ফুল ফোটার অপেক্ষায়

ইয়েপের নিজের বাগান আছে। সে ফুল গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করলো। নিজেই মাটি খুঁড়তে শুরু করলো। এ কাজে তাকে সাহায্য করলো ইয়ান্নেকে।

তানবীরা হোসেনতানবীরা হোসেন
Published : 2 Feb 2018, 09:40 AM
Updated : 2 Feb 2018, 09:40 AM

পুরো বাগান খোঁড়া হয়ে গেলে ইয়েপের বাবা বললো- ঠিকাছে, আজ দুপুরে আমি তোমাদের সাহায্য করবো। তারপর আমরা বীজ বুনবো। ফুল গাছ লাগাবো আর গাজর। আজ দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করো।

কিন্তু ইয়েপ আর ইয়ান্নেকের আর তর সইছে না। তারা এক্ষুণি কিছু করতে চাইছে। বাবা অফিসে চলে যেতেই ইয়েপ বললো- চলো আমরা নিজেরাই ফুলের বীজ লাগাই?

ইয়ান্নেকে বললো- ঠিকাছে, কিন্তু কীভাবে লাগাতে হবে?

ইয়েপ বললো- আমি তো জানি না। তুমি জানো?

ইয়ান্নেকে বললো- আমাদের বাগানে ফুল আছে। চলো সেগুলো না হয় নিয়ে আসি।

দু’জনে মিলে তখন ইয়ান্নেকের বাসার বাগানে গেলো। সেখানে অনেক ফুল ফুটে আছে। ইয়ান্নেকে বললো- এই যে দেখো।

তারপর তারা কয়েকটা ফুল ছিঁড়লো। ইয়েপ হাতভরে ফুল ছিঁড়লো। দু’জনে মিলে অনেক ফুল ছিঁড়লো। এগুলো নিয়ে এখন তারা ইয়েপের বাগানে গেলো।

ইয়েপ বললো- দেখো, আমরা এখন ছোট ছোট গর্ত করবো। তারপর গর্তের ভেতর গাছগুলো ঢুকিয়ে দেবো। তারপর আবার গর্তগুলো বন্ধ করে দেবো।

উফ! কি পরিশ্রমই না তারা করছে। প্রথমে এক সারি হলুদ ফুল লাগালো। তারপর আরেক সারি বেগুনি ফুল।

ইয়ান্নেকে বললো- এই যে দেখো। তোমার বাগান পুরোই তৈরি। হুররাআআ...

বাবা বাড়ি আসতেই ইয়েপ ডাকলো- বাবা, আমরা ফুল গাছ লাগিয়েছি। আর তাতে এখন ফুলও এসে গেছে।

তাই নাকি? বললো বাবা, চলো তো দেখি।

কিন্তু ওরা যখন দেখতে গেলো...। ওহ হো, সব ফুল ঘুমাচ্ছিলো। কিছু কিছু তখনও ফুটে ছিলো। কিন্তু এখন আর সুন্দর লাগছে না দেখতে।

ইয়ান্নেকে কাঁদতে শুরু করে দিলো। হেঁচকি তুলতে তুলতে বললো, বাগানটা কি সুন্দর ছিলো।

বাবা বললো- হু, তা ঠিক। কিন্তু তোমরা যদি নিজেদের বাগানে নিজস্ব ফুল চাও তাহলে প্রথমে তোমাদেরকে ফুলের বীজ বুনতে হবে। এভাবে গুঁজে দিলে তো হবে না। চলো, এখন আমরা ঠিক করে কাজটা করি।

তারা ফুলগুলো সব তুলে ফেললো। বাবা দেখিয়ে দিলো কী করে বীজ বুনতে হয়। বাগানটা এখন আবার পুরো খালি। কিন্তু বাবা বললো- শুধু একটু অপেক্ষা করো, দেখবে বাগান আবার সবুজ হয়ে উঠেছে।

আর এখন তারা সে জন্য অপেক্ষা করছে।

অনুবাদকের কথা: পঞ্চাশের দশকে আনি এম জি স্মিড নামে এক লেখক ওলন্দাজ দৈনিক ‘হেত পারোল’ এ ইয়েপ আর ইয়েন্নেকে নামে দুই শিশুকে নিয়ে নানা ধরণের গল্প লিখতেন। সমবয়সী দু’জন শিশু দু’জনের প্রতিবেশী। ‘ইয়েপ আর ইয়েন্নেকে’ শিরোনামে দুই শিশুর দৈনন্দিন জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে গল্প লিখতে লাগলেন স্মিড। এ সিরিজের শেষ গল্পটি ছাপা হয় ১৯৫৭ সালে। সিরিজের একটি অধ্যায় হলো ‘ফুল ফোটার অপেক্ষায়’।

এই লেখকের আরও লেখা