ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ০৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে খেজুরের রস না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি আরো কিছু বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।
রোগলক্ষণ: এ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত হবেন। তিনি মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে পারেন। এক পর্যায়ে তার খিচুনিও দেখা দিতে পারে। আইইডিসিআরের পরিচালক মাহমুদুর রহমান জানান, এ রোগে মস্তিস্কে ভয়াবহ প্রদাহ দেখা দেয়।
বাহক: নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় মূলত বাদুড়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশে সাধারণত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এই সময়টাতেই খেঁজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। আর বাদুড় গাছে বাঁধা হাড়ি থেকে রস খাওয়ার চেষ্টা করে বলে ওই রসের সঙ্গে তাদের লালা মিশে যায়। সেই বাদুড় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে এবং সেই রস খেলে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে এ ভাইরাস। আক্রান্ত মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াতে পারে এ রোগ।
সাবধানতা: নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে খেজুর গুড় ও রস, আখের রস, পেঁপে, পেয়ারা, বরইয়ের মতো ফল না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আইইডিসিআরের পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, "এই অবস্থায় খেজুরের রস না খাওয়াই ভালো।"
সংক্রমিত এলাকা: বাংলাদেশে সর্বপ্রথম নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়ে ২০০১ সালে। ওই সময় থেকে এ পর্যন্ত মেহেরপুর, নওগাঁ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ ও রংপুরে মানব দেহে নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, গত কয়েকদিনে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় নিপাহ ভাইরাসজনিত জ্বরে ২২ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে হাতীবান্ধায় এ জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এতে কয়েকজনের মৃত্যুর পর গবেষকরা বুধবার জ্বরের কারণ খুঁজে বের করতে কাজ শুরু করেন।
আক্রান্তদের রক্তের নমুনা পরীক্ষার পর শুক্রবার আইইডিসিআর-এর পরিচালক মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এটি নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ বলে পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এনআইএইচ/এএল/জেকে/১৯১০ ঘ.