ঝাউয়ের শাখায় শন শন শন
মাটিতে লাটিম বন বন বন
বাদলার নদী থৈ থৈ থৈ
মাছের বাজার হৈ হৈ হৈ।
ঢাকিদের ঢাক ডুমডুমাডুম
মেঘে আর মেঘে গুড়ুমগুড়ুম
দুধকলাভাত সড়াত সড়াত
আকাশে বাজে চড়াৎ চড়াৎ।
ঘাস বনে সাপ হিস হিস হিস
কানে কানে কথা ফিস ফিস ফিস
কড়কড়ে চটি চটাস চটাস
রেগেমেগে চড় ঠাস ঠাস ঠাস।
খোপের পায়রা বকম বকম
বিয়েমজলিশ গম গম গম
ঘাটের কলসি বুট বুট বুট
আঁধারে ইঁদুর কুট কুট কুট।
বেড়ালের ছানা ম্যাও ম্যাও ম্যাও
দু দিনের খুকু ওঁয়াও ওঁয়াও।
কবি আহসান হাবীবের আজ জন্মদিন। ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পিরোজপুরের শংকরপাশা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহন করেন। শিশুদের জন্য লেখা তার বইগুলো হলো- ‘জোছনা রাতের গল্প’, ‘ছুটির দিন দুপুরে’, ‘বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’, ‘ছুটির দিন দুপুরে’, ‘রেলগাড়ি ঝমামমে’, ‘রাণীখালের সাঁকো’, ‘ছোট মামা দি গ্রেট’, ‘পাখিরা ফিরে আসে’ ইত্যাদি।
আহসান হাবীরের আরেকটি বিখ্যাত ছড়া হলো- ‘মেঘনা পাড়ের ছেলে’।
আমি মেঘনা পাড়ের ছেলে
আমি মেঘনা নদীর নেয়ে।
মেঘনা নদীর ঢেউয়ের বুকে
তালের নৌকা বেয়ে
আমি বেড়াই হেসে খেলে
আমি মেঘনা পাড়ের ছেলে।
মেঘনা নদীর নেয়ে আমি মেঘনা পাড়ে বাড়ি
ইচ্ছে হলেই এপার থেকে ওপারে দেই পাড়ি।
তালে তালে তালের নৌকা
দুহাতে যাই বেয়ে
আমি মেঘনা নদীর নেয়ে।
পাহাড় সমান ঢেউয়ের বুকে নৌকো আমার ভাসে
মেঘমুলুকের পাহাড় থেকে ঝড়ের ঝাপটা আসে
মাথার ওপর মুচকি হাসে
বিজলি নামের মেয়ে
আমি মেঘনা নদীর নেয়ে।
আমার ঢেউয়ের সঙ্গে গলাগলি ঢেউয়ের সঙ্গে খেলা
ঝড়ের সঙ্গে লড়াই করে কাটাই সারাবেলা।
দেশ থেকে যাই দেশান্তরে
মনের নৌকা বেয়ে
আমি মেঘনা নদীর ছেলে
আমি মেঘনা নদীর নেয়ে।
তার অন্যান্য বিখ্যাত ছড়াগুলো হলো- ‘স্বদেশ’ (এই যে নদী নদীর জোয়ার নৌকা সারে সারে), ‘রূপকথা’ (খেলাঘর পাতা আছে এই এখানে), ‘ইচ্ছা’ (মনা রে মনা কোথায় যাস) ও ‘জোনাকিরা’ (তারা একটি দুটি তিনটি করে এলো) ইত্যাদি।
কবি আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন ১৯৮৫ সালে।