কয়েকজন বলছিল, তারা পড়াশোনা করতে চাইলেও তা সম্ভব হয় না সামাজিক বঞ্চনার কারণে।
Published : 17 Mar 2025, 09:18 PM
কয়েক মাস আগের কথা। সেদিন আমাদের এলাকার সেতুর পাশে একটি বেদেবহর দেখতে পাই। এই সম্প্রদায় সম্পর্কে জানার আগ্রহ থেকে তাদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করি।
বহরটির কাছে গিয়ে বেশ কয়েকজন নারী, শিশু ও পুরুষ সদস্যের সঙ্গে কথাও বলি আমি। তবে সেখানে যাওয়ার পর প্রথমেই আমার নজরে পড়ে, তাবুতে একা বসে থাকা একটি শিশুর দিকে। তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তার নাম শান্ত। কথায় কথায় নিজের জীবন সম্পর্কে সে আমাকে অনেক কিছুই বলে।
শান্ত জানায় বেদে সম্প্রদায়ের সদস্য হওয়ায় মাঠে খেলতে গেলে কেউ তাকে খেলায় নেয় না। মাঠ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার মত অভিজ্ঞতাও তার হয়েছে। তাই বাবা-মা সঙ্গে না থাকলে তাকে নিজের সঙ্গেই নিজের সময় কাটাতে হয়।
কথা হয় শান্তর মত আরও কয়েকজন শিশুর সঙ্গে। তাদের জীবনেও আছে নানা অপ্রাপ্তি।
কেউ বলছিল ঠিকমত খেতে না পারার কথা, কারো অভিযোগ পড়াশোনা করতে চাইলেও তা সম্ভব হয় না সামাজিক বঞ্চনার কারণে।
ওই বেদে পল্লীতে ঘরগুলো ছিল বাঁশের চাটাই আর পলিথিন দিয়ে তৈরি করা। মোট নয়টি তাবু সেখানে, তবে মাত্র এই কয়টা তাবুতে মানুষ থাকছে ৪৪ জন। তাদের মধ্যে আবার ১৫ জনই শিশু। আমার মনে হয়েছে, এই শিশুদের জীবনযাপন অত্যন্ত কঠিন।
এখানকার কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গেও কথা হয় আমার। তারা বলছিলেন, স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় এখানকার শিশুরা পড়াশোনার সুযোগ পায় না। অনেক শিশুই অপুষ্টিতে ভোগে। তাছাড়া স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকার কারণে মেয়েরা মাসিককালীন খুব কষ্ট ভোগ করে।
এই সম্প্রদায়কে কাছ দেখার পর আমার মনে হয়েছে, সমাজের অবহেলিত শিশুদের মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। যদি না হয় তবে এই সম্প্রদায়ের শিশুদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারেই থেকে যাবে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: নীলফামারী।