বিজ্ঞান শিখি: টিস্যু পেপার যখন ছেঁড়া যায় না

টিস্যু পেপার । সাধারণ ন্যাপকিন হিসেবে ব্যবহৃত এই কাগজ এতো বেশি নমনীয়ভাবে তৈরি হয়ে থাকে যে অল্পতেই ছিঁড়ে যায়। কিন্তু টিস্যু পেপারের উপর শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চাপ প্রয়োগ করেও যদি ছিঁড়তে না পারো তখন চোখ কপালে উঠে আসে। আশ্চর্য হতে হয়।

শেখ আনোয়ারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2019, 07:43 AM
Updated : 22 Sept 2019, 07:46 AM

হ্যাঁ। ঠিক তাই। সত্যি সত্যি ধাঁধায় পড়ে যাবার মতো একটি চমকপ্রদ খেলা এটি। তবে এই খেলা দেখানোর আগে চারকোণা সাইজের একটি টিস্যু পেপার নিয়ে শক্ত কাগজের তৈরি নল বা টিউবের এক মাথায় রাবার ব্যান্ড দিয়ে ভালোভাবে বাঁধো এবং সমতল টেবিলের উপরে রাখো। এবার কাগজের নলটিকে উপর নিচে এমনভাবে লম্বালম্বি রাখবে যেন কাগজের নলটির খোলা মুখ উপরের দিকে থাকে।

ব্যস। এবার নলের খোলা মুখ দিয়ে অনবরত শুকনো চাল ঢালতে থাকো। চাল দিয়ে নলটি যখন ভরে যাবে তখন তার মধ্যে তোমার তর্জনী শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চেপে চেপে ঢোকাও। হয়তো তোমার মনে হতে পারে চালের মধ্যে আঙ্গুল দিয়ে নিচের দিকে বারবার চাপ দিলে নলের নিচের মুখে রাবার দিয়ে বাঁধা টিস্যু পেপার ছিঁড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।

কিন্তু না। তোমার গায়ে যতো শক্তিই থাকুক না কেন, তুমি টিস্যু পেপার একটুও ছিঁড়তে পারবে না।

কারণ কি? চালের দানা শক্ত। এক্ষেত্রে পরস্পর গুচ্ছাকারভাবে নলের ভেতর চালগুলো থাকলেও চাপের ফলে প্রতিটি চালের দানা পিছলে যায়। যখনই তুমি নলের ভেতরে আঙ্গুলের চাপ দাও, তখনই এই চাপের সমস্ত শক্তি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি এই চাপ বা বল টিউবে থাকা সব চালের দানার মধ্যেও বিভক্ত হয়ে ছড়িয়ে যায়।

অবশ্য এই বলের কিছু অংশ কাগজের গোলাকার নলের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে ।তাই কাগজের টিস্যু পেপারের উপরের অংশ থেকে আসা চাপ বা বল এভাবে চারদিকে বিভক্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বলেই টিস্যু পেপার ছিঁড়ে যায় না।
বিষয়টি বুঝার জন্য এক্ষেত্রে ফোলানো বেলুন কিংবা গাড়ির টায়ারের কথা চিন্তা করা যেতে পারে। বেলুন বা টায়ারের ভেতর চাপ দিয়ে বাতাস ঢোকানো থাকে। এই বাতাস সবদিকে সমানভাবে বল ছড়িয়ে দেয়। চালের দানার ফাঁকে ফাঁকে থাকা বাতাসের আণবিক কণাগুলোর মাধ্যমে চালগুলো চারপাশে পিছলে গিয়ে পরস্পর ধাক্কা খায়। অর্থাৎ শক্তি বিভাজিত হয়ে যায়। যেমনভাবে টায়ার ও বেলুনে থাকা বাতাসের চাপ চারপাশে বিভাজিত হয়ে থাকে এখানেও তাই হয়েছে।

লেখক পরিচিতি: শিশু-কিশোরদের মাঝে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজে নিবেদিত শেখ আনোয়ার। শিশুদের জন্য বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখি করছেন প্রায় দেড় যুগ। অগ্রণী ব্যাংক-বাংলাদেশ শিশু একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক শেখ আনোয়ারের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৫২।

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!