এরা গোঙ্গায় না। গর্জে ওঠে না। তবে এমন এক শব্দ করে, যা শুনলে শত্রুর পিলে চমকে যাবে। রক্ত হিম হয়ে আসবে। এক ধরনের গা শিউরানো কর্কশ বিচ্ছিরি শব্দ করে এরা। বিশেষ করে অনাহুত কাউকে দেখলে। আর এ শব্দই হচ্ছে শত্রুর জন্য বিপদ সঙ্গেত। তফাৎ যাও!
তবে শব্দ তুলে গায়ের রোম খাড়া করে দিলেও বাস্তবে কিন্তু মোটে বীর পালোয়ান নয় ভুতুড়ে কাঁকড়া। হবে কি করে? গায়ে-গতরে তো মাত্র এত্তটুকুন। দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে মাত্র দুই কি তিন ইঞ্চি। তবে শত্রুর চোখে ধুলো দেয়ার বেলায় খুব ওস্তাদ।
বেগতিক দেখলে খুব তাড়াতাড়ি গর্তে লুকাতে জানে এরা। আর এদের রোমশ গায়ের রংটাও সৈকতের বালির রঙের মতো। এই ভুতুড়েগুলো বুঁদ হয়ে কোথাও পড়ে থাকলেও সহজে দেখা যায় না। দেখা গেলেই বা কি? শত্রুকে মোটেও পরোয়া করে না এরা।
বেগতিক দেখলে এত দ্রুত গা ঢাকা দেবে, খুঁজেই পাওয়া যাবে না। ধরতেই পারবে না শত্রুর চোখ। যেন এই আছে, এই নেই। যাদের খুব ভুতের ভয় তারা যদি নির্জন সাগর সৈকতে যায়, তাহলেই হয়েছে তার। ঠিক ঠিক টের পাবে যে কেমন কর্কশ আর বিচ্ছিরি ঘর ঘর শব্দ বেরোয় ওদের মুখ থেকে।
ভুতুড়ে কাঁকড়ার অবশ্য গুণও রয়েছে। এরা ভুতের মতো নিশাচর ঠিকই। সারারাত ধরে আটলান্টিকের উপকূলবর্তী সৈকতগুলো চষে বেড়ায়। শিকার করে ছোট ছোট প্রজাতির কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক আর জীবজন্তুর উচ্ছিষ্ট বা দেহাবশেষ।
আর এতে দিনের বেলা সাগর সৈকতে যে আবর্জনা জমা হয়, রাতে তা পুরোটাই খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। সাগরপারে এরা ঝাড়–দারের গুরুদায়িত্ব পালন করে চলেছে নিয়মিত। সাগর উপকূলের পরিবেশ কলুষমুক্ত রাখতে ভুতুড়ে কাঁকড়ার অবদান সত্যি ফেলনা নয়।
লেখক পরিচিতি: শিশু-কিশোরদের মাঝে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজে নিবেদিত শেখ আনোয়ার। শিশুদের জন্য বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখি করছেন প্রায় দেড় যুগ। অগ্রণী ব্যাংক-বাংলাদেশ শিশু একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক শেখ আনোয়ারের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৫২।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |