যেভাবে শিশুকে অঙ্কে আগ্রহী করে তুলবেন

আপনার যতই গণিত বা অঙ্কের প্রতি বিরক্তি থাকুক না কেন, শিশুকে শেখানোর সময় সবসময় মুখে হাসি রাখবেন। প্রথম প্রথম তাদের বেশি চাপ দেবেন না। বাসায় চেষ্টা করবেন যতটা সম্ভব চাপমুক্ত রেখে তাদেরকে উৎসাহের সঙ্গে গণিতের ধারণা দিতে।

>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2018, 03:08 AM
Updated : 16 Nov 2018, 03:30 AM

কারণ স্কুলে তাদের উপর এমনিই অনেক চাপ দেওয়া হয়। গণিতে আমরা যা শিখি তার যা কিছু আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে তা তাদেরকে দেখাতে হবে।নিচে ছয়টি উপায় বর্ণনা করা হলো যার মাধ্যমে আপনি আপনার শিশুর মধ্যে গণিতের প্রতি ভালোবাসা গড়ে তুলতে পারবেন-

১. সব সময় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করবেন। আমরা অনেকেই গণিত ভয় পাই, কারণ এতে প্রচুর মাথা খাটাতে হয়। কিন্তু শিশুদের কখনই এ বিরক্তির কথা বলা যাবে না।তাদের সামনে সবসময় গণিতকে একটি মজার জিনিস হিসেবে তুলে ধরবেন। আজকাল বইয়ের পড়াশোনা অনেকটাই বাস্তবমুখী হয়ে পড়েছে। দৈনন্দিন জীবনের উদাহরণ দিয়ে শিশুদের পড়া বুঝানো হয়। এতে তাদের মধ্যে যে কোনো সমস্যা সমাধানের দক্ষতা খুবই ভালোভাবে বাড়ে।

২. দৈনন্দিন জীবনের সবকিছুর সঙ্গেই গণিত জড়িয়ে আছে। আপনার সন্তান যদি পড়ার টেবিলে বসে অঙ্ক করতে না চায় কোনো সমস্যা নেই। আপনি খেলতে খেলতে তাদের অঙ্ক করাতে পারেন। যেমন- তার হাতে কয়টা খেলনা আছে, কোনো কিছু রান্নার সময় কয়টি জিনিস ঢালতে হবে বা বাসায় কয়টি ফার্নিচার আছে ইত্যাদি। এতে তারা বুঝতে পারবে জীবনে কোনো কিছুই গণিতের বাইরে নয়।

৩. অঙ্ক বলতে যে শুধুই ‘নাম্বার’ বুঝায় তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন ধরনের আকার (যেমন- ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ইত্যাদি), প্যাটার্ন (যেমন- একটা ছবি যেখানে প্রথমে একটি লাল বৃত্ত আছে, এরপর নীল বৃত্ত আছে, আবার লাল একটি বৃত্ত আছে, তাহলে এরপর কী থাকতে পারে?), দুই বা তার চেয়ে বেশি জিনিসের তুলনা ইত্যাদিও কিন্তু গণিতেরই অংশ।শিশুরা যদি এগুলো ছোটবেলাতেই শিখতে পারে তাহলে পরবর্তীতে জ্যামিতি, ত্রিকোনমিতি বা জটিল সংখ্যার অঙ্কগুলো তার কাছে সহজ মনে হবে।

৪. শিশুদের সবসময় গণিত নিয়ে প্রশ্ন করবেন। যেমন- খেলতে খেলতে তার ক্ষুধা পেলো। আপনি তার হাতে চারটি বিস্কিট দিয়ে বললেন, ‘মনে করো তোমার হাতের চারটি বিস্কিটের মধ্যে একটা তুমি নিলে, আরেকটা তোমার বন্ধুকে দিলে। তাহলে তোমার কাছে কয়টি বিস্কিট থাকবে?’ এভাবে সে যত বড় হবে তত প্রশ্নের জটিলতাও বাড়াতে থাকবেন। চেষ্টা করবেন শিশু যেন নিজে নিজেই উত্তর বের করে। উত্তর সঠিক হোক বা ভুল সেটা জরুরি নয়। উত্তর বের করার জন্য সে যে মাথা খাটাচ্ছে সেটা জরুরি।তাদেরকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য হয়তো আপনি কিছু ছোটখাটো উপহারও ব্যবস্থা করতে পারেন, যেমন তার পছন্দের একটা চকলেট বা অন্য কিছু।

৫. সব শিশুই গ্যাজেট ব্যবহার করতে খুব পছন্দ করে। তাদেরকে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে দিন। সে জেনে মজা পাবে যে ভবিষ্যতে তাকে এ জিনিস ব্যবহার করে অঙ্কের উত্তর বের করতে হবে। ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে সে যে যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ ইত্যাদি করতে পারে তা জেনে সে মজা পেতে পারে।

৬. শিশুদের অঙ্ক শেখানোর জন্য কিছু ‘ম্যাথ লারনিং অ্যাপ’ রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের অঙ্কের প্রশ্ন থাকে যা শিশুরা সমাধান করে মজা পায়। সেখানে গণিত বিষয়ক গেমসও থাকে।

এই লেখাটির সর্বস্বত্ব টগুমগু কর্তৃক সংরক্ষিত। টগুমগু প্রতিষ্ঠানটি ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রেগন্যান্সি ও প্যারেন্টিং বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে যাচ্ছে। টগুমগুর নিজস্ব প্যারেন্টিং ব্লগ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অনুমতি না নিয়ে লেখাটি অন্য কোথাও প্রকাশ অথবা বাণিজ্যিক ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ।

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!