নোয়াখালীর গ্রামে তিনশ বছর পুরনো মসজিদ

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা গ্রামে আছে ‘বজরা শাহী মসজিদ’। মোঘল আমলে আঠারশ শতাব্দীতে অর্থ্যাৎ প্রায় তিনশ বছর আগে এটি নির্মিত হয়।

আজহার মাহমুদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2019, 07:48 AM
Updated : 4 Nov 2019, 07:48 AM

দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটি মাইজদীর চারপাশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর একটি। মোগল সম্রাট মুহাম্মদ শাহের রাজত্বকালে ১৭৪১-৪২ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মাণ করেন আমান উল্লাহ। ১৯১১ থেকে ১৯২৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে বজরা জমিদার খান বাহাদুর আলী আহমদ ও খান বাহাদুর মুজির উদ্দিন আহমদ মসজিদটি মেরামত করেছিলেন এবং সিরামিকের মোজাইক দিয়ে সাজিয়েছিলেন।

নোয়াখালীসহ পুরো বাংলাদেশে ইসলাম ধর্ম প্রচারে রয়েছে এ মসজিদের ঐতিহাসিক অবদান। দিল্লীর মোগল সম্রাটরা অবিভক্ত ভারতবর্ষে ৩০০ বছরের বেশি সময় রাজত্ব করেন। এ দীর্ঘ সময়ে মোগল সম্রাট এবং তাদের উচ্চপদের আমলারা বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ইমারত ও মসজিদ নির্মাণ করেন যা আজও স্থাপত্যশিল্পের বিরল ও উজ্জ্বল নির্দশন। ‘বজরা শাহী মসজিদ’ এগুলোর মধ্যে একটি।

২৯ নভেম্বর ১৯৯৮ থেকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বজরা শাহী মসজিদের ঐতিহ্য রক্ষা এবং দুর্লভ নিদর্শন সংরক্ষণের জন্য কাজ করছে। মসজিদটি বর্তমানে ভালো অবস্থায় সংরক্ষিত এবং এটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সুরক্ষিত স্থানগুলোর তালিকাতেও রয়েছে। আমাদের দেশের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এ মসজিদে এলেই দর্শনার্থীদের মন জুড়িয়ে যায়।

অবস্থান:

মসজিদটি নোয়াখালী মাইজদী শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা গ্রামে প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত।

মসজিদের বর্ণনা:

বাজরা শাহী মসজিদে ঢোকার পথ মসজিদের মতোই মোজাইক দিয়ে সাজানো। মসজিদের পূর্ব দিকে তিনটি দরজা রয়েছে। তিনটি দরজা বরাবর কিবলা দেয়াল রয়েছে যার অভ্যন্তরে তিনটি মিহরাব রয়েছে। মাঝের মিহরাবটি অন্য দুটির থেকে অপেক্ষাকৃত বড়। এছাড়া উত্তরে ও দক্ষিণে একটি করে মোট পাঁচটি দরজা রয়েছে মসজিদে।

এ মসজিদের অভ্যন্তরে বহু-শিখরের খিলান দিয়ে তিনটি ভাগে ভাগ করা। মসজিদের অভ্যন্তরীণ দুটি কক্ষ আছে যা বহুখাঁজবিশিষ্ট আড়াআড়ি খিলান দিয়ে তিন ভাগে বিভক্ত। ছাদের উপর তিনটি কন্দাকৃতির গম্বুজ আছে যা অষ্টকোণাকার। এগুলো শীর্ষ পদ্ম ও কলস চূড়া দিয়ে সাজানো।

মসজিদটি আয়তাকার, উত্তর দক্ষিণে লম্বা। বাইরের চার কোণায় অষ্টভুজাকৃতির বুরুজ রয়েছে। দরজা বাইরের দিকে অভিক্ষিপ্ত এবং দরজার উভয় পাশে সরু মিনার রয়েছে।

কিভাবে যাওয়া যায়:

নোয়াখালী জেলা সদর মাইজদী থেকে সোনাইমুড়ীগামী যে কোন লোকাল বাস সার্ভিস বা সিএনজি অটো-রিকশা দিয়ে বজরা হাসপাতালের সামনে নামতে হবে। তারপর রিকশা বা পায়ে হেঁটে দুইশ গজ পশ্চিমে গেলে বজরা শাহী মসজিদে পৌঁছা যাবে।

এই লেখকের আরও লেখা

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!