আগামীতে বিদেশগামী শ্রমিকদের ‘খাওয়ানো হবে কলেরার টিকা’

বিদেশগামী শ্রমিকদের আগামীতে কলেরার ভ্যাকসিন খাইয়ে সার্টিফিকেট দিয়ে তারপর পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2022, 02:15 PM
Updated : 26 June 2022, 02:15 PM

রোববার রাজধানীর মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআর,বি) কলেরা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,বিভিন্ন দেশের ‘চাহিদার কারণে’ সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গরমের মওসুমের শুরুতে প্রতিবছরই বাংলাদেশে কম-বেশি ডায়রিয়া হয়। তবে এবার মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে ঢাকায় ডায়রিয়ার ব্যাপক প্রকোপ দেখা দেয়। ওই সময় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৩শ রোগী ভর্তি হয়েছেন ঢাকার আইসিডিডিআর,বির কলেরা হাসপাতালে, যা রেকর্ড। 

কেবল মার্চ মাসেই দেশে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ১ লাখ ৭০ হাজার ২৩৭ জন। এর মধ্যে শুধু রাজধানীতেই ৩৬ হাজার ৯১২ জন হাসপাতালে গেছেন।

গ্রামাঞ্চলে ডায়রিয়ার জীবাণু অতটা না ছড়ালেও বিদেশগামী অনেকে ঢাকায় এসে বিমানবন্দরের আশপাশের হোটেলে অবস্থান করার সময় বাইরের খাবার খেয়ে আক্রান্ত হন সে সময়। কর্মস্থলে গিয়েও তাদের ভুগতে হয়েছে সে সময়।

গত এপ্রিলে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সে সময় বলেছিলেন, “আমাদেরকে সৌদি আরব, কুয়েত কাতার থেকে জানানো হয়েছে যে তোমাদের লোকজন যারা আসে, তাদের অনেকের মধ্যে আমরা ডায়রিয়ার জীবাণু পাচ্ছি।

রোববার কলেরার টিকাদান কর্মসূচির অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খুরশীদ আলম বলেন, “বিভিন্ন দেশের চাহিদার প্রেক্ষাপটে আগামীতে শ্রমিকদের কলেরার ভ্যাকসিন খাইয়ে সার্টিফিকেট দিয়ে বিদেশে পাঠানো হবে।”

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অনুষ্ঠানে জানান, এ কর্মসূচির মাধ্যমে ঢাকার সংক্রমণ-প্রবণ পাঁচটি এলাকার ২৩ লাখ মানুষকে কলেরার মুখে খাওয়ার টিকা দেওয়া হবে।

ঢাকার ৫টি এলাকায় ৭০০ অস্থায়ী কেন্দ্রে এই কর্মসূচি চলছে। ২ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।

যাত্রাবাড়ীর প্রায় ৫ লাখ, সবুজবাগের প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার, দক্ষিণখানের প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার, মিরপুরের প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার ও মোহাম্মদপুরের প্রায় ৪ লাখ বাসিন্দাকে কলেরার টিকা দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা এবারই প্রথম দেশে বড় পরিসরে এই ভ্যাকসিন দিচ্ছি। এর আগে ট্রায়ালে যে সব এলাকায় টিকা দিয়েছি, সেখানে কলেরার প্রাদুর্ভাব একদম কমে গেছে।

“এক সময় কলেরা, ডায়রিয়ায় হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। এখন তা হয় না, এর পেছনে সরকার ও আইসিডিডিআর,বির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।” 

প্রতিটি জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে কলেরা-ডায়রিয়া ইউনিট চালুর নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনান, সিলেটসহ বন্যাকবলিত এলাকায় যাতে ডায়রিয়া ও কলেরা না ছড়ায় সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রবাসীদেরও এই টিকা দিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।