কুংফু পান্ডা-৩

বারুদ রাজ শ্যাং এর সঙ্গে যুদ্ধে জিতে গিয়ে, পিস ভ্যালির লোকজনের আদরে আহ্লাদে, বাবা মিঃ পিং এর দোকানের নুডলস খেয়ে– ডাকাতদের সঙ্গে যুদ্ধ করে ফিউরিয়াস ফাইভের সঙ্গে পু-এর তোফা দিন কাটছিল।

আনোয়ারুল ইসলাম খানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2016, 10:33 AM
Updated : 12 Oct 2016, 10:33 AM

এমন সময় হঠাৎ একদিন তার দেখা হয়ে গেলো তার বাবার সঙ্গে। উহু যা ভাবছো তা নয়। পিং আসলে পুয়ের আসল বাবা নয়। পুয়ের আসল বাবা হল, লি। পুয়ের মতোই দেখতে একটা পান্ডা।

লিয়ের কাছে পু জানতে পারল পান্ডারা সবাই শেষ হয়ে যায়নি। এখনও তারা বহাল তবিয়তে বেঁচে আছে গোপন একটি গ্রামে। নিজের মানুষদের কথা জানতে পেরে আনন্দে আটখানা পু তার বাবাকে নিয়ে গেলো জেড প্যালেসে ফিউরিয়াস ফাইভ আর শিফুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে।

এদিকে স্পিরিট জগতের এক ভয়াল মনস্টার কাই আক্রমণ করে বসলো মাস্টার উগওয়েকে। উগওয়েকে মনে আছে তো, সেই যে ধীর স্থির বুদ্ধিমান কচ্ছপ মাস্টারটি? যিনি মোটা আলসে পুয়ের মধ্যে অপার সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছিলেন।

কাই বাগে পেয়ে উগওয়ের চি বা আত্মার শক্তিকে বন্দী করে নিলো নিজের বেল্টের সঙ্গে। আর মাস্টার উগওয়ের শক্তিকে ব্যাবহার করে সে ফিরে এলো মর্ত্যে।

খবর পেয়ে– মাস্টার শিফু পোকে জানালেন একমাত্র চি-এর বিশেষ কুংফু টেকনিকই পারে কাইকে পরাজিত করতে, যেমন করেছিলেন মাস্টার উগওয়ে অনেক অনেক বছর আগে। এই কুংফু তিনি শিখেছিলেন পান্ডাদের এক গোপন গ্রামে। পু এর বাবা লি বললেন, সে পু কে শিখিয়ে দিবে কীভাবে এই কুংফু চি ওয়ারিয়র হতে হয়, কাই এর সঙ্গে লড়াই করতে হয়।

পু তার বাবার সঙ্গে শাংগ্রিলা পার হয়ে চায়নার গভীরে পান্ডাদের এই গোপন গ্রামে রওনা দেয় কুংফুর এই বিশেষ বিদ্যা শিখার জন্য।

এদিকে কাই মর্ত্যলোকে ফিরে প্রথমেই আক্রমণ করে বসলো জেড প্যালেস। ভেঙ্গে গুড়ো করে দিলো জেড প্যালেসের লাইব্রেরি। এমনকি বন্দি করে নিলো মাস্টার শিফুর আত্মাও। একে একে বন্দী হলো মাংকি, ক্রেন আর ম্যানটিসের আত্মাও। একের পর এক কুংফু মাস্টারের শক্তি ভরা আত্মা দখল করে করে অসীম শক্তি নিয়ে কাই যেন ধ্বংস করে দেবে সমস্ত চায়না! টাইগ্রেস কোনোক্রমে জান বাঁচিয়ে এই খবরটি পৌঁছে দেয় পুয়ের কাছে সেই গোপন গ্রামে।

এদিকে পু যে এখনো কিছুই শিখতে পারেনি! পুয়ের গ্রামের লোক সবাই পুয়ের মতোই সহজ সরল আর মজাদার। এদের বাঁচাতে হলে এখন পুকে এখন গোপন শিক্ষা বাদ দিয়ে উল্টো ওদেরই শিখাতে হবে আত্মরক্ষা করার কুংফু।

এই নিয়ে রমরমা মজার এক গল্প কুংফু পান্ডা ৩।।

বরাবরের মতো এবারো পো এর কণ্ঠ দিয়েছেন জ্যাক ব্ল্যাক। টাইগ্রেসের কণ্ঠ দিয়েছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি আর মাংকি হলেন আসল কুংফু মাস্টার জ্যাকি চ্যান। সবচে মজার কথা হচ্ছে, কুংফু পান্ডা ৩ এ কয়েকটি ছোট পান্ডাদের কণ্ঠ দিয়েছে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির চার সন্তান- নক্স, জাহারা, শিলোহ এবং প্যাক্স।

কুংফু পান্ডা ৩ মুক্তি পেয়েছে এই বছরের প্রথম দিকে, জানুয়ারির ১৬ তারিখ।

কুংফু পান্ডা বানাতে গিয়ে নির্মাতারা প্রথমেই চলে যান চায়নার চেংদু প্রভিন্সের পান্ডাদের আবাসস্থলে। সেখানে গিয়ে তারা দেখেন পান্ডারা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে স্রেফ নিজেকে গড়িয়ে দেয় ঢালু জায়গায়।  মজা পেয়ে পরে নির্মাতারা এ ধারনাটা পরে ব্যবহার করেন কুংফু পান্ডা-৩ এ ।

যারা কুংফু পান্ডা-৩ দেখবে, তাদের কে জানিয়ে দেই কয়েকটা খুব মজার আর গোপন তথ্য। যারা কাই এর চি এর বেল্টটা খুব মনোযোগ দিয়ে দেখবে তারা কিন্তু দেখতে পাবে সেখানে টাই লং এর চি ও বন্দী হয়ে আছে এখনও। তার মানে পু যখন “উওশি ফিঙ্গার” নামের কৌশল দিয়ে স্পিডুস্ক মেরে টাই লং কে হারিয়ে দেয়- টাই লং আসলে গিয়ে বন্দী হয়ে পড়েছিলো স্পিরিট জগতে।

কুংফু পান্ডার এই তৃতীয় সিকুয়েলে প্রথমবারের মতো টাইগ্রেসকে দেখা যায় ভিন্ন বেশে।

প্রথম দুই সিকুয়েল থেকে কুংফু পান্ডা-৩ এর অ্যানিমেশন অনেক বেশি দৃষ্টি নন্দন এবং উন্নত ছিল। ছবির গল্পের গাঁথুনিও ভীষণ মজার।

কুংফু পান্ডা ১ আর ২ এর মতো এবারো পুয়ের আসল চ্যালেঞ্জ ছিলো নিজেকে জানা। কুংফু পান্ডা ৩ এ পুকে জানতে হয়েছে যে আসলে সে কে? সে কি শুধু একজন পান্ডা? নাকি সে একজন কুংফু ফাইটার? সে কি শুধু কারও ছেলে, কারও ছাত্র? নাকি নিজেই একজন শিক্ষক?

হুহু বাবা বলছি না আমি আর কিছু, নিজেই দেখে নিও।

শুধু এটুকু বলতে পারি, আত্মা বা চি’ এর আসল শক্তি আসলে নিজেকে জানায়। যে নিজেকে যত বেশি জানে- সে তত বেশি আত্মবিশ্বাসী আর শক্তিশালী!