ঢাকায় একসময় খুব হাতি ছিলো। থাকতে তো হবেই তখন তো আর গাড়ি ঘোড়া ছিলো না। শুধু যাতায়াত না আরও অনেক কাজে হাতি ব্যবহার করা হতো। সেই হাতির মালিকানা ছিলো সরকারের। সরকার মানে ধরো মোঘল আমলে সুবেদারদের আর ব্রিটিশ আমলে ব্রিটিশ রাজের। সেই হাতিদের থাকার জন্য সরকারী পিলখানা বা হাতিশাল ছিলো এখন যে আজিমপুর তার পাশে। জায়গাটির নামই এখন পিলখানা হয়ে গিয়েছে। এখন সীমান্ত স্কোয়ার যেখানে তার ঠিক পেছনের জায়গাটা।
সেই হাতিদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়মিত পানির কাছে নিতে হতো। পিলখানায় তো হাতিদের থাকার জায়গা হতো, কিন্তু হাতিদের জন্য পানি কোথায় পাওয়া যাব? আর চরানো জায়গাই বা কোথায়? এখন যেটা রমনা এলাকা এটাকে হাতি চরানোর জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিলো কারণ রমনা আশেপাশেই তখন বেশ কিছু খাল ছিলো। সবদিক ভেবে রমনা এলাকাকেই হাতি চরানোর জন্য নির্ধারণ করা হলো। তাই পিলখানা থেকে রমনায় হাতি নেওয়ার জন্য যে পথটা ব্যবহার করা হতো, তার নাম পড়লো, এলিফ্যান্ট রোড।
ঢাকার আরেকটি এলাকার নাম ভূতের গলি। এলিফ্যান্ট রোড ধরে হাতিরপুল আসার পথে একটু বামে সরলেই কিন্তু আজকের ‘ভূতের গলি’ এলাকাটা পাওয়া যাবে। সত্যিই কি সেখানে ভূতদের বাড়ি ছিলো যে জায়গার নাম ভূতের গলি পড়লো? আসল ঘটনাটি কিন্তু বেশ মজার। জনশ্রুতি আছে ইংরেজ আমলে একজন ইংরেজ সাহেবে যার নাম ছিলো ‘মিস্টার বুথ’ তিনি সর্বপ্রথম সে জায়গায় বসবাস করতে আসেন। বুথের গলি বুথের গলি বলতে বলতে এ কান ও কান হয়ে জায়গার নাম হয়ে যায় ভূতের গলি। ঠিক এমনটাই হয়েছিলো ঢাকা শহরের একসময়কার বিখ্যাত জায়গা গ্র্যান্ড এরিয়ার সাথে। তৎকালীন জমিদার এবং প্রভাবশালীরা থাকতো বলে জায়গাটিকে বলা হতো, গ্র্যান্ড এরিয়া। মানুষের মুখে বলতে বলতে জায়গার নাম নাকি হয়ে গিয়েছে গেণ্ডারিয়া। তবে এ তথ্য নিয়ে মতভেদ আছে। বেশিরভাগ সূত্র যেটা সমর্থন করে এই এলাকায় একসময় প্রচুর গেণ্ডারি মানে আখ হতো। সেই থেকে এলাকার নাম গেণ্ডারিয়া।
ঘটনাগুলো বেশ মজার তাই না! তবে কলাবাগানের সাথে হাতিগুলোর সম্পর্ক আছে কি-না তা অবশ্য জানা যায়নি। ধারণা করা হয়, একসময় এ এলাকায় প্রচুর কলাগাছ ছিলো এবং কলার চাষ হতো। তবে পিলখানা থেকে হাতি দৌড়িয়ে সেখানে যেত কি-না এটা জানা যায়নি।