আমার কাছে তিমি শুধুই একটি প্রাণী নয়, এটি প্রকৃতির একটি দূত।
Published : 26 Mar 2025, 06:02 PM
সাগরের তলে আছে নানা জীববৈচিত্র্য। এরমধ্যে আমার দৃষ্টিতে 'তিমি' সবচেয়ে বিষ্ময়কর প্রাণী।
বিশালাকার এই প্রাণীটি শুধু নিজের জীবন নিয়েই ব্যস্ত থাকে না; বরং সমুদ্রের পরিবেশকে উর্বর ও ভারসাম্য বজায় রাখতে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। এ যেন এক নীরব সেবক।
বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজে বলা হয়েছে, গভীর সাগরের পুষ্টিকর উপাদান তিমিরা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়। যা সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে বড় ভূমিকা রাখে।
হ্যাম্পব্যাক তিমি যেমন শীতকালে খাবার না খেলেও প্রস্রাব, ত্বক ঝরানো বা সন্তান জন্মের সময় প্লাসেন্টা ফেলে দিয়ে পরিবেশে পুষ্টি জোগায়।
আর ফিন তিমির প্রস্রাবে থাকা নাইট্রোজেন প্রবাল প্রাচীর ও সামুদ্রিক মাছের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই প্রক্রিয়াকে বিজ্ঞানীরা ‘গ্রেট হোয়েল কনভেয়ার বেল্ট’ নামে অভিহিত করেছেন।
তবে বিশ্বব্যাপী অতিরিক্ত শিকার, ফিশিং জালে জড়ানো ও সমুদ্রদূষণের কারণে অনেক তিমি প্রজাতি এখন বিলুপ্তির মুখে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতি বছর প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত পণ্যের জন্য হাজারো সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যুর হয়। এরমধ্যে তিমিও রয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে ২০১৮ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে এমনই এক ঘটনা জানা যায়।
সেখানে বলা হয়, প্লাস্টিক ব্যাগ গলাধঃকরণের পর থাইল্যান্ডের দক্ষিণে পাইলট প্রজাতির একটি তিমি মারা গেছে বলে দেশটির সমুদ্র বিষয়ক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
অর্থাৎ, আমাদের জন্য তিমি কতটা ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। আমার কাছে তিমি শুধুই একটি প্রাণী নয়, এটি প্রকৃতির একটি দূত।
২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি দাতব্য সংস্থা আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। আমার লেখা রচনার শিরোনাম ছিল 'স্পিকিং টু দ্য সী ক্রিয়েচার্স'। যেখানে আমি সমুদ্রের প্রাণীদের সমস্যার কথা তুলে ধরি।
প্রতিযোগিতাটিতে অংশগ্রহণ করে সমুদ্রের প্রাণীদের প্রতি আমার ভালোবাসা জন্মে গেছে। আগে দূরের জিনিস বলে কল্পনাতেও যে জিনিসটা ভাবতাম না, এখন সেই প্রাণীদের আপন ভাবতে বাধ্য হই। কারণ এই পৃথিবীর মঙ্গলের জন্যই তাদের রক্ষা করতে হবে আমাদের।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: ঢাকা।