ডি এন এ’র দিন

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2017, 10:50 AM
Updated : 25 April 2017, 10:50 AM

ডি এন এ কী?

ডি এন এ কী এটা একটা বিরাট বিষয়। তবে আমাদের মতো ছোটদের বুঝার মত করে বললে বলতে হবে, ডি এন এ খুব ছোট্ট একটা জিনিস। বাস করে প্রতিটা জীবিত জীবের শরীরের কোষের ভিতরে। তবে কোষের মধ্যেই যে বাস করে তা নয়। আমরা যদি শরীরকে একটা বিল্ডিং ভাবি আর কোষগুলোকে এক একটা ইট। তাহলে ডি এন এ হলো সেই ইটের একটি কণা। শুধু কণা বললেও আসলে বেশি বলা হয়। কারণ কোষের মধ্যে রাইবোজোম থাকে। সেই রাইবোজোমে ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড থাকে যাকে ছোট করে আমরা বলি ডি এন এ।

ডি এন এ’র কাজ কী?

ডি এন এ’র কাজ হলো বংশগতিকে ধারণ করা এবং জীবের বংশধরদের মধ্যে তা বহন করা। বিরাট কঠিন বিষয়। তবে এইটাকে আমরা একজন প্রাণীর প্রাণ বলতে পারি। এর উপাদানগুলোর বিভিন্ন অনুপাতের কারণে জীবে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। বাব্বা! বিষয়টা কিন্তু খুব কটমটে, বলেই কেমন আর দাঁত নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে!

ডি এন এ দেখতে কেমন হয়?

ডি এন এ’র সবচেয়ে সুন্দর বিষয় হচ্ছে ডি এন এর গড়ন। ডি এন এর গড়ন খুবই মজার। অনেকটা একটা প্যাঁচানো সিঁড়ির মতো। এর দুইদিকে দুইটি প্যাঁচানো কাঠামোর মাঝখানে উপাদানগুলো স্তরে স্তরে সাজানো থাকে এমন গড়নের কারণে এটি সহজেই ভাজ হয়ে সংকুচিত হয়ে কিছুর মধ্যে থাকতে পারে। আই গড়ন না হলে কিন্তু ডি এন এর কোষে থাকাই হতো না। কারণ মানুষের গড় উচ্চতাই হয় সাড়ে পাঁচ ফুটের মতো। এদিকে এক একটি ডি এন এ’ ই ছয় ফুটের উপরে লম্বা হয়। এমন ভাজ করা গড়নের না হলে হতো বলো? এই ভাজ করা গড়নটার নাম বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন, ডাবল হ্যালিক্স মডেল।

আজ কেন ডি এন এর দিন?

১৯৫৩ সালে এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখে নেচার নামে একটি জার্নালে সর্বপ্রথম এই ডি এন এ এবং এর ডাবল হ্যালিক্স মডেলের কথা প্রকাশিত হয়। এর আগে বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন আর ফ্রান্সিস ক্রিক অনেক সাধনার পরে যে এই মডেলের কথা আবিষ্কার করেছিলেন। এত বিশাল সময়কে তো আর উল্লেখ করা সম্ভব নয়, তাই এই একটি দিন বেছে নেওয়া হয় সেই বিশাল গবেষণার প্রতি সম্মান জানানোর জন্য।

২০০২ সালে এই এস কংগ্রেস এই দিনটি উৎযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু এই মডেলের আবিষ্কারের ফলে যেহেতু সারা বিশ্বে মলিকিউলার বায়োলজির মানে, ক্ষুদ্র জিনিসের জীবনবিজ্ঞান অনেক উন্নতি লাভ করে তাই সারা বিশ্বেই মানুষ এটিকে উৎযাপন করতে পারে।

কীভাবে উৎযাপন করা যায়?

ডি এন এ দিবস আমাদের মতো ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের হিসেবে অনেক বড় বিষয়। তবে তাতে কী? আজকে আমরা ছোট বলে কী বড় হবো না? তাহলে আজকে নাহয় ছোট করেই ডাবল হ্যালিক্স মডেলের কথা জানি। এই যে বললাম কোষ কোষের ছবিও দেখা যায়, সেখানে রাইবোজোম দেখতে কেমন, তার কোথায় ডাবল হ্যালিক্স হয়ে ডি এন এ লুকিয়ে থাকে তা দেখা যায়। ইউটিউবে খুঁজে খুঁজে ডি এন এর ত্রি মাত্রিক ছবিও দেখা যায়।

এত কিছু দেখে নিজে নিজে কিছু আঁকাও যায়। আর দিন শেষ হয়ে গেলেও যেটা মনে করে রাখতে হবে তা হলো, আমাদের আশেপাশে অনেক অনেক অজানা জিনিস আছে, সেগুলো আমাদের জানতে হবে, সেগুলোর রহস্যের জট খুলতে হবে। আর তার জন্য আমাদের অনেক অনেক পড়তে হবে আর ভাবতে হবে।

এই যে আমাদের এত জ্ঞান তা কিন্তু আমাদের সঙ্গে শেষ হয়ে যাবে না। আমাদের ডি এন এ’র তথ্য ঠিক আমাদের পরের প্রজন্মের কাছে থেকে যাবে। এভাবেই কিন্তু পৃথিবী সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।