
জানি আমি গাঁয়ে নেই তোমাদের ভিড়ে
স্মৃতিগুলো গাঁথা আছে নদীটির তীরে।
খোলা মাঠ মেঠোপথ শিশিরের নিরে
গাছে গাছে বক টিয়ে পাখিদের ঘিরে।
পাঠশালা বটতলা হিজলের বন
ওইখানে পড়ে আছে কচি এই মন।
বনে বনে তরুলতা নদী জলে মাছ
নিশি রাতে আকাশেতে পরীদের নাচ।
ধানক্ষেত পানক্ষেত সবুজের হাসি
ভালো থেকো ফুল-পাখি খোকনের বাঁশি!
অতীতের দিন মানে ভালোবাসা বাসি
তোমাদের ভিড়ে যেনো ফের ফিরে আসি।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |