শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, তাঁকে বলা হয় ভাষা আন্দোলনের প্রথম ভাষাসৈনিক। ১৯৪৮ সালের ২৫ অগাস্ট পাকিস্তান গণপরিষদে অধিবেশনের সব কার্যবিবরণী ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকেও অন্তর্ভুক্ত করার দাবি উত্থাপন করেন তিনি।
এটাই ছিলো বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার গণআকাঙ্খার সূচনা। এরপর তৈরি হলো একের পর এক ইতিহাস। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরও অনেকে রাজপথে রক্ত ঢেলে দিলেন। অসংখ্য ভাষাসৈনিকের সংগ্রামের ফলে আমরা আজ মায়ের ভাষা বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। সেই মাতৃভাষার প্রথম দাবিদার হলেন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।
তাঁকে নিয়েই কবি মিনার মনসুরের বই ‘ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত: জীবন ও কর্ম’। বইটির ভাষা সরল ও সহজ। বড়দের পাশাপাশি কিশোর-তরুণরাও পড়তে পারবে, বাড়ির পাঠাগারে সংগ্রহ করে রাখতে পারবে, জানতে পারবে জ্বলজ্বলে ইতিহাস।
বইটিতে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের শৈশব, বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা, সংগ্রামী জীবন, রাজনৈতিক জীবন, তার জীবনের দুর্লভ কিছু ছবি ইত্যাদি রয়েছে। ১৮৮৬ সালের ২ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের উত্তরে রামরাইল গ্রামে জন্ম নেন ধীরেন্দ্রনাথ। ৭১ সালে শহীদ হন বিখ্যাত এ মনীষী।
এছাড়া বইয়ের শেষে সংযুক্ত অতিরিক্ত অংশ অর্থ্যাৎ অ্যাপেন্ডিক্স বা পরিশিষ্ট আছে আরো ছয়টি। সেগুলো হলো- ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের আনীত সংশোধনী প্রস্তাব এবং সে সম্পর্কিত বিতর্ক, যুক্তফ্রন্টের একুশ দফা, ১৯৬৫ সালে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রতি সরকারের আরোপিত বিধি নিষেধ হাইকোর্ট কর্তৃক বেআইনি ঘোষণা, ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নির্বাচিত চিঠিপত্র, ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের আত্মকথা বিষয়ে শওকত ওসমানের লেখা ‘ভূমিকা’ এবং ‘ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের আত্মকথা’ গ্রন্থে সম্পাদক আনিসুজ্জামানের লেখা ‘সম্পাদকের নিবেদন’।
বইটি সম্পর্কে এর লেখক কবি মিনার মনসুর বলেন, “যা হয়, খুবই উপেক্ষিত ছিলেন নিভৃতচারী এ মানুষটি (ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত)। তাঁর নাতনি আরমা দত্তের সহায়তায় আমরা একটি স্মৃতিরক্ষা কমিটি গঠন করি নব্বইয়ের দশকে। বিচারপতি কামাল উদ্দিন হোসেন সভাপতি, আমি সম্পাদক। ছিলেন শওকত ওসমান ও আনিসুজ্জামানসহ দেশবরেণ্য ব্যক্তিদের অনেকেই।
“বেশকটি স্মরণসভা হয় ঢাকা, কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি ছিল ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারকগ্রন্থ’ ও ‘ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের আত্মকথা’ প্রকাশ। এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। তারপর বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয় আমার লেখা ‘ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত’ (জীবনী) এবং ’ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত: জীবন ও কর্ম’ নামে দুটি গ্রন্থ। তার পরও মানুষটি যথোচিত স্বীকৃতি ও সম্মান পেয়েছেন এমনটা বোধ করি খুব জোর গলায় বলা যাবে না।”
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |