মানুষ কেন কাঁদে?

আমরা ভাবি, মানুষ কেবল দুঃখ পেলেই কাঁদে।

কিডস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2017, 12:03 PM
Updated : 24 Nov 2017, 12:03 PM

না, তা নয়। কান্নার রয়েছে নানা কারণ। বিশ্বাস হচ্ছে না! তাহলে চলো জানি সেগুলো কী ও কেমন!

তিন ধরণের কান্না বা চোখের পানি রয়েছে।

১. বেসাল কান্না

২. রিফ্লেক্স কান্না ও

৩. আবেগের কান্না

বেসাল কান্না

এ ধরণের কান্না কাঁদতে হয় না, সব সময় আমাদের চোখের ভেতরেই থাকে। এটা এমন এক ধরণের পিচ্ছিল তরল যা আমাদের চোখকে সব সময় ভেজা রাখে। এর কারণেই আমাদের চোখ কখনো একেবারে শুকিয়ে যায় না।

এক গবেষণায় জানা যায়, আমাদের চোখ প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ আউন্স বেসাল কান্না তৈরি করে।

রিফ্লেক্স কান্না

কখনো তোমার মা’কে পেঁয়াজ কাটতে দেখেছো কিংবা নিজে কখনও পেঁয়াজ কেটেছো? চোখ দিয়ে কেমন গরগর করে পানি চলে আসে, তাই না!

রিফ্লেক্স কান্না হলো এমন। এর কাজ হলো আকস্মিক কোন আঘাত, চুলকানি, যন্ত্রণা বা সংবেদনশীল কোন বস্তু থেকে চোখকে রক্ষা করা। এ কান্না কাঁদতে হয় না, প্রয়োজনের সময় নিজ থেকেই টপটপ করে পড়তে শুরু করে।

ধুলো, প্রচণ্ড বাতাস বা ধোঁয়ার কারণে রিফ্লেক্স কান্না আসে। কর্নিয়ার সংবেদী স্নায়ুর মাধ্যমে এ কাজটি চোখ নিজে থেকেই সেরে নিতে পারে।

বিপদ বা আঘাতের সময় এ সংবেদী স্নায়ু সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং মস্তিষ্কে সংবাদ পাঠায়। মস্তিষ্ক সংবাদ পেয়ে চোখের পাতায় দ্রুত বিশেষ হরমোন পাঠায়। আর তাতেই রিফ্লেক্স কান্না তৈরি হয়।

আবেগের কান্না

এ কান্না শুরু হয় সেরেব্রাম থেকে। সেরেব্রাম হলো মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ, এজন্য সেরেব্রামকে বলা হয় ‘গুরুমস্তিষ্ক’। সেরেব্রামেই থাকে আমাদের সব ধারণা, কল্পনা, চিন্তা-ভাবনা, মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত।

অন্তঃক্ষরা তন্ত্র আমাদের চোখে হরমোন পাঠায়। এটিই জল হয়ে চোখের ভেতরে থাকে। যখনই আমরা কান্না, বেদনা, আঘাত বা শোকে থাকি তখন এ জল কান্না হয়ে চোখ দিয়ে পড়তে শুরু করে। 

কান্না নিয়ে চারটি মজার তথ্য

১. এক গবেষণায় দেখা গেছে একজন নারী প্রতিমাসে ৫.৩ বার কাঁদে, একজন পুরুষ কাঁদে ১.৪ বার।

২. আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে একটা শিশু প্রতিদিন ১ থেকে ৪ ঘণ্টা কাঁদে।

৩. যদি কান্নার প্রতিমাণ বেড়ে যায় তাহলে নাক দিয়েও কান্না বের হয়ে আসতে পারে। এতে করে সাময়িকভাবে নাক বন্ধ হয়ে যায়।

৪. পেঁয়াজ কাটলে আমরা কাঁদি কেনো! কারণ, পেঁয়াজ কাটলে এর ভেতর থেকে প্রোপেন ইথিয়ল সালফার অক্সাইড গ্যাস বের হয়ে আসে। এটি বাতাসে ভেসে আমাদের চোখের সংস্পর্শে চলে আসে, ফলে আমাদের চোখ থেকে জল পড়ে।