আলি বাজারে গিয়েছিলো আলু কিনতে আর জারার জুতো সেলাই করাতে। যদিও জারার জুতোটা পুরাতন-ছেঁড়া ছিলো, কিন্তু খুব সুন্দর একজোড়া গোলাপি রঙের জুতো ছিলো। অন্তত জারার কাছে সেটি খুবই মূল্যবান ছিলো। মুচির কাছে জারার জুতোজোড়া রেখে আলি আলু কিনতে যায়। একজন লোক সেসময়ে ভুল করে আবর্জনার সঙ্গে জারার জুতোটি ফেলে দেয়। শুরু হয় আলি এবং জারার গল্পের।
জুতো হারিয়ে জারা খুব মন খারাপ করে। আলিও বুঝতে পারে বোন কত কষ্টই না পাচ্ছে। কিন্তু মন খারাপের চেয়ে বড় কিছু বিষয় বাস্তব পৃথিবীতে থেকে যায়। সেটি বেশ নির্মমও হয়। জুতো ছাড়া জারাকে কিছুতেই যে স্কুলে ঢুকতে দিবে না। যেভাবেই হোক জারার একজোড়া জুতো লাগবেই লাগবে।
আলি-জারাদের পরিবার এমনিই বেশ সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো, এরকম একটা অবস্থায় আলি ও জারার পক্ষে বাড়িতে জুতোর কথা জানানো বেশ কঠিন হয়ে পরে। ওরা দুই-ভাইবোন মিলে ঠিক করে বাবা-মাকে জুতো হারানোর ঘটনা জানাবে না, নিজেরাই যেভাবে হোক এই সমস্যার একটা সমাধান করবে। ওরা বুদ্ধি আঁটে যে, আলির জুতোজোড়া আলি এবং জারা ভাগাভাগি করে পরবে। সকালের দিকে জারা আলির জুতো পরে স্কুলে যাবে, দুপুরের দিকে আলিকে আবার সেই জুতো ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আলি তখন সেই জুতো পড়ে তার স্কুলে যাবে।
পরিকল্পনাটা শুনতে বেশ ভালোই শোনাচ্ছিলো, কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন করা বেশ কঠিন হয়ে যায়। জুতো পরিবর্তনের ঝামেলায় আলি কয়েকবার স্কুলে যেতে দেরি করে ফেলে। একজন শিক্ষক আলিকে বেশ তিরস্কার করেন। স্কুলে আলি বড় বড় সমস্যায় পরে। এদিকে জারাও তার এক বন্ধুর পায়ে ওর হারিয়ে যাওয়া জুতো জোড়া দেখতে পায়। ওদের জুতো সমস্যা নতুন দিকে মোর নেয়।
দুই ভাই-বোনের জুতো খোঁজা এবং জুতো সমস্যা সমাধানের আপ্রাণ প্রয়াস নিয়ে তৈরি ইরানি এই সিনেমাটির নাম চিলড্রেন অফ হেভেন। সিনেমাটির নির্দেশনা দিয়েছেন বিখ্যাত ইরানি নির্দেশক এবং লেখক মাজিদ মাজিদ। গল্পটিও উনার লেখা। ১৯৯৭ সালে এই সিনেমাটি প্রথম তেহরানে ফজর ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখানো হয়। অসম্ভব হৃদয়স্পর্শী এই সিনেমাটি ১৯৯৮ সালে শ্রেষ্ঠ বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে মনোনয়ন পায়।
আলি ও জারা শেষ পর্যন্ত ওদের জুতোর সমস্যা কীভাবে সমাধান করে এটি জানতে তোমরাও দেখতে পারো এই ক্লাসিক সিনেমাটি।