বাবা-মার হাত ধরে, কোলে বা পিঠে চড়ে মেলা প্রাঙ্গণ চষে বেড়ানোর এইতো সময়। স্টল থেকে স্টলে ছুটাছুটি করে হাতে তুলে নিতে হবে পছন্দের বই।
এবারের মেলায় শিশুদের জন্য এসেছে প্রচুর ভালো ভালো বই। এর মধ্য থেকে মেলায় আসা কিছু বইয়ের খবর-
বনমোরগের বুদ্ধি
গল্পের এ বইটি লিখেছেন শামসুজ্জামান খান। প্রকাশক: কালান্তর। প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ: মামুন হোসাইন। মূল্য: ১০০ টাকা।
এক গৃহস্থের বাড়িতে দুটো বনমোরগ ছিলো, তাদের মধ্যে খুব ভালো বন্ধুত্ব। মোরগ দুটো ছিলো খুব নাদুসনুদুস আর তেল চিকচিকে। তারা যে কী সুন্দর বাগ দিতো! গৃহস্থের ছেলেমেয়েরা তাদের ‘মানিকজোড়’ বলে ডাকতো আর খুব ভালোবাসতো।
একদিন কী এক কারণে ওই বাড়িতে এক দারোগা এলো। দারোগাকে খাওয়ানোর জন্য গৃহস্থ একটি মোরগ দিলো কেটে আর করে ফেললো রান্না। ছেলেমেয়েদের সে কি কান্না, মোরগটাকে তারা কিছুতেই খেয়ে ফেলতে চাইছিলো না।
এদিকে আরেকটা বনমোরগ তার সঙ্গী হারিয়ে মনের দুঃখে বনের দিকে রওয়ানা দিলো। সে এখন বনের দিকে যাচ্ছে...
চিড়িয়াখানা
শৈশব স্মৃতিকথার এ বইটি লিখেছেন কবি খালেদ হোসাইন। প্রকাশক: বাবুই, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান স্টল নাম্বার ৫৩৮ শিশু কর্নার। প্রচ্ছদ: কামরুন নাহার। মূল্য: ১৫০ টাকা।
লেখক তার ছোটবেলার এলাকা ফতুল্লাকে মনে রেখে বইটি লিখেছেন। এখন যেমন ফতুল্লা কলকারখানা ও ধুলোয় ভরে গেছে, তখন তেমন ছিলো না। ফতুল্লা ছিলো একটা সবুজ গ্রাম। আশপাশে ক্ষেত, নদী আর খাল। বাড়ির সামনেই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়ক। তার পশ্চিম পাশে খালে হিজল গাছ উঁকি মেরে আছে।
বর্ষাকালে খালের ঘোলা জলের ওপর হিজল ফুল ভেসে থাকতো, উঁকিঝুঁকি মারতো খলসে পুঁটি, ভেসে বেড়াতো মলন্দি আর কাঁকিলা মাছ। সেইসব গাছের ডালে ডালে বন্ধুদের সঙ্গে দৌড়-ঝাঁপ। দল বেঁধে মাছ ধরা, বৃষ্টিভেজা হয়ে ঘরে ফেরা...
ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ
ছড়ার এ বইটি লিখেছেন কবি ওবায়েদ আকাশ। প্রকাশক: চিত্রা প্রকাশনী, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্টল নং ১৬২। প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ: আইয়ুব আল আমিন।
বই থেকে একটি ছড়া-
‘মা ডাকছে ভাই ডাকছে
ডাকছে বাড়ির কর্তা,
নিজের বাড়ি নিয়ে আড়ি
খাচ্ছে সবাই ভূতের বাড়ি
আস্ত হরিণ ভর্তা।’
এক যে ছিলো শীত ও অন্যান্য গপ
বইটি লিখেছেন কবি মুজিব ইরম। প্রকাশক: উৎস প্রকাশন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ৯ নাম্বার প্যাভেলিয়ন।
এটি শিশুকিশোরদের জন্য আত্মজৈবনিক গদ্যের বই। বইয়ের একটি গল্প হলো ‘এ গ্রাম তোমাকে ডাকছে’।
‘স্নেহের বৃষ্টিমণি,
তুমি বড় হচ্ছো। পড়ছো। গল্প শোনছো। নানা ধরনের গল্প। তাহলে আজ তোমাকে এক গ্রামের গল্প বললে কেমন হয়, বলো তো? সেই গ্রামের গল্প, তোমার আব্বু-আম্মু যাকে ফেলে গেছেন দূরে। তুমি আরও বড় হবে। তারা তোমাকে এক স্বপ্নিল গ্রামের গল্প শোনাবে। তারাও কিন্তু একদিন তোমার মতোই ভীষণ দুষ্টু ছিলো। কি, বিশ্বাস হচ্ছে না বুঝি! আব্বু-আম্মু কি তোমার পাশেই? জিজ্ঞেস করেই দেখো...’
কাঠবিড়ালীর বিয়ে
গল্পের এ বইটি লিখেছেন জ্যোৎস্নালিপি। প্রকাশক: নন্দিতা প্রকাশ, স্টল নং ৪০৩-৪০৪। প্রচ্ছদ: মোমিন উদ্দীন খালেদ।
গল্পটিতে ১৪টি রঙিন ছবি রয়েছে। গল্পের সঙ্গে মিল রেখে গাছপালা, পশুপাখি, বন্যপ্রাণী ও তাদের নানা রকম মজা করা দিয়ে সাজানো হয়েছে বইটি। এতে শিশুদের কল্পলোক ও সেই সঙ্গে নানা গাছ, পাখি, ফুল ও প্রাণীর সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে।
ভাষাশহিদ ও বীরশ্রেষ্ঠদের গল্প
বইটি লিখেছেন রণজিৎ সরকার। প্রকাশক: অধ্যয়ন প্রকাশন, পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায়র তাম্রলিপির ১২ নম্বর প্যাভিলিয়নে। প্রচ্ছদ: রাজিব রায়। মূল্য: ২০০ টাকা।
পৃথিবীতে ভাষার জন্য লড়াই করা জাতি কেবল বাঙালিরা। এ লড়াইয়ে প্রাণ দিতে হয়েছে অনেক বাংলা মায়ের সন্তানের। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলো বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে। সম্মুখসমরে অসীম বীরত্বের স্বাক্ষর রেখে জীবন দিয়েছেন লাখো শহিদ। এর মাঝে সাত বীরশ্রেষ্ঠদের জীবন ও কর্ম নিয়ে লেখা হয়ে ভাষাশহিদ ও বীরশ্রেষ্ঠদের গল্প।