সূর্য ভাল্লুকের বাড়ি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে। অর্থাৎ, চায়নার দক্ষিণ অংশ, থাইল্যান্ড থেকে শুরু হয়ে একদম অস্ট্রেলিয়ার আগ পর্যন্ত যেখানেই বন জঙ্গল আছে সেখানেই এলাকায় সূর্য ভাল্লুকদের বাড়ি।
সূর্য ভাল্লুক শুনে যদিও মনে হতে পারে তাদের আকার বিশাল কিছু আসলে তা নয়। ওরা বরং অন্য ভাল্লুকদের তুলনায় একটু ছোটখাটোই হয়। মাত্র ৫ ফুটের মতো উচ্চতা। আর ওজন হয় ১৫০ পাউন্ডের ধারে কাছে। আমেরিকান ভাল্লুকদের গড় আকৃতি সূর্য ভাল্লুকদের প্রায় দ্বিগুণ।
আকার ছোট হওয়ায় অবশ্য সূর্য ভাল্লুকদের একদিকে ভালোই হয়েছে। ওরা খুব গেছো স্বভাবের হয়। তুলনা মূলক কম ওজন নিয়ে ওরা তরতর করে গাছে উঠে যেতে পারে। এ ভাল্লুকের প্রজাতিটা যেমন শক্তিশালী তেমনিই চটপটে।
গাছে সূর্য ভাল্লুকদের মূলত উঠতে হয় খাওয়ার জন্য। তবে ওরা আসলে গাছেই বাস করে। গাছের একদম মগডাল পাড় করে নতুন পাতার কুড়ির সারি দিয়ে যে গাছের একদম উপরের ভাগ থাকে সেটাকে বিছানা বানিয়ে শুয়ে পরে।
সূর্য ভাল্লুকদের খাওয়াও খুব অভিনব। ওরা সর্বভুক, মানে উদ্ভিদ প্রাণী উভয়ই খায়। সূর্য ভাল্লুকদের প্রিয় খাবারের তালিকায় আছে পোকামাকড়, টিকটিকির মতো ছোট সরীসৃপ, বেরি জাতীয় সব ফল তবে ওদের সবচেয়ে প্রিয় খাবার হচ্ছে মধু। এসব খাওয়ার জন্য সূর্য ভাল্লুকরা শ্বাস টেনে বড় করে মুখ হা করে। তারপর ওদের ১০ ইঞ্চি লম্বা জিবটা বের করে। ওদের এই জিব অন্য সব প্রাণী তো বটেই অন্য সব ভাল্লুকদের চেয়েও বড়। প্রথমে তারা মোচাকে একটা কামড় দিয়ে সেটা ছিঁড়ে আনে এরপর জিব ঢুকিয়ে ইচ্ছেমতো মধু চেটে খায়। মধুর সঙ্গে মৌমাছিদেরও চেটে খেয়ে ফেলতে পারে। শুধু মৌমাছি না অন্য সব পোকাদের চেটে এনে একদম ওদের বাড়ি পরিষ্কার করে ফেলে ছোট-খাটো এই ভাল্লুক প্রজাতিটা।
সূর্য ভাল্লুকদের এই প্রজাতিটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে। চিরিয়াখানার সুরক্ষিত পরিবেশে ২৫ বছর বাঁচতে পারা এই প্রাণীটি পৃথিবীর বুকে তাদের অস্তিত্ব বেশিদিন ধরে রাখতে পারবে না মানুষ যদি তাদের প্রতি সহায় না হয়।