ডাইনোসরের ডিম

বোলান্ড হলো ছোট্ট এক ডাইনোসর। সে তার মা-বাবার সঙ্গে এক জলার ধারে বনে বাস করে।

মাজহার সরকারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2017, 12:43 PM
Updated : 22 Nov 2017, 12:43 PM

বনের ভেতর বোলান্ডের আরও অনেক বন্ধু আছে। সে তার বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিদিন খেলে।

কিন্তু একজনের সঙ্গে বোলান্ড খেলাধুলা করে না। তার নাম টাইরন।

টাইরন হলো খুবই দুষ্ট ডাইনোসর। অন্য ছোট্ট ডাইনোসররাও তার ওপর মহাবিরক্ত।

টাইরন সব সময়ই বোলান্ডকে জ্বালাতন করে। বোলান্ড যেখানে যায় তার পিছুপিছু টাইরনও যায়। বোলান্ডের প্রিয় খাবার হলো ডিমের স্যান্ডউইচ। কিন্তু মাঝেমাঝে বোলান্ডের ডিম চুরি করে খেয়ে ফেলে টাইরন।

তাই বোলাল্ড সব সময়ই টাইরনকে ভয় পায়। তক্কে তক্কে থাকে কখন আবার টাইরন চলে আসে! বোলান্ড তার বন্ধুদের সঙ্গে টাইরনের দুষ্টামি নিয়ে সব জানায়।

টাইরন যেনো আর দুষ্টামি না করে বন্ধু হয়ে যায়, তাই একদিন বোলান্ড একটা বুদ্ধি আঁটলো। সে টাইরনকে দুটো আইস ক্রিম উপহার দিলো।

দুষ্ট টাইরন বোলান্ডের কপালে সে আইস ক্রিম ছুঁড়ে মারলো আর হা হা হা করে হাসতে লাগলো। এতে বোলান্ড অবাক হয়ে গেলো।

এতে ব্যথা পেলো বোলান্ড, আর কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে এলো। তারপর বন্ধুদের ডেকে সবকিছু জানালো।

বন্ধুরা বোলান্ডকে অনেক সান্ত্বনা দিলো আর দুশ্চিন্তা না করতে বললো।

কিন্তু দুষ্ট টাইরনের কাণ্ডকীর্তি থামলো না, সে বোলান্ডকে বিরক্ত করে যেতেই লাগলো। সে আবার বোলান্ডের প্রিয় ডিম চুরি করে পালিয়ে গেলো।

বোলান্ড যতই টাইরনকে এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করে, টাইরন ততোই তার সামনে এসে পড়ে। টাইরনের জ্বালায় বোলান্ড রাতে ঘুমোতেই পারে না, কি জানি কখন কী অদ্ভুত কাহিনী করে বসে! আবার কোন খারাপ আচরণ করে বসে!

অবশেষে বন্ধুদের পরামর্শে টাইরনকে এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিলো বোলান্ড।

একদিন টাইরন অন্যান্য দিনের মতো বোলান্ডের পিছু পিছু যেতে লাগলো এবং তাকে জ্বালাতন করতে লাগলো।

বোলান্ড এমন ভাব নিলো যেন সে টাইরনকে দেখতেই পায়নি! কিছু শুনতেই পায়নি! কিন্তু টাইরন তার লম্বা লেজ দিয়ে বোলান্ডকে দিলো বড় এক ধাক্কা।  

সে সময় বোলান্ড তার প্রিয় ডিমের স্যান্ডউইচ খাচ্ছিলো। টাইরণ ডিমের স্যান্ডউইচ কেড়ে নিলো আর চোখের পলকে নিজের মুখে পুরে খেয়ে নিলো। বোলান্ড কাঁদতে কাঁদতে ‘আমার ডিম! আমার ডিম! আমার ডিম! বলতে বলতে বেরিয়ে গেলো।

কিছুক্ষণ পর বোলান্ড যখন আরেকটা ডিমের স্যান্ডউইচ খেতে যাবে, টাইরন এসে ছোঁ মেরে সেটা কেড়ে নিলো আর মুহূর্তে খেয়ে ফেললো।

কিন্তু খাবার সময় টাইরনের মুখ ও গলা জ্বলতে লাগলো। কারণ ডিমের ভেতরটা ছিলো অনেক গরম ও প্রচণ্ড ঝাল। টাইরনকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য বোলান্ড ডিমের ভেতর একটা লাল ঝাল মরিচ পুরে রেখেছিলো।

তাই খেয়ে দুষ্ট টাইরন ‘পানি! পানি! পানি!’ করে দৌড়ে পালালো। সে আর কোনদিন বোলান্ডের সঙ্গে লাগতে এলো না।

অনুবাদকের কথা: ‘টাইরন দ্যা হরিবল’ শিরোনামে হ্যান্স উইলহেমের লেখা এ গল্পের বইটি

১৯৯২ সালে নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত হয়। শিশুসাহিত্যিক ও শিল্পী হ্যান্স উইলহেম শিশুদের জন্য ২০০ এর বেশি বই লিখেছেন। বিশ্বের ত্রিশটিরও বেশি ভাষায় এগুলো অনূদিত হয়েছে এবং অ্যানিমেশন বা টিভি সিরিজ হিসেবে প্রচারিত হয়েছে।