রাজধানীতে ঢোকা ও বের হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ যাত্রাবাড়ি চৌরাস্তা এলাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নীচের এই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক হয়ে দেশের পূর্বাঞ্চল এবং ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতকারী যানবাহনের বেশিরভাগ ফ্লাইওভারের নীচের সড়কটি ব্যবহার করে। এছাড়া রাজধানী কাছের কয়েকটি জেলার যানবাহনও যাত্রাবাড়ির এই চৌরাস্তা হয়ে যাতায়াত করে।
এসব গর্তের কোথাও কোথাও পানি জমে ছোটখাটো পুকুরের আকার ধারণ করেছে। গর্ত এড়াতে একেবেঁকে চলার চেষ্টা করছে সব ধরনের যানবাহন, আর এর জন্যে কমছে গতি।
একই সময়ে ওই স্থানের গর্তে আটকে যায় তিনটি অটোরিকশা এবং একটি ট্রাক।
আটকে পড়া অটোরিকশা তিনটির একটিতে রাজধানীর এক হাসপাতাল থেকে অসুস্থ্য বাবাকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ফিরছিলেন শিশির নামে এক যুবক। হাঁটু পানিতে নেমে অটোরিকশাটি ঠেলে ওপরে ওঠান তিনি।
তুরাগ পরিবহনের চালক মো. হানিফের মন্তব্য, “ভাই, এই রাস্তা দেখলেই চক্ষে পানি আহে।”
চালকের সহকারী জুয়েল জানান, ভাঙা সড়কের কারণে প্রায়ই গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। টায়ার ফেটে যায়।
ঢাকা-মাওয়া রুটের গুনগুন পরিবহনের চালক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, “মাওয়া থেকে এ পর্যন্ত আসতে তেমন কোনো কষ্ট হয় না। কিন্তু এই অংশটুকু পার হতে জান বাইর হইয়া যায়।”
“আপনি ঘণ্টা-দুয়েক দাঁড়ান। দেখবেন একটা না একটা গাড়ি পড়বেই।”
সড়কের পাশের দোকানিরাও বলছেন, বৃষ্টি হলে ভাঙা রাস্তায় পানি জমেই অবস্থা বেশি খারাপ হয়। তখন গর্ত দেখা যায় না বলে একটা একটা করে যানবাহন পার হয়, এতে লম্বা যানজট তৈরি হয়।
“দেখেন, উপরের ফ্লাইওভার কেমন চকচইক্কা, আর নিচের সড়কের কী খারাপ অবস্থা।”
ফ্লাইওভারের নীচে যানজট ও দুর্ঘটনার জন্য বেহাল সড়ককে দায়ী করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগও।
ডিএমপির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, “প্রতিদিন একটা না একটা গাড়ি গর্তে পড়ে যায়, এগুলো সরাতে অনেক সময় লাগে।”
“এই সড়কের মূল সমস্যা জলাবদ্ধতা। দুই বছর আগে সড়কটি মেরামত করা হয়েছিল। পানি জমে থাকায় মেরামতের পরেও ভেঙে যায়।”
সড়কের এ অংশ মেরামতে ‘যাত্রাবাড়ি ত্রিমুখী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ হাতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে এই প্রকৌশলী জানান, “প্রকল্পে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও থাকছে, দরপত্র প্রক্রিয়া শেষে কাজ শুরু করতে আরো দুই মাস সময় লাগবে।”
তবে যান চলাচল ঠিক রাখতে গর্তগুলো দ্রুতই মেরামত করে দেওয়া হবে বলে জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রকৌশলী বোরহান।