কথা জড়িয়ে দেওয়া বাক্য

আচ্ছা তোমরা কি খুব দ্রুত পাঁচবার “পাখি পাকা পেঁপে খায়” এ কথাটা বলতে পারবে? আচ্ছা তাহলে শুরু করা যাক এক. পাখি পাকা পেঁপে খায়, দুই পাখি পাপা পেঁপে খায়, তিন. পাখি কাকা কেকে খায়… … হল তো উচ্চারণ! দ্রুত বলতে গিয়ে দুইবারেই একদম পেঁচিয়ে পরে ধপাস!

>>মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2016, 02:07 PM
Updated : 8 Nov 2016, 02:07 PM

বাক্য বা প্রবাদ দিয়ে বানানো এমন জড়িয়ে যাওয়া কথাগুলো কম বেশি সব ভাষাতেই আছে। ইংরেজিতে এই বাক্যগুলোকে বলে Tongue Twister. মানে যে বাক্য জিহ্বাকে পেঁচিয়ে ফেলে। ইংরেজি ভাষার একটা খুব জনপ্রিয় Tongue Twister হল, she sells sea-shells on the sea-shore। এটা ব্রিটিশ একজন গীতিকার নাম তার টেরি সুলিভান লিখেছিলেন মেরি অ্যানিং নামে একজন জীবাশ্ম সংগ্রহকারীকে নিয়ে। তবে এখান থেকে Tongue Twister আসেনি। Tongue Twister বহু আগে থেকেই সব ভাষার মানুষ নিজ নিজ মতো করে বলে আসছে।

বাংলা ভাষায়ও এমন বহু বাক্য আছে যেমন—

১। পাখি পাকা পেঁপে খায়।

২। বাবলা গাছে বাঘ ঝুলে।

৩। জলে চুন তাজা, তেলে চুল তাজা।

৪। চাচা চাচা চটা চেঁচোনা।

৫। বার হাড়ি রাবড়ি বড় বাড়াবাড়ি।

৬। গড়ের মাঠে গরুর গাড়ি গড়গড়িয়ে যায়।

৭। কাচা গাব পাকা গাব।

৮। কত না জনতা জানালো যাতনা যতনে।

এমন আরও অনেক আছে।

এ ধরণের বাক্যগুলো আসলে শব্দ নিয়ে খেলা করতে বা বাচ্চাদের উচ্চারণ ঠিক করতে ব্যবহৃত হয়। তবে, বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন এ শব্দগুলো উচ্চারণ করতে গেলে আমরা কেন গুলিয়ে যাই।

আমরা যখন কথা বলি তখন আমাদের জিহ্বা, ঠোঁট, মুখের তালু, চোয়াল এগুলো ব্যবহৃত হয়। মস্তিষ্কের যে অংশ এই কথা বলার কাজটা নিয়ন্ত্রণ করে তার নাম হল, ভেনটরাল সেনসরিমোটর করটেক্স বা ventral sensorimotor cortex (vSMC)। একই রকমের বা কাছাকাছি উচ্চারণ জটিল বাক্য পরপর উচ্চারণ করতে গেলে একবার উচ্চারণের পরে সেটার রেস থেকে যায়, খুব দ্রুতই আবার কাছাকাছি কোনো ধ্বনি উচ্চারণ করতে গেলে মস্তিষ্কের ভেনটরাল সেনসরিমোটর করটেক্স তরঙ্গ প্রবাহে একটা বাধা আসে, ফলে আমাদের কথা জড়িয়ে যায়।

কথা জড়িয়ে যাক অথবা না যাক, উচ্চারণ অনুশীলন করতে বা নিছকই মজা করতে এভাবে বিভ্রান্তিকর শব্দ কিন্তু আমরা করতেই পারি। অনেক ভাষায় এ রকম শব্দ নতুন করে তৈরি করাও হয়। আমরাও চাইলে একটা দুটো বানিয়েই ফেলতে পারি।