কেউ একজন তাকে দেখতে পেয়ে নিয়ে আসেন পশুপাখি রক্ষা সংক্রান্ত বেসরকারি সংস্থা গুয়েলফ হিউমেইন সোসাইটির কাছে। সংস্থার কর্মচারীরা বেড়ালটিকে স্কেন করে দেখতে পেলেন তার ত্বকের ভেতর রয়েছে একটি মাইক্রোচিপ!
মাইক্রোচিপ হলো প্রাণীর চামড়ায় লুকনো চাউলের দানা আকৃতির ক্ষুদ্র একটি কম্পিউটার কুচি, এর মধ্যে তার পরিচিতি ও মালিকের ঠিকানা রয়েছে। উত্তর আমেরিকার অনেক দেশেই পোষা প্রাণীর ক্ষেত্রে এ মাইক্রোচিপের ব্যবস্থা রয়েছে, যেন সে হারিয়ে গেলে ফেরত পাওয়া যায়।
কর্মচারীরা মাইক্রোচিপে পাওয়া তথ্যে জানলেন বেড়ালটির নাম ‘বোবো’। এবার তারা দেখতে চাইলেন আগে সে কোথায় ছিল। ওটাতে তারা এমন কিছু খুঁজে পেয়েছেন যা তাদের অবাক করেছে।
এটিতে দেখা যাচ্ছে, তিন হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এসেছে বোবো। চার বছর আগে, ২০১৩ সাল থেকেই সে আর সেখানে নেই।
গুয়েলফ হিউমেইন সোসাইটি বোবোর মালিকদের নাম-ঠিকানা বের করে ক্যালিফোর্নিয়ায় তাদের খবর দিয়েছে। তারা বোবোর বর্তমান অবস্থান জেনে অবাক হলেন, সে এতদূর গেলো কীভাবে! আর এতো বছর পর!
বোবোর জন্য বছরখানেক অপেক্ষার পর তারা ইতোমধ্যে নতুন একটা পোষা বেড়ালও নিয়েছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়াটসনভ্যালের বাসা থেকে বোবো হারিয়ে যাওয়ার পর তার অপেক্ষায় ছিলেন মালিকেরা। স্থানীয় শান্তা ক্রুজ কাউন্টি অ্যানিম্যাল শেল্টারে একটি হারানো বিজ্ঞপ্তিও জমা দিয়েছিলেন।
হিউমেইন সোসাইটিকে তারা জানান, বোবো গাড়িয়ে চড়তে পছন্দ করতো। সে প্রায়ই গাড়িয়ে চড়ে বসতো যদি কেউ তার গাড়ির দরজা খোলা রাখেন। বোবো হয়তো এমনি করে পশুপ্রেমী কারও গাড়িতে চড়ে এতোদূর চলে গিয়েছে। কিংবা চালক হয়তো জানতোও না তার গাড়িতে একটা বেড়াল উঠে বসে আছে!
কিন্তু সমস্যা হলো অন্য জায়গায়। বোবোর মালিকদের কাছে পাসপোর্ট ছিলো না। তাই তারা বোবোকে নিতে কানাডায় যেতে পারেননি। তারা জানতো না কীভাবে বোবোকে ফেরত পাওয়া যাবে।
এ অবস্থায় সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন কানাডার পশু নিরাপত্তা দপ্তরের কর্মকর্তারা। তারা বোবোকে যুক্তরাষ্ট্রের বুফেলো শহরে নিয়ে আসেন। এদিকে বোবোর মালিকেরা চলে আসেন বুফেলোতে।
চার বছর পর তারা ফিরে পেয়েছিলেন তাদের প্রিয় পোষা বেড়ালকে। ‘বোবো’ ফিরে এসেছে ক্যালিফোর্নিয়ায় তার পুরনো বাড়িতে।
সূত্র: গুয়েলফ হিউমেইন সোসাইটি, ওন্টারিও, কানাডা