খেলার নাম ‘বাঘ ছাগল’

গ্রামীন বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় খেলা ‘বাঘ ছাগল খেলা’। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ছেলে ও মেয়ে উভয়ই এ খেলা খেলে থাকে। এ খেলাটি কোন কোন জায়গায় ‘অ্যাঙ্গা অ্যাঙ্গা খেলা’ নামেও পরিচিত।

দীপঙ্কর পালবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2018, 10:32 AM
Updated : 4 March 2018, 10:32 AM

বাঘ ছাগল খেলায় প্রথমে মাটিতে দাগ কেটে বৃত্ত তৈরি করা হয়। এরপর দল থেকে একজনকে ‘বাঘ’ নির্বাচন করা হয়। দলের বাকি খেলোয়াড়রা ‘ছাগল’ হিসেবে বৃত্তের ভেতর অবস্থান করে। বাঘের কাজ হলো বৃত্তের বাইরে থেকে বৃত্তের ভেতর আক্রমণ করা এবং একটি ছাগল ছিনিয়ে নেওয়া।

বাঘ সুযোগ পেলেই একটি করে ছাগল খাবে। ছাগল কৌশলে বাঘের পেটে যাওয়ার পরিবর্তে তাকে বন্দি করার চেষ্টা চালাবে। এভাবে বাঘ একজন একজন করে নিয়ে তার দল ভারি করে। শেষ পর্যন্ত যে ছাগল বৃত্তের ভেতরে টিকে থাকতে পারে সে পরবর্তী দানের জন্য বাঘ নির্বাচিত হয়।

ছাগদলকে আক্রমণ করার সময় বাঘ বিভিন্ন রকম কৌশল অবলম্বন করে। কোন ছাগলকে আক্রমণ করলে ছাগদলের অন্য সদস্যরা তাকে টেনে ধরে রাখে। খেলা চলতে থাকে দুই পক্ষের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে। বাঘ প্রথমে কান্নাজড়ানো কণ্ঠে বলতে থাকে, ‘অ্যাঙ্গা অ্যাঙ্গা’। এরপর ছাগলরা সমস্বরে বলে, ‘কান্দো ক্যান?’ এভাবে কথোপকথনের মাঝেই বাঘ ছাগদলকে আক্রমণ করে।

বাঘ: অ্যাঙ্গা, অ্যাঙ্গা।

ছাগদল: কান্দো ক্যান?

বাঘ: গরু হারাইছে

ছাগদল: কী গরু?

বাঘ: নাঙ্গা গরু।

ছাগদল: শিঙ্গি কী?

বাঘ: কুষ্টার আঁশ।

ছাগদল: একটা গান গাও, শুনি

বাঘ: এতি চোর, বেতি চোর

চলে আয় আমার স্যায়না চোর।

মানুষ একসময় বনে বাস করতো। তখন তাদের বন্য জীবজন্তু ও প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করতে হতো। প্রাচীন এ খেলাটিতে মানুষের সেই অরণ্যজীবনের ছায়া পড়েছে।